প্রকাশিত : ১ মে, ২০১৯ ০১:৫২

পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সাথে জেলা পুলিশের বৈঠক

শুধু রমজানে নয় সারাবছর বগুড়াকে যানযটমুক্ত রাখতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ
ষ্টাফ রিপোর্টার
পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সাথে জেলা পুলিশের বৈঠক
মাহে রমজান উপলক্ষ্যে বগুড়া জেলা পুলিশের আয়োজনে মঙ্গলবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল পিপিএম।

পবিত্র মাহে রমজানকে সামনে রেখে বগুড়া জেলা পুলিশের আয়োজনে মঙ্গলবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বগুড়াকে যানযটমুক্ত রেখে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি নিরসনে করণীয় বিষয়ে জেলার মোটর মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পরিবহন মালিক ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 
জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে সভায় রমজানকে সামনে রেখে শহর যানযটমুক্ত রাখতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। জেলার ১২ টি থানা থেকে আগত পরিবহন নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতিতে সভায় বগুড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পয়েন্টকে প্রথমে যানযটমুক্ত করতে সন্মিলিত ভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পয়েন্টগুলো হলো শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা, দত্তবাড়ি মোড়, শেরপুর রোডের সম্মুখভাগ, মাটিডালি মোড়, ঠনঠনিয়া বাসস্টান্ড, তিন মাথা রেলগেট, চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ড, বড়গোলা, থানামোড়, নূরানী মোড় সহ জনবহুল এলাকাগুলো। এছাড়াও শহরে যত্রতত্র অবৈধ পার্কিং, সকাল ১০ টার পর বিনা কারণে শহরের অভ্যন্তরে গাড়ি প্রবেশ, ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সার দৌড়াত্ম, হাইওয়েতে থ্রি-হুইলার এর চলাচলসহ মানুষের ইচ্ছাকৃত সৃষ্ট যানযট পুলিশ ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা কঠোর হাতে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয় সভায়। সেই সাথে রমজান মাস উপলক্ষ্যে জেলা পুলিশের পক্ষে পরিবহন নেতৃবৃন্দদের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাবনা পেশ করা হয় যেমন: যেসব গাড়ি টার্মিনালে প্রবেশ করবেনা সেগুলো থেকে অন্তত প্রায় ৭-১০ দিন চাঁদা না তোলা, আন্ত: উপজেলা বাস টার্মিনাল ব্যবহারকারী বাস ও মিনিবাসগুলোকে চারমাথা থেকে নূরানী মোড় সড়কের পরিবর্তে তিনমাথা রেলগেট থেকে কামারগাড়ি হয়ে চলাচল করা, বড় কোচ গুলো শহরের মধ্যে না এসে তিনমাথা বাইপাস সড়ক ব্যবহার, রমজানে অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে পণ্য লোড-আনলোড না করা ইত্যাদি। সেই সাথে পুলিশের পাশাপাশি প্রতি বছরের ন্যায় নিজ নিজ এলাকায় পরিবহন নেতৃবৃন্দদের নেতৃত্বে যানযট নিরসন এবং নিজ নিজ লোকবলকে শৃঙ্খলভাবে রাখার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষে পরিবহন সেক্টরের নেতৃস্থানীয় নেতৃবৃন্দদের সহযোগিতা কামনা করা হয়। সভায় উপস্থিত জেলা মোটর মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের সকল নেতৃবৃন্দরা সার্বিকভাবে জেলা পুলিশকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং শুধু রমজান নয় সারাবছর বগুড়াকে যানযটমুক্ত রাখতে জেলা পুলিশের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার কথা জানান নেতৃবৃন্দরা। সেই সাথে মে দিবসের পরে মালিক-শ্রমিক যৌথভাবে নিজেদের মাঝে আরও একটি সভা আয়োজনের মধ্যে যানযট নিরসনে তাদের পক্ষে করণীয় এবং জেলা পুলিশের সাথে সমন্বয় সাধনে বিভিন্ন সুপারিশমালা প্রেরণের কথা ব্যক্ত করেন। সভায় পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন পরিবহন মালিক গ্রুপের নেতা যথাক্রমে আক্তারুজ্জামান ডিউক, তৌফিক হাসান ময়না, সিএনজি মালিক সমিতির আহব্বায়ক এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু, বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান আকন্দ, বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল লতিফ মন্ডল, বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা শ্রমিকলীগের সাধারন সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলাল, ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল মান্নান মন্ডল, সিএনজি মালিক সমিতির পক্ষে শাহাদৎ হোসেন শাহীন, আলহাজ¦ শেখ, সংগ্রাম দাস, পিকআপ মালিক সমিতির পক্ষে মোশারফ হোসেন বুলবুল, শেরপুরের আরিফুর রহমান মিলন সহ ১২ উপজেলা থেকে আগত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। সভায় জেলা পুলিশ সুপারের পক্ষে সমাপনী বক্তব্যে আসন্ন রমজানে জেলা পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের কথা বলে সভা শেষ করেন জেলার বর্তমান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল পিপিএম। এসময় জেলা পুলিশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস কুমার পাল, সহকারী পুলিশ সুপার সাবিনা আক্তার, বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এস.এম বদিউজ্জামান, বগুড়া ট্রাফিক পুলিশের পক্ষে টিআই খলিলুর রহমান ও সালেকুজ্জামান সহ জেলার সকল থানার অফিসার ইনচার্জবৃন্দ এবং জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।

 

উপরে