প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৬:৩০

শিবগঞ্জে দূর্গা পূজা সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা

সোহেল আক্তার মিঠু শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি:
শিবগঞ্জে দূর্গা পূজা সামনে রেখে ব্যস্ত 
সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকারের ২৬ শর্তাবলী মেনে নিয়ে মন্ডপে দূর্গা পূজা উদ্যাপন করা হবে। দূর্গা পূজা সামনে রেখে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। পূজার প্রায় ১ মাস আগে থেকে প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মন্ডপে দূর্গা পূজা উদ্যাপন করা হবে। হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবী দূর্গা এবার দোলায় আগমণ এবং গজে গমণ করবেন বলে জানা গেছে।

এ বছর শিবগঞ্জ উপজেলায় ৫৩ টি পূজা মন্ডপে পূঁজা অর্চনা হবে। উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটি ইতোমধ্যে পূজা উদ্যাপনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। তবে এ বছর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পূজা মন্ডপগুলোতে সাজসজ্জা করা হবে না। সাদা সিধে ভাবে পূজা উদ্যাপন করবেন উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়। তবে এ বছর করোনার কারণে পূজামন্ডপে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পূঁজার কার্যক্রম করা হবে।

উপজেলার পূজা মন্ডপ গুলো ঘুরে দেখে গেছে, মন্ডপ গুলোতে উৎসবের ছোয়া লেগেছে। বিরামহীন ভাবে প্রতিমা তৈরীর কাজ করেছেন প্রতিমা শিল্পীরা। উপজেলার সাদুল্যাপুর গ্রামের মৃত অজিত মহন্তের ছেলে শ্রী হারাধন মহন্ত প্রতিমা তৈরীর কাজ করছেন। ত্রিশ বছর ধরে এ পেশায় আছেন তিনি। তার বাবা-ঠাকুরদা সকলেই প্রতিমা তৈরীর কাজ করেছেন। এখন নিজে  তৈরী করেন প্রতিমা। করোনা ভাইরাসের কারনে দূর্গা পূজা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন তিনি। তার পরেও এবার তিনি দশটি মন্ডপ থেকে প্রতিমা তৈরীর অর্ডার পেয়েছেন। এই দশ সেট প্রতিমা তৈরীর কাজে বেশ ব্যস্ত তিনি। দু’জন কারীগর সহকারী হিসাবে তার সাথে কাজ করছেন। দিনরাত কাজ করছেন তারা। আর কয়েকদিন পরেই শারদীয় দূর্গা পূজা। নির্ধারীত সময়ের মধ্যেই তাকে সরবরাহ করতে হবে প্রতিমা গুলো। তাই নাওয়া খাওয়া ফুসরত নেই হারাধনের। তিনি প্রতিটি দূর্গা প্রতিমার সেট বিক্রি করেন ২৫ হাজার থেকে ত্রিশ হাজার টাকা।   

 এ ব্যাপারে সাদুল্যাপুর গ্রামের প্রতিমা শিল্পী শ্রী হারাধন মহন্ত বলেন, হামরা খুব কষ্ট করে মাঠির প্রতিমা বানাই। কি করমো আর অন্য কাম করবের পারিনে তাই বাপ-দাদার পেশা আঁকরে ধরেই আছি। একন হামাকেরে অবস্থা খুব খারাপ সেডে দেকপিডাকে? দেকপের কেও নাই। তিনি আরও জানান, প্রতিমা তৈরীর জন্য ব্যবহৃত এটেল মাটি তাদের গ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে মাগনা আনা যেত। এখন সেই মাটি অন্য জায়গা থেকে টাকা দিয়ে কিনে ভাড়া করা গাড়িতে করে আনতে হয়। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে মাটি দিয়ে তৈরি করে রোদে শুকিয়ে রং করে সেগুলো উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ গুলোতে বিক্রি করা হয়। তার তৈরী প্রতিমা শিবগঞ্জ উপজেলা পেরিয়ে সোনাতলা, গবিন্দগঞ্জ, ঘোড়াঘাটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন।এ ব্যাপারে উপজেলা পূঁজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি রাম নারায়ণ কানু  প্রতিবেদক কে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে এবছর পূজা মন্ডপ গুলোতে সাজসজ্জা ছাড়াই সাদা সিধে ভাবে পূজা উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার সবকটি মন্ডপে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে পূজা উদ্যাপন করবেন ভক্তরা।  

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে