প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর, ২০২০ ১৯:৪৬

দামপেয়ে কৃষকের মুখে হাসি কাউনিয়ায় মঙ্গা তাড়ানো আমন ধান কাটা শুরু

সারওযার আলম মুকুল,কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
দামপেয়ে কৃষকের মুখে হাসি
কাউনিয়ায় মঙ্গা তাড়ানো আমন ধান কাটা শুরু

কাউনিয়ায় স্বল্প মেয়াদী (মঙ্গা তাড়ানো) বিআর-৩৩ ও বিনা-৭ এবং পারিজাসহ বিভিন্ন জাতের আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। বন্যা ও প্রতিকুল পরিবেশ কে উপেক্ষা করে আগাম সোনালী ধান গোলায় তুলতে পেরে এবং ভাল ফলন ও দাম পেয়ে কৃষকেরা বেজায় খুশি। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় উফসী ও হাইব্রীড জাতের আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১৫০০ হেক্টর আর অর্জন হয়েছে ১১৬০০ হেক্টর। এর মধ্যে ১৩৮৪ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের উফসি ও হাইব্রীড ধান লাগানো হয়েছে। আগাম জাত গুলোর মধ্যে ১৫৩ হেক্টর ব্রিধান-৩৩, ৬২৫ হেক্টর পারিজা ও ২৯৫ হেক্টর বিনা ৭ জাত এবং হাইব্রিড ৩২১ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এসব জাতের ধানের জীবন কাল ১০০-১২০ দিন, যেখানে অন্যান্য জাতের ধানের জীবন কাল ১৪০-১৫০ দিন। গ্রাম অঞ্চলের চাষীরা এর নাম দিয়েছে মঙ্গা তাড়ানো ধান। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষেতে এখন সোনালী আমন ধানের শীষ দোল খাচ্ছে।

অনেকেই ধান কাটা শুরু করেছে। ফলন ভাল ও বাজারে দাম পেয়ে কৃষকদের মাঝে  আনন্দের ঝিলিক দেখা দিয়েছে। নাজিরদহ গ্রামের আজাহার আলী জানান, স্বল্প মেয়াদী আগাম ধান কাটার পর ওই জমিতে আগাম আলু, ভুট্টা সহ বিভিন্ন ফসল চাষবাদ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। ফলে কৃষকরা স্বল্প মেয়াদী ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছে। আরাজি হরিশ্বর গ্রামের কৃষক মমিনুল এবার ৫০শতক জমিতে পারিজা ধান চাষ করে ফলন পেয়েছে ২০মন। খোর্দ্দভুতছারা গ্রামের কৃষক আঃ হামিদ ২৫শতক জমিতে বিনা ৭ জাতের ধান চাষ করে ফলন পেয়েছেন ১২মন। আর আগাম ধান গোলায় উঠাতে পেরে মনটা তাদের খুব খুশি। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইয়েদুল জানান, এ অঞ্চলের কৃষকরা প্রায় ১০ বছর আগে দীর্ঘ মেয়াদী জাতের ধান চাষের উপর নির্ভরশীল থাকতেন।

আশ্বিন-কার্তিক মাসে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট স্বল্পমেয়াদী জাতের ধান চাষে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করে। এতে করে এই ধান চাষে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বেড়ে যায়। বিশেষ করে ব্রি-৩৩,৬২ ও বিনা-৭, পারিজা ধান চাষ করে কৃষকরা ভালো ফলনও পেয়েছে। তারা আগাম জাতের আমন চাষাবাদ করে মঙ্গাকে ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সাইফুল আলম জানান, তিনদফা বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে কৃষকে কিছুটা ক্ষতি হলেও আগাম জাতের ধানের ভাল ফলন হয়েছে এবং ধানের ধাম ভাল থাকায় কৃষকরা বেশ খুশি। বিশেষ করে ধানের খরের এবার আরও বেশী দাম পেয়েছে কৃষক। স্বল্পমেয়াদী ধান, শস্য বহুমুখীকরণে সহযোগিতা করে। এছাড়া আশ্বিন-কার্তিক মাসে ফসল ঘরে উঠলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে