প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ২০:২৯

‘‘আগুন ও এসিডে পুড়িয়ে শাপলার হত্যাকারী বাদী সেজে সিআইডির নাকের ডগায়

১৭বছরে আট পরিবার সর্বশান্ত গ্রেপ্তার হচ্ছেনা লেবু-নছির“
ব্যুরো অফিস,জয়পুরহাটঃ
‘‘আগুন ও এসিডে পুড়িয়ে শাপলার হত্যাকারী বাদী সেজে সিআইডির নাকের ডগায়

জয়পুরহাটের কালাই থানার মোলামগাড়ী হাটে এ চাঞ্চল্য ঘটেছে। মোলামগাড়ীহাটের নছির উদ্দিন ওরফে বাতিয়া ওরফে লছির ডাকাতের ছেলে দুধর্ষ সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী ও দুই হত্যা মামলার আসামী লেবু মিয়া ওরফে সাজু ২০০২ সালের শেষ দিকে বগুড়ার মোকামতলা থেকে শাপলা খাতুন নামে এক নাবালিকাকে অপরহণ করে। মেয়ের মা ফিরোজা বেগম লেবুর বিরুদ্ধে বাদী হয়ে অপহরণ মামলা করলে লেবু গ্রেপ্তার হয়ে হাজতে যায়। এসময়, শাপলাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে জামিন চায় লেবু। জামিনে বেরিয়ে এসে শাপলাকে আবারো অপরহণের পর জয়পুরহাটের কালাই থানার মোলামগাড়ীহাটে লেবুর বাড়ীতে এসিড ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।

এতে, শাপলার মা বাদী হয়ে আবারো বগুড়ায় লেবু ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। এদিকে লেবুর বাবা নছির উদ্দিন ছেলেকে হত্যা মামলা থেকে বাঁচাতে নিজে বাদী হয়ে প্রতিবেশীদের আসামী করে জয়পুরহাটে শাপলার মিথ্যা অভিভাবক সেজে হত্যা মামলা দায়ের করে। সেই থেকে ভোগান্তি আর হয়রানীতে আটটি পরিবার। ১৭ বছর মিথ্যা হত্যা মামলার ঘানি টানতে গিয়ে সর্বশান্ত পরিবারগুলো। ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বরে মামলার পুনরায় তদন্ত করতে সিআইডিকে আদেশ দেয় বিজ্ঞ আদালত। ২০১৯ সালের দুই জানুয়ারি প্রতিবেদন দিতে সিআইডিকে আদেশ দেয় বিজ্ঞ আদালত। কয়েকবার মামলার সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা বদলি হয়ে নতুন কর্মকর্তা আসলেও আলোর মুখ দেখেনি তদন্ত প্রতিবেদন।

এখনো জানেন না এজাহারভুক্ত স্বাক্ষীরা। এরই মধ্যে শাপলা হত্যা মামলার জয়পুরহাটে কালাই থানায় হত্যাকারী নছির উদ্দিনের দায়ের করা মামলার এজাহার ভূক্ত স্বাক্ষীরা নছির উদ্দিনের মামলাটি মিথ্যা উল্লেখ করে কোর্টের মাধ্যমে লেবু ও নছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে এফিডেফিট করে দিয়েছেন। এদিকে পুলিশের খাতায় পলাতক থাকলেও দাপটের সাথে মাদক ব্যবসা করছে লেবু মিয়া ও তার বাবা নছির উদ্দিন।২০০৩ সালের আগে থেকেই মাদকসহ বহু মামলায় পলাতক লেবু মিয়া ওরফে সাজু আহমেদের বাড়ী জয়পুরহাট জেলার কালাই থানার মোলামগাড়ীহাটে।

সে ঐ গ্রামের আলোচিত নছির উদ্দিন ওরফে বাতিয়া ডাকাতের ছেলে। প্রকাশ্য দিবালোকে কালাইয়ে হাকিম হত্যাসহ লেবুর বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা চলমান। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের শেষের দিকে বগুড়ার শাপলা খাতুনকে অপরহণ করে জেল খাটে লেবু মিয়া। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে জেল থেকে জামিনে বের হয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে ২০০৩ সালের শুরুতে শাপলাকে হত্যা করে। আর হত্যার দায় থেকে বাঁচতে পাড়া-প্রতিবেশি ও বগুড়া জেলাসহ ৯জনকে আসামি করে মামলা করে লেবুর বাবা নছির উদ্দিন। শাপলার মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে লেবুকে প্রধান আসামি করে বগুড়ায় হত্যা মামলা করে।

শাপলা ও হাকিম হত্যাকারী লেবুদের দায়ের করা শাপলা হত্যার মিথ্যা মামলায় মোলামগাড়ীহাট, কাদিরপুর ও বগুড়াসহ নিরাপরাধ ৮ পরিবার সর্বশান্ত। লেবু শাপলাকে কিভাবে হত্যা করেছে মারা যাওয়ার আগে শাপলা নিজ মুখে শাপলার মা ফিরোজা বেগম ও বোন শিল্পীকে বলে যায়। মারা যাওয়ার আগে শাপলার ভাষ্য মতে লেবুর বিরুদ্ধে বগুড়ায় মামলা করে শাপলার মা। কিন্তু লেবুর বাবা নছির উদ্দিন শাপলার অভিভাবক দাবী করে জয়পুরহাটে নীরিহ মানুষদের আসামি করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে সিআইডিকে বোকা বানিয়ে সিআইডির নাকের ডগায় বীরদর্পে ঘুরছে। বাদী হয়ে সাধু বেশে থাকায় সিআইডির নজরে আসছে হত্যাকারী লেবু ও নছির উদ্দিন। গ্রেফতার হচ্ছে না তারা। 

চলবে........

উপরে