প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০২৪ ২৩:১২

রাজশাহীতে সৎ ভাইয়ের হাতে তরুণী খুনের ঘটনায় আটক ৩

রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহীতে সৎ ভাইয়ের হাতে তরুণী খুনের ঘটনায় আটক ৩

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম এলাকায় নির্মাণাধীন একটি বাড়ি থেকে সন্ধ্যা রানী (২০) নামের এক তরুণীর রক্তাক্ত লাশ পাওয়া গেছে। বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজন লাশের বিষয়ে জানতে পেরে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশটি ঘিরে রাখে। দুপুর পর্যন্ত লাশটি সেখানেই ছিল। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) লোকজন যাওয়ার পর লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত তরুণীর সৎভাই-ভাবিসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

তরুণী সন্ধ্যা রানীর (২০) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার তিন আসামি পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে চাকু দিয়ে আঘাত করে ওই তরুণীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এ জন্য দুই দিন ধরে তাঁরা পরিকল্পনা করেছেন।

আসামিদের বরাতে বৃহস্পতিবার গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আবদুল মতিন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বুধবার দুপুরে গোদাগাড়ীর গোগ্রামে একটি নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলায় পড়ে ছিল রক্তাক্ত সন্ধ্যার লাশ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভবনটি ঘিরে রাখে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা সেখানে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করেন।

এ ঘটনায় নিহত তরুণীর সৎভাই, ভাবিসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে করা হত্যা মামলায় আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে চালান দেওয়া হয়। এরা হলেন, সন্ধ্যা রানীর সৎভাই ফুলবাবু রবিদাস ওরফে বাবু (২২), তার স্ত্রী মিনতি রানী (১৯) ও তাদের সহকর্মী আদিল আহমেদ পলক (১৯)। আদিল গোদাগাড়ীর লালপুকুর গ্রামের আওয়াল হোসেনের ছেলে।

নিহত তরুণী সন্ধ্যা রানীর গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় শীশা বাঁশপীর গ্রামে। তার বাবার নাম হরিলাল দাস। সন্ধ্যা রানী রাজশাহী নগরের মোল্লাপাড়া এলাকায় সৎভাই বাবুর বাসায় থাকতেন।

পুলিশ জানিয়েছে, সিআইডি দল সুরতহালের সময় নিহত তরুণীর কাছে একটি মুঠোফোন পায়। সেই মুঠোফোনের সূত্র ধরে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই তরুণী সৎভাইয়ের বাসায় থাকতেন। তাদের মধ্যে একটি গোপন বিষয় নিয়ে দুই দিন ধরে বিবাদ চলে আসছিল। সেই বিবাদের জেরেই তরুণীকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তরুণীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গোদাগাড়ীর গোগ্রামে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে গিয়ে চাকু দিয়ে আঘাত করে তরুণীকে হত্যা করা হয়েছে।

ওসি আবদুল মতিন বলেন, একটি গোপনীয় বিষয় নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। হত্যায় ব্যবহৃত চাকু ঘটনাস্থল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে একটি নালা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি বলেন, নিহত তরুণীর বাবার খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি। পরে এসআই মাসুদ রানা বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। সেই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে