প্রকাশিত : ১৭ জুন, ২০১৯ ০১:৫৪

বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে থানা হাজতে নির্যাতন’র ঘটনায় বরখাস্ত চার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক
বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে থানা হাজতে নির্যাতন’র ঘটনায় বরখাস্ত চার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

বগুড়ায় সোহান বাবু আদর (৩২) নামে এক ব্যবসায়ীকে কৌশলে ডেকে নিয়ে বগুড়া সদর থানা পুলিশ  কর্তৃক মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় এক এস আই সহ চার পুলিশ বরখাস্তের পর ওই চার পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের শিকার  সোহান বাবু আদরের পিতা সাইদুর রহমান বাদি হয়ে বগুড়া পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

গতকাল রোববার রাতে বরখাস্ত এস আই আব্দুল জব্বার, এসআই এরশাদ সরকার, এ এস আই নিয়ামতুল্লা ও কন্সস্টেবল এনামুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ১৩ জুন বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জপাড়ার সৈয়দ মাহমুদ আলীর  মেয়ে সাথি বানু সদর থানায় একটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে  উপরোক্ত চার পুলিশ সদস্য আদরকে ২৫ ঘন্টা থানায় আটক রেখে কোমর থেকে পা পর্যন্ত পিছনদিকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আঘাত করে। আদর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার পিতার কাছ থেকে সুস্থ আছে এই মর্মে মুচলেকা ও ২০ হাজার টাকা  নিয়ে ছেড়ে দেয়।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। উল্লেখ্য,  বাবু  বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জপাড়া উটের মোড় এলাকার সাইদুর রহমানের ছেলে।পুলিশী নির্যাতনে গুরুতর আহত বাবুর পিতা অভিযোগ করে বলেন, শহরের গোয়ালগাড়ি এলাকায় আল ফালাহ বহুমুখি নামে একটি সমিতি রয়েছে। সোহান বাবু আদর, সাথী বানু ও তার  স্বামী বাপ্পি মিয়া তিনজন মিলে ওই সমিতিটি পরিচালনা করেন।

সমিতির অপর দুই পরিচালক সাথী বেগম ও তার স্বামী বাপ্পির অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১ টায় সদর থানার কনস্টেবল (মুন্সি) এনামুল হক বাবুকে মোবাইল ফোনে থানায় ডেকে নেন। বাবু থানায় আসলে সদর থানায় এস আই আব্দুল জোব্বার, এ এস আই এরশাদ, এ এস আই নিয়ামতুল্লা  ও মুন্সি এনামুল পাশের একটি  কক্ষে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে একটি পিলারের সাথে বেঁধে রেখে ১১ লক্ষ টাকা দাবী করে।

পুলিশের দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করায় গভীর রাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাকে নির্যাতন করে। সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজের সময় থানায় সাধারণ লোকজন না থাকার সুযোগে একই দাবীতে পুনরায় বাবুর হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে কোমর থেকে পা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বেদম প্রহার করা হয়। পুলিশের নির্যাতনে বাবুর কোমরের নিচ থেকে পা পর্যন্ত রক্তাক্ত ফোলা গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়। থানা হাজতে বাবুর শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে  শুক্রবার রাত ১২ টায় এস আই আব্দুল জোব্বার বাবুর পিতা সাইদুর রহমানকে ডেকে বলে তোর ছেলে সুস্থ্য আছে ভাল আছে এই মর্মে মুচলেকা লিখে ২০ হাজার টাকা দিয়ে তোর ছেলেকে নিয়ে যা।

পরে বাবুর পিতা মুচলেকা ও ২০ হাজার টাকা দিয়ে তার ছেলেকে থানা থেকে ছেড়ে নিয়ে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। পুলিশ জানায়, অভিযোগকারী সাথী বানু ও তার স্বামী বাপ্পি মিয়া শহরের কাটনারপাড়া আলোরমেলা স্কুল এলাকার বাসিন্দা। এ প্রসঙ্গে বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান ও বগুড়ার অতিরিক্ত  পুলিশ সুপার সানতন চক্রবর্ত্তী  বরখাস্ত চার পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

উপরে