প্রকাশিত : ২৩ জুন, ২০২১ ১৬:৩৩

তালেবানের আধিপত্য নিয়ে জাতিসংঘের শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
তালেবানের আধিপত্য নিয়ে জাতিসংঘের শঙ্কা

আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে। গত মে মাসে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার শুরুর পর থেকেই দেশটিতে তালেবানের হামলা ও দখল ক্রমেই বাড়ছে।

আফগানিস্তানের ৩৭০টি জেলার মধ্যে ৫০টি এখন তালেবানের দখলে। প্রতিদিনিই সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তালেবানের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এই পরিস্থিতিকে ‘বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ডেবোরাহ লিয়ন্স।

তিনি বলেন, ‘সংঘাত বেড়ে যাওয়ার মানে হলো কাছের এবং দূরের অন্য অনেকগুলো দেশেরও নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে যাওয়া।’

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের সকল সেনা আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি আফগানিস্তানের পরিস্থিতিকে ‘গতিশীল’ বলে বর্ণনা করেছেন। তালেবানের আধিপত্য বেড়ে যাওয়ার পরেও সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে কোনও পরিবর্তন আনেনি পেন্টাগন। তবে প্রত্যাহারের ‘গতি ও সুযোগ’ পরিবর্তনের পরিস্থিতি এখনও রয়েছে।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকে ডেবোরাহ বলেন, কট্টরপন্থী তালেবানের সাম্প্রতিক অগ্রযাত্রা একটি ‘চরম সামরিক অভিযানের’ ফলাফল।

তিনি বলেন, ‘যে জেলাগুলো তারা দখলে নিয়েছে সেগুলো বিভিন্ন প্রাদেশিক রাজধানীকে ঘিরে রয়েছে। এর মানে হলো যখন বিদেশি বাহিনী চলে যাবে তখনই রাজধানীগুলো দখলে নেয়ার জন্য তালেবান তাদের অবস্থান তৈরি করছে।’

মঙ্গলবার তালেবান আফগানিস্তান-তাজিকিস্তানের প্রধান সীমান্ত দখলে নিয়ে নেয়। এই সীমান্তটির অবস্থান উত্তরের কুনদুজ প্রদেশে। গত কয়েকদিন ধরেই সেখানে তালেবান ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ অনেক বেড়ে গিয়েছিল।

তালেবান দাবি করেছে, তারা কুনদুজের প্রাদেশিক রাজধানী বাদে পুরো প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তবে রাজধানী কুনদুজ এখনও সরকারি বাহিনীর হাতে রয়েছে। আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, সরকারি বাহিনী বেশ কিছু জেলা পুনর্দখল করতে পেরেছে এবং এখনও সংঘর্ষ চলছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তালেবান সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক সামরিক সরঞ্জাম ছিনিয়ে নিয়েছে। তারা সরকারি বাহিনীর অনেক সদস্যদের হত্যা, আহত ও জিম্মিও করেছে। তবে তালেবানের নিজস্ব হতাহতের সংখ্যা পরিষ্কার নয়। আফগান নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, হারানো অঞ্চল ফিরে পেতে তারা খুব দ্রুতই বড় আকারে অভিযান শুরু করবে।

কাতারে তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছিল, তা এখন পর্যন্ত তেমন কোনও আলোর মুখ দেখেনি।

এদিকে মঙ্গলবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মঙ্গলবার ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ার অংশীদার হতে চায়’ তবে পাকিস্তানে কোনও মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থাকতে দেবে না।

উল্লেখ্য, তালেবানকে সহযোগিতা করার জন্য আফগান নেতারা বরাবরই পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে।

সূত্র : বিবিসি

উপরে