প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০১৯ ১৫:১৫

বগুড়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ফুরফুরে মেজাজে

অনলাইন ডেস্ক
বগুড়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ফুরফুরে মেজাজে

বগুড়ায় উপজেলা নির্বাচনের আর মাত্র ক’দিন বাকি। এখনো জমে ওঠেনি নির্বাচনী প্রচারণা। ধানের শীষ না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। তারা নিশ্চিন্তে অপেক্ষা করছেন নির্বাচনের শুভক্ষণের। নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো উত্সাহ নেই সাধারণ ভোটারদের মাঝে।

জাতীয় নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচন না করার ঘোষণা দেয় বিএনপি। ফলে এবারের নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে অংশ নিচ্ছে না। একই অবস্থা বিএনপির শরিক দল জামায়াতেরও। দল দুটি থেকে কোনো প্রার্থী দেয়া হবে না বলে আগেই জানিয়ে দেয়া হয়। এ কারণে জামায়াতের পাঁচ জন উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি থেকে নির্বাচিত সাত জনের মধ্যে ছয় জন প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত থাকেন।

উল্লেখ্য, গত চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে বগুড়ার ১২টি উপজেলায় আওয়ামী লীগ থেকে কেউ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারেননি। ১২টি উপজেলার মধ্যে সাতটিতে বিএনপি ও পাঁচটিতে জামায়াত থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এবার শুধুমাত্র সারিয়াকান্দি উপজেলা থেকে নির্বাচিত বিএনপির চেয়ারম্যান মাসুদার রহমান হিরু মণ্ডল দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে চেয়ারম্যান প্রার্থী হন। তার পথ ধরেই নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বগুড়ার একাধিক বিএনপি নেতা। ফলে বগুড়া জেলা বিএনপি তাদের নামের তালিকা গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে কেন্দ্রে পাঠায়। এর পর থেকেই একের পর এক তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত এসব নেতাদের পক্ষে কাজ করার কারণে এখন পর্যন্ত বগুড়ায় ৩০ জন নেতাকর্মীকেও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এবং বহিষ্কৃত নেতাদের পক্ষে কাজ না করতে জেলা বিএনপি থেকে জরুরি বৈঠক ডেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের কঠোর হুঁশিয়ারি ও সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।

তাই বহিষ্কার আতঙ্কে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না। ফলে ঠিকমত নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছেন না এসব স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

এদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মাসুদার রহমান হিরু মণ্ডল দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে নির্বাচন করা ভুল হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদপত্রে বিবৃতি দিয়ে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে সারিয়াকান্দি উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপির নেতারা বলছেন কর্মী না পাওয়ায় ও ভোটের দিন কেন্দ্রে কোনো এজেন্ট পাবেন না বুঝতে পেরে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

বহিষ্কৃত নেতা মাফতুন আহমেদ খান রুবেল জানান, নির্বাচন করছি স্থানীয় রাজনীতির স্বার্থে, স্থানীয় জনগণের স্বার্থে। বগুড়ায় যদি বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করার লোক না থাকে তাহলে এই এলাকায় রাজনীতি নষ্ট হয়ে যাবে। তৃণমূল নেতাকর্মী ও জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে আমি প্রার্থী হয়েছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, শহরে কোথাও আমার কোনো পোস্টার লাগাতে দেয়া হচ্ছে না। প্রচারণা করতে দেয়া হচ্ছে না। আমি দু’দিন বেরিয়েছিলাম, দু’দিনই আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, যদি ন্যূনতম সুষ্ঠু নির্বাচন যদি হয় তাহলে আমিই জিতব।

শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী বিউটি বেগম বলেন, তার ভোটারদেরকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য। পাশাপাশি বিএনপির নেতারাও তার বিরোধিতা করে অপর এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। তিনি জানান, ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ পেলে তার জয় নিশ্চিত।

এদিকে, বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা রয়েছেন ফুরফুরে মেজাজে। তারা নিশ্চিন্তে নির্বাচনের দিনের অপেক্ষা করছেন। তবে বগুড়ার ৫টি উপজেলায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী আওয়ামী লীগ প্রার্থী থাকায় তাদের মধ্যে রেষারেষি মনোভাব চলছে। দল থেকে সমর্থন পাওয়া ব্যক্তিরাই নির্বাচনে জয়ী হবেন বলে তারা মনে করছেন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত বগুড়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু সুফিয়ান শফিক জানালেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন গ্রাম হবে শহর। গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার যে কর্মসূচি এটাকে বাস্তবায়ন করতে বগুড়ার মানুষ আমাকে নির্বাচিত করবে। বগুড়ায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। একজন আছেন যিনি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত যাকে এখন পর্যন্ত বগুড়ার মানুষ মাঠে দেখতে পারেনি। তিনি অভিযোগ করেছেন তাকে প্রচারণায় নামতে দেয়া হচ্ছে না। দল থেকে বহিষ্কৃত একজন নেতাকে নির্বাচনী প্রচারণায় আমার লোকজন কোনো বাধা সৃষ্টি করছে না।

উপরে