প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯ ০৬:৪৩

তুমিতো আমার দেশে ফেরার বিরোধিতা করেছিলে: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
তুমিতো আমার দেশে ফেরার বিরোধিতা করেছিলে: প্রধানমন্ত্রী

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের টিকিট পেতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন চার হাজার ২৩ জন। এরমধ্যে মনোনয়ন পাবেন মাত্র ৩০০ জন। তারমধ্যে আবার জোট-মহাজোটকেও ছাড়তে হবে। সব মিলিয়ে নেতাদের মন ভাঙার পালাটা একটু বেশিই হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। এখন শুধু শেষ মুহুর্তের ঘষা-মাজা বাকি। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার বলেছেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে কারা কারা মনোনয়ন পাচ্ছেন সেটা দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে জেনে গেছেন বলে প্রতিয়মান হচ্ছে।

সেজন্য প্রতিদিনই গণভবনে ভিড় জমাচ্ছেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা। প্রধানমন্ত্রীও নিরাশ করছেন না তাদেরকে। ধৈর্যসহকারে তাদের কথা শুনছেন। সান্তনা-পরামর্শ-ধমক সবই দিচ্ছেন দলের প্রয়োজনে। 

কয়েকদিন ধরে রাতে গণভবনে অনানুষ্ঠানিক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নেতাকর্মীদের প্রত্যাশার কথা শেখ হাসিনা ধৈর্যসহকারে শুনছেন ও জবাব দিচ্ছেন। আবার অনেকের কথার সূত্র ধরে তিনি অতীত ইতিহাস মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তবে সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। 

একই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে গণভবনের হলরুমে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় নেতারা স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন।

গোপালগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তালিকায় বর্তমান এমপি লে. কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খানের নাম উঠে এসেছে। আসনটিতে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করে বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মুকুল বোস। 

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে নিজের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, নেত্রী আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পর প্রতিবাদ করেছিলাম। এ কারণে অনেক নির্যাতন-জুলুমের শিকার হয়েছি। এ সময় তাকে থামিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছ, আবার ১৯৮১ সালে আমার দেশে ফেরার বিরোধিতাও করেছ। ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলে। কী, এসব করনি মুকুল বোস? 

এ সময় মুকুল বোস কোনো কথা বলেননি বলে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান। সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের বর্তমান এমপি গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ’৬৯ সালে তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেই। মুক্তিযুদ্ধ শেষে দুইবার ইউপি চেয়ারম্যান, দুইবার উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম। ২০১৪ সালে উপনির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দিয়ে এমপি বানিয়েছেন। আমি নির্বাচনী এলাকার সংগঠনগুলো গুছিয়েছি। রায়গঞ্জের পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করেছি, যা আগে কখনও কেউ জিততে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি। এবার আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চাই। ৬৯ বছরের বয়সের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আপনার কাছে নৌকা চেয়ে বিদায় নিচ্ছি।

উপরে