প্রকাশিত : ৩ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:২৭

বগুড়ায় ঝড়-বৃষ্টিতে বেড়ে গেছে ছাতার কারিগরদের কদর

নিজস্ব প্রতিবেদক
বগুড়ায় ঝড়-বৃষ্টিতে বেড়ে গেছে ছাতার কারিগরদের কদর

বগুড়ায় গত কয়েকদিন যাবত ধরে প্রচুর ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে এতে ছাতা তৈরীর কারিগর এবং মেরামত করার কারিগরদের কদর বেড়ে গেছে। বৃষ্টিপাতের জন্য মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন ও কাজকর্ম করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ৷ এছাড়াও স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা,কোচিং এ যেতেও বৃষ্টির মধ্যে ছাতার প্রয়োজন হয়েঠেছে ৷ যাদের ছাতা নষ্ট হয়ে আছে তারাই নিয়ে আসছেন ছাতা সাড়া কারিগরদের কাছে। অন্যদিকে অতি রৌদ্রময় আবহাওয়া কিংবা বৃষ্টিপাত উভয় ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয় ছাতার৷ এজন্য ছাতা সাড়া মৌসুমী কারিগররাও পথের ধারে বসে গেছে লাইন ধরে।

শহরের এই ঐতিহ্যের পেশা ধরে রেখেছে অনেকেই এখনো,আবার অনেক ব্যক্তিই এই পেশা বদল করে যুক্ত হয়েছে অন্য পেশায়,আগের মতো বেশি কাজ নেই বলে। আবার অনেকেই সপ্তাহে একদিন বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারসহ শহরের রাস্তার পাশে বসে কাজ করে এই ছাতা সারা কারিগররা। বগুড়ায় গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ছাতা সারা কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে কয়েক গুণ।

গতকাল বগুড়া শহরের কাঁঠালতলা ফুটপাতে বসে থাকা ছাতা সারা কারিগর শফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়,এই পেশার সাথে ৪২ বছর ধরে যুক্ত থেকে তিনি নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে,এখন বৃষ্টি হচ্ছে বলে মোটামুটি কাজ হচ্ছে। বৃষ্টির দিনে ছাতা মেরামতের কাজ একটু বেশি হয়। তবে অন্য সময় তেমন একটা কাজ থাকে না। বর্তমানে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় ছাতার কাপড়,হাতল,স্প্রিং প্রভূতি জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে চড়া দামে,সরবরাহ হচ্ছে অনেক কম। তারপরেও প্রতিদিন ২৫থেকে ৩০টি ছাতা মেরামত করে ১,০০০ হাজার টাকা থেকে ১২০০শত  টাকা পর্যন্ত আয় করছে বলে জানান তিনি।

ছাতাপট্রির গলিতে বসে থাকা ছাতার কারিগর আনোয়ার হোসেন,লাল মিয়া জানায় যে,এখন মোটামুটি কাজ হচ্ছে। তবে অন্য সময় বেশিরভাগ বসেই থাকতে হয়। ঝড়-বৃষ্টি হলে ছাতা মেরামতের মোটামুটি কাজকর্ম শুরু হয়। আর বছরের অন্য দিন গুলোতে সেরকম কাজ হয় না। বর্তমান সময়টাতে কাজের চাপ বেড়ে যায় বহু গুণ। বছরের অন্যান্য মৌসুমে তেমন কোন কাজকর্ম থাকে না। শুধু মাত্র বর্ষার অপেক্ষায় থাকে। বর্ষা এলেই বাড়ি থেকে যন্ত্রপাতি নিয়ে বেড়িয়ে পরে ছাতা মেরামতের জন্য। আর বর্ষা এলেই কাজ বেড়ে যায় ছাতা সাড়া কারিগরদের।

পাশেই কয়েকটি পুরোনো ছাতা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন গোলজার হোসেন নামে এক ব্যক্তি,এক সঙ্গে এতো গুলো পুরান ছাতার কথা জানতে চাইলে তিনি জানায়,বৃষ্টির দিনে ছাতা ঠিক না থাকলে নিজেদের স্বাভাবিক জীবনযাপন এবং কাজকর্ম করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এছাড়া ছেলে মেয়েদের স্কুল-কলেজ,মাদ্রাস ও কোচিংয়ে যেতেও বৃষ্টির মধ্যে ছাতার প্রয়োজন হয়। বাসায় কয়েকটি ছাতা নষ্ট হয়ে পড়ে ছিল,আজ সময় পেলাম তাই এগুলো মেরামত করতে নিয়ে আসছি।

শহরের কাটনারপাড়া থেকে ছাতা মেরামত করতে আসা আব্দুর করিম জানায় যে,একটি ভালো মানের ছাতা ক্রয় করতে ৩০০-৬০০ টাকা প্রয়োজন হয়। তার চেয়ে পুরোনো ছাতাটি মেরামত করে নিলেই মোটামুটি চলে যায়। এখনকার যে ছাতা,সবে মাত্র দুইমাস হল ছাতাটা কিনেছি,এখনই ছাতা গুলো মেরামত করতে আসতে হলো। অপর আরেক ব্যক্তি ছাতা মেরামত করাতে আসা সরকারি কমার্শিয়াল কলেজের একশিক্ষার্থী রাকিব হাসান জানায়,চারটি ছাতা নষ্ট হয়ে পড়েছিল বাসায়। এই ঝড়-বৃষ্টির সময় ছাতা সারা দরকার,তাই ঠিক করতে নিয়ে আসছি।

উপরে