প্রকাশিত : ৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১৫:০৬

সারিয়াকান্দিতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ঝুপরি ঘরে আগুন

উপজেলা সংবাদদাতা, সারিয়াকান্দি, বগুড়াঃ
সারিয়াকান্দিতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ঝুপরি ঘরে আগুন
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে জিয়া মন্ডল নামে এক ব্যক্তি নিজ ঝুপরি ঘরে মরা গরু রেখে আগুন দিয়েছে।ঘটনাটি উপজেলার বোহাইল ইউনিয়নের শংকরপুর চর এলার মৃত বাদশা মন্ডলের ছেলে জিয়া মন্ডলের বাড়িতে ঘটে। জাহেরুল মন্ডল গংদের ফাঁসাতে  জিয়া মন্ডল থানায় একটি অভিযোগ করেন। 
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার বোহাইল ইউনিয়নের শংকরপুর ৩নং ওয়ার্ডের সাত্তার আকন্দের ছেলে সামিউলের গাভী গরু মারা গেলে তাদের জমির পার্শের একটি ডোবার উপরে ঘোড়ার গাড়ী করে নিয়ে এসে ফেলে দিয়ে যায়। পরের দিন তারা জমিতে কাজ করতে আসলে মরা গরুটির আর কোন চিহ্ন খুঁজে পাননি ।পরে বিষয়টি স্থানীয় গ্রাম বাসীদের মাঝে ছড়িয়ে পরে।অপরদিকে গত ৩/১১/২৪ইং তারিখ রবিবার রাতে জিয়া মন্ডলের সদ্য তোলা একটি ঝুঁপড়ি(ছাপড়া) ঘরে আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পরে।সেখানে স্থানীয়রা যাওয়ার পর একটি গাভীসহ একটি ঝুঁপড়ি ঘড় পুড়া দেখতে পান।এলাকাবাসী আগুনে পোড়া গাভীটির শিং এবং সামিউলের মৃত  গাভীর শিং একই রকম হওয়ায় নানা রকম আলোচনা সমালোচনা করতে থাকেন।এলাকাবাসীর ধারণা জিয়া মন্ডল জমি নিয়ে বিরোধের জেরের কারনে  প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে রাতের অন্ধকারে মরা গাভী গরু নিজ বাড়িতে নিয়ে এসে কয়েকটি টিন দিয়ে একটি ছাপড়া ঘর তুলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটান।এলাকাবাসী আরো জানান, জিয়া মন্ডল বোহাইল ইউনিয়ন আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি।আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এলাকা ত্র্যাসের রাজত্ব কায়েম করে ছিল। জমি দখল সহ বিভিন্ন অপকর্মে তিনি লিপ্ত ছিলেন। সেসময় কারো সাহস ছিলনা তার বিরুদ্ধে কথা বলার। 
এব্যাপারে মৃত গরুর মালিক বলেন, গরুটি মারা গেলে আমার বড় ও ছোট ভাইদের সহযোগিতায় ঘোড়া গাড়ী দিয়ে আমাদের জমির পাশে ডোবার উপরে ফেলে দেয়।পরেরদিন জমিতে গিয়ে দেখি ফেলে দেয়ার স্থানের গরুটির কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মৃত  গরুটি কেবা কাহারা ঘোড়া গাড়ী যোগে গরুটি নিয়ে যায় । সেখানে ঘোড়া গাড়ির চাকার চিহ্ন পাওয়া যায়। 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার শংকরপুর গ্রামের সামিউলের একটি গরু মারা যায়। মৃত গরুটিকে তার জমির পাশে ডোবার উপরে ফেলে আসে । পরের দিন মৃত গরুটা কে ফেলে রাখার স্থানে পাওয়া যায়নি। অপর দিকে শংকরপুর গ্রামের জিয়া মন্ডলের বাড়িতে গভীর রাতে ছাপড়া ঘরে অগ্নিকাণ্ডে একটি গাভী মারা যায়। ঘরের খুঁটি গুলো নতুন করে পুতা হয়েছিল। খুঁটির গোড়ায় ঝুড়ঝুড়ে মাটি পাওয়া যায়। ঝুপড়ি ঘরের কোনার মেঝেতে তাজা ঘাস পাওয়া যায়। মেঝের কোন অংশে গরুর গোবর পাওয়া যায়নি।
 
 
স্থানীয় মোবারক প্রামানিক বলেন, জমিজমা সংক্রান্তির বিরোধীর জেরে আগের মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে এবং আমাদের ফাঁসানোর জন্য অন্যের ফেলে দেয়া মরা গরু জিয়া মন্ডল রাতের অন্ধকারে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে এসে কয়েকটি টিন ও বাঁশ দিয়ে ছাপড়া ঘর তৈরি করে তার মধ্যে মরা গরু রেখে আগুন লাগায়। ঘটনাটি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ব্যস্ততা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের কাছে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি। এব্যাপারে জিয়া মন্ডলের স্ত্রী আরজিনা বলেন, জাগনা পেয়ে দেখি আগুন জ্বলতেছে গরু বাছুর ছুটে গেছে । ৪টি গরু ছুটে গেলেও পরে দেখি একটা গাভি গরু পুরে মারা গেছে। মরা গরু নিয়ে এসে আগুন লাগার কথা বললে তিনি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, এবিষয়ে আপনাদের সাথে আর কথা বলতে চাই না। আমার গরু মারা গেছে তা আমি বুঝবো। 
জিয়া মন্ডলের সাথে এব্যাপারে কথা বললে, তিনি উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়োজন হলে প্রশাসন মরা গরু তুলে ডিএনএ পরীক্ষা করবে। বেটা আছে  জেলখানায় আমি হয়েছি দুর্বল। 
 
 
এব্যাপারে সারিয়াকান্দি থানা অফিসার ইনচার্জ জামিরুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার স্থলে একজন অফিসারকে পাঠিয়েছিলাম । তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপরে