বগুড়াকে সিটি করপোরেশন করার প্রস্তাব নিয়ে এবারের ডিসি সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা। এ প্রস্তাবসহ মাঠ প্রশাসনের অন্তত সাড়ে ৩শ’ প্রস্তাব নিয়ে আগামীকাল রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের ডিসি সম্মেলন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সিটি করপোরেশনের উপযুক্ততার পক্ষে যুক্তি

বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানিয়েছেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সিটি করপোরেশন হতে পৌর এলাকার জনসংখ্যা কমপক্ষে চার লাখ হতে হয়, যেখানে বগুড়া পৌরসভার জনসংখ্যা সাড়ে চার লক্ষাধিক। এছাড়া প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রয়োজন তিন হাজার, কিন্তু বগুড়া শহরে ঘনত্ব পাঁচ হাজার ৮৪৩ জন।

বগুড়া পৌর এলাকার আয়তন ৬৯.৫৬ বর্গকিলোমিটার, যা সিটি করপোরেশনের শর্ত পূরণ করে। শহরটি ব্যবসা ও শিল্পসমৃদ্ধ হওয়ায় স্থানীয় আয় পাঁচ কোটি টাকার বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পৌরসভার বার্ষিক আয় ৪৬ কোটি টাকার বেশি, যা সিটি করপোরেশনের শর্তানুযায়ী ন্যূনতম ১০ কোটি টাকার সীমা ছাড়িয়েছে।

উন্নত অবকাঠামো ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব

প্রস্তাবিত সিটি করপোরেশন এলাকায় বিসিক শিল্পনগরীসহ প্রায় ২০ হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া শহরে প্রায় ১,৩৪০ কিলোমিটার রাস্তা, ১,২১০ কিলোমিটার ড্রেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ চারটি সরকারি কলেজ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যালসহ দুইটি সরকারি হাসপাতাল, ব্যাংক, বীমা, শপিং মল এবং ফাইভ ও ফোরস্টার হোটেলসহ বিস্তৃত অবকাঠামো রয়েছে, যা ভবিষ্যতে সম্প্রসারণযোগ্য।

রাজনৈতিক বাধা অতিক্রমের ইঙ্গিত

স্থানীয় সরকার বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বগুড়া বহু আগেই সিটি করপোরেশন হওয়ার উপযুক্ততা অর্জন করলেও রাজনৈতিক কারণে তা পিছিয়ে ছিল। বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হওয়ায় কোনো কর্মকর্তা বা রাজনীতিবিদ এতদিন এ নিয়ে প্রস্তাব করার সাহস পাননি। তবে বর্তমান জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ে ইতিবাচকভাবে গৃহীত হয়েছে। অনুমোদন পেলে এটি হবে দেশের ১৩তম সিটি করপোরেশন।