প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ০০:২০

বগুড়ার শেরপুরে 'জুলাই যোদ্ধা'র স্বীকৃতি বঞ্চিত ১১ তরুণ, গেজেটে নাম না থাকায় হতাশ

এনামুল হক, বগুড়াঃ
বগুড়ার শেরপুরে 'জুলাই যোদ্ধা'র স্বীকৃতি বঞ্চিত ১১ তরুণ, গেজেটে নাম না থাকায় হতাশ

 

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন-পরবর্তী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়েও সরকার ঘোষিত ‘জুলাই যোদ্ধা’ গেজেটে নাম ওঠেনি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ১১ জন তরুণের। ফলে শারীরিক যন্ত্রণা, মানসিক হতাশা ও আর্থিক সংকটে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

গত বছর ১৭, ২০ জুলাই এবং ৪ আগস্ট শেরপুরের ধুনট মোড় এলাকায় আন্দোলনরত জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এই ১১ জন তরুণ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেলের আঘাতে গুরুতর আহত হন। তাঁদের মধ্যে অনেকের শরীরেই এখনও গুলির চিহ্ন রয়ে গেছে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন – আব্দুল্লাহ আল মামুন, বকুল খন্দকার, মাসুদ রানা, রেজওয়ান আহমেদ, আবু হানিফ মন্ডল, মিনহাজুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, লিটন চন্দ্র শীল, মিজানুর রহমান, রাব্বি হাসান শুভ এবং কুদরত আলী।

আহত কুদরত আলী জানান, “পিঠে গুলি লাগার পর থেকে আমি আর ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। চিকিৎসার জন্য ধার করা টাকা এখনো শোধ করতে পারিনি।”

আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “বুকে গুলির আঘাত নিয়ে আমি এখনও বাঁচার চেষ্টা করছি। আমার সন্তান আছে, কিন্তু সংসার চালানো কষ্টকর। ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি ও সরকারি সহায়তা আমাদের প্রাপ্য।”

জানা যায়, সারাদেশে ওই অভ্যুত্থানে আহত হয়েছিলেন ২২,৯০৭ জন, যাদের মধ্যে ১৫,৬৫৯ জন চিকিৎসা নেন হাসপাতালে। সরকার ইতোমধ্যেই একাধিক ধাপে শহীদ ও আহতদের নামের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। সর্বশেষ গত ৫ মার্চ রাজশাহী বিভাগে ১,০৯৩ জনকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, কিন্তু তাতে শেরপুরের এই ১১ জন তরুণের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি।

এ বিষয়ে 'ওয়ারিওরস অফ জুলাই' বগুড়া জেলার আহ্বায়ক মসফিকুর রহমান সোহাগ জানান, “অনেকের নাম অসাবধানতাবশত বাদ পড়েছে। এমআইএস পোর্টাল খোলার পর এদের আবেদনপত্র গ্রহণ করে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে।”

শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান বলেন, “বর্তমানে অনলাইন পোর্টাল বন্ধ রয়েছে, ফলে নাম অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই। তবে পোর্টাল চালু হলে যাচাই-বাছাই করে তাদের নাম পাঠানো হবে।”

আহত ১১ তরুণ এখনও গুলির যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন, অথচ তাদের জীবনসংগ্রামে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা নেই। তারা দ্রুত ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি ও সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

 


প্রয়োজনে এটিকে ওয়েব, প্রিন্ট বা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ উপযোগী করে আরো চূড়ান্তভাবে ফরম্যাটিং করা যেতে পারে। যদি আপনি চান, আমি তা করে দিতেও পারি।

উপরে