প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০২৫ ০০:৪৬

বগুড়ায় মসলার বাজারে ভিন্ন চিত্র: ঈদের আগেও দাম স্থিতিশীল, স্বস্তিতে ক্রেতারা

এনামুল হক, শেরপুর, বগুড়াঃ
বগুড়ায় মসলার বাজারে ভিন্ন চিত্র: ঈদের আগেও দাম স্থিতিশীল, স্বস্তিতে ক্রেতারা
বিভিন্ন পদের মশলা। ছবি- সংবাদদাতা

পবিত্র ঈদুল আজহা যতই ঘনিয়ে আসছে, বাজারগুলোতে ততই বাড়ছে প্রস্তুতির ব্যস্ততা। কিন্তু এবারের ঈদকে সামনে রেখে বগুড়ার মসলার বাজারে দেখা গেছে এক ব্যতিক্রমী চিত্র—দাম বাড়েনি বরং স্থিতিশীল রয়েছে। ফলে কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

সাধারণত ঈদের আগে বাজারে পণ্যসামগ্রীর, বিশেষ করে মসলার দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু এবার জিরা, এলাচ, দারচিনি, লং-এর মতো নিত্যব্যবহার্য মসলার বাজারে নেই তেমন মূল্যবৃদ্ধির চাপ। বগুড়ার শহরের বক্সী বাজার, রাজা বাজার ও কলোনী বাজারের পাইকারি ও খুচরা দোকান ঘুরে দেখা গেছে, মসলার দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে।

মসলার বাজারে বর্তমান দর:

জিরা: খুচরা ৭০০ টাকা/কেজি, পাইকারি ৬৪০ টাকা/কেজি

সাদা এলাচ: খুচরা ৫০০০ টাকা, পাইকারি ৪৮০০ টাকা/কেজি

কালো এলাচ: খুচরা ৩০০০ টাকা, পাইকারি ২৮০০ টাকা/কেজি

দারচিনি: খুচরা ৫০০ টাকা, পাইকারি ৪০০ টাকা/কেজি

তেজপাতা: খুচরা ৩৫০ টাকা, পাইকারি ৩০০ টাকা/কেজি

লং: খুচরা ২০০ টাকা, পাইকারি ১৫০ টাকা/কেজি

আদা ও রসুন: ১০০ টাকা/কেজি

পেঁয়াজ: ৪০ টাকা/কেজি

শেরপুরের বারোদুয়ারি হাট, বিকেল বাজার, মির্জাপুর ও ছোনকা হাটেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। ক্রেতারা বলছেন, এবারের মসলার দাম স্থিতিশীল থাকায় তাদের ঈদ বাজারের খরচ কিছুটা manageable বা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে।

একজন গৃহিণী বলেন, “বছরের অন্য সময়ে এই সময়টাতে বাজারে ঢুকলেই মনে হয় বাজেট ভেঙে যাবে। এবার অন্তত মসলার বাজারে একটু স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে।”

তবে অন্য চিত্র ভোজ্যতেল ও চালের বাজারে

মসলার বাজারে স্বস্তি থাকলেও ভোজ্যতেল ও চালের বাজারে ততটা আশার আলো নেই। বিভিন্ন কোম্পানির ৫ লিটারের বোতলজাত তেল ৮৫২ টাকায় ও ১ লিটার খোলা তেল ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও এটি নির্ধারিত দাম, তবে সরবরাহ ঘাটতির কথা জানিয়েছেন দোকানদাররা।

চালের বাজারেও রয়েছে মিশ্রতা। কাটারি চালের প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৫৫০০ টাকায়, সুবল লতা চাল ৫০০০ টাকায়। পোলাও চাল খোলা ১১০ টাকা ও প্যাকেটজাত ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রশাসনের তৎপরতা

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বগুড়ার সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান জানান, “ঈদ সামনে রেখে আমরা নিয়মিত বাজার মনিটর করছি। কেউ যদি অতিরিক্ত দাম আদায় করে কিংবা অনিয়ম করে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ভোক্তারা আমাদের হটলাইনেও অভিযোগ জানাতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “বাজারে স্বাভাবিকতা ধরে রাখতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

বগুড়ার বাজারে এবারের ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে মসলার দামে স্থিতিশীলতা নিঃসন্দেহে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তিদায়ক। তবে তেল ও চালের বাজারে নজরদারি আরও জোরদার করতে পারলে সামগ্রিকভাবে মানুষের ঈদ প্রস্তুতি আরও সহজ হবে বলেই আশা করছেন ভোক্তারা।

উপরে