প্রকাশিত : ৮ জুলাই, ২০২৫ ০২:১৩
প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারাদেশে প্রতিবন্ধী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তির দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ, বগুড়া জেলা শাখার আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা বলেন, “প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৬৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে অবদান রেখে চলেছেন। কিন্তু এখনো তারা সরকারি স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত। এই অবিচার অব্যাহত থাকলে আন্দোলনের পরিধি আরও বিস্তৃত হবে।”
ধুনট উপজেলার গজিয়াবাড়ি এলাকার সন্ধানী অটিজম (প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফেরদৌস তালুকদার মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বলেন, “২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত আমাদের বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৭৫ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। প্রতিদিন আমরা নিজেদের অর্থায়নে শিক্ষার্থীদের খাবার সরবরাহ করি। ৪০ জন শিক্ষক-কর্মচারী অক্লান্ত পরিশ্রম করলেও এখনো আমরা কোনো সরকারি স্বীকৃতি পাইনি। আমাদের মতো দেশের প্রতিটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়কে দ্রুত স্বীকৃতি দিয়ে এমপিওভুক্ত করতে হবে।”
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইলিয়াস রাজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা ও জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল শেখ, আফরোজা সুলতানা, রমজান আলী, আজিজার রহমান, মোফাজ্জল হোসেনসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, দেশের শত শত প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় বহু বছর ধরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী স্বীকৃতি ও এমপিওর জন্য আবেদন করে অপেক্ষা করছে। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু করে।
সেই প্রক্রিয়ায় ২ হাজার ৭৪১টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে, যার মধ্যে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ১ হাজার ৭৭২টি প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের বিশেষ শিক্ষা নীতিমালার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘ক’, ‘খ’, ও ‘গ’ শ্রেণিতে ভাগ করা হয় এবং ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু হয়।
কিন্তু এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে। ফলে সারাদেশে কর্মরত প্রায় ৬৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বক্তারা বলেন, “বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে আমরা যেমন বৈষম্যের শিকার হয়েছি, তেমনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা— অবিলম্বে যাচাই-বাছাইকৃত ১ হাজার ৭৭২টি প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্ত করা হোক।”
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।