পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠান বগুড়ার হক্বের দাওয়াত সিদ্দীক্বিয়া দরবারে

সারা দেশের ন্যায় বগুড়াতেও আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দরূদ)। ঈদসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচিত এই দিনটি উপলক্ষে ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার দিবাগত রাতে হক্বের দাওয়াত সিদ্দীক্বিয়া দরবার ও সুন্নতী জামে মসজিদের উদ্যোগে আয়োজিত হয় মহাসমাবেশ।
১১ই রবিউল আউয়াল বাদ জুমা থেকে ১২ই রবিউল আউয়াল ফজর পর্যন্ত চলা এ আয়োজনে ছিল জশনে জুলুস বা আনন্দ র্যালী, ইসলামী আলোচনা, নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, মিলাদ—ক্বিয়ামসহ নানা নফল ইবাদত। লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির উপস্থিতিতে পুরো এলাকা পরিণত হয় উৎসবমুখর জনসমুদ্রে।
জশনে জুলুস ও দা’ওয়াতী র্যালী
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের (উত্তরবঙ্গ)’র সভাপতি, হক্বের দাওয়াত সিদ্দীক্বিয়া দরবার সুন্নতী জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব এম এম ডক্টর আশরাফ আলীমুল্লহ্ সিদ্দীকীর নেতৃত্বে বাদ জুমা অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য জশনে জুলুস।
র্যালীটি বারোপুরস্থ সিদ্দীক্বিয়া দরবার থেকে শুরু হয়ে মাটিডালি, বনানী ও বিশ্বরোড প্রদক্ষিণ করে আবার দরবারে এসে শেষ হয়। আশেকে রাসুলদের হাতে হাতে ছিল হারাম বর্জনের আহ্বান ও সন্ত্রাসবাদমুক্ত সমাজ গঠনের বার্তা সম্বলিত ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার।
ওয়াজ-মাহফিল ও আলোচনাসভা
বাদ মাগরিব থেকে ফজর পর্যন্ত চলা ওয়াজ-মাহফিল ও আলোচনায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এম এম ডক্টর আশরাফ আলীমুল্লহ্ সিদ্দীকী। তিনি বলেন, “আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সৃষ্টির মধ্যে সর্বাধিক খুশির দিন আজ। পবিত্র হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত সালমান ফারসী (রা.) হতে বর্ণিত—‘হযরত মুহাম্মাদ (দরূদ) উনাকে সৃষ্টি না করলে দুনিয়া সৃষ্টি হতো না।’ আবার কোরআন শরীফের সূরা আম্বিয়ার ১০৭ আয়াতে আল্লাহপাক এরশাদ করেছেন—‘হে রাসুল (দরূদ), আপনাকে আমি সারা জগতের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ তাই ১২ রবিউল আউয়াল সমগ্র সৃষ্টি জগতের জন্য খুশির দিন।”
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে—যাতে ঈদে মিলাদুন্নবী পালনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা রয়েছে। এটি বৃহত্তর সুন্নী মুসলিম সমাজের স্বার্থবিরোধী এবং ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ।
সাহরি ও দোয়া মাহফিল
পবিত্র এই দিনে রোজা পালনের উদ্দেশ্যে মুসল্লিদের জন্য সাহরির বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। রাতব্যাপী কর্মসূচি শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক মঙ্গল কামনা করে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে এই মহাসমাবেশের।