প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২১:২৭

লোকসানের ভারে বন্ধ হয়ে গেল বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স

নিজস্ব প্রতিবেদক
লোকসানের ভারে বন্ধ হয়ে গেল বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স
বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্সের ছবি। - ফেসবুক হতে সংগৃহীত।

বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে সংকট এবং দর্শক খরা চলতে থাকায় লোকসানের ভারে বন্ধ হয়ে গেল বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে সিনেপ্লেক্সটি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন মালিকপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মধুবন সিনেপ্লেক্সের কর্ণধার ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির উপদেষ্টা রোকনুজ্জামান ইউনুস।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে একদিকে শিল্পী সংকট। দর্শক শাকিব খান থাকলে ছবি দেখতে চান, কিন্তু নতুন নায়ক–নায়িকার ঘাটতি রয়েছে। আধুনিক টেকনিশিয়ানও নেই। এখন মানুষ মোবাইল-ল্যাপটপে ছবি দেখে, তারা ‘কারিশমা’ খোঁজেন। কিন্তু বাংলাদেশে তৈরি ছবিতে সেই কারিশমা নেই।”

রোকনুজ্জামান আরও বলেন, “যৌথ প্রযোজনার ছবিতে দর্শক টানার মতো উপাদান থাকে। তবে ভারতীয় শিল্পীদের আনতে হলে বেশি খরচ হয়, অনেক প্রযোজক তাই এগোতে চান না। এদিকে এখানকার শিল্পীরাও কলকাতামুখী হচ্ছেন। ফলে সিনেমা হল তো বন্ধ হবেই।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পের দুরবস্থা নিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও পারেননি। কদিন আগে সচিবের সঙ্গে দেখা করলেও কোনো কার্যকর সমাধান মেলেনি।

মধুবন সিনেপ্লেক্সের ইতিহাস তুলে ধরে মালিকপক্ষ জানায়, ১৯৭৪ সালে ‘রাজমহল’ চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে হলটির যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে অশ্লীল ছবির কারণে এটি দীর্ঘ সময় বন্ধ ছিল। ২০১২ সালে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি যুক্ত করে ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’ নামে নতুন করে যাত্রা শুরু করে। তবে বিদেশি ছবি প্রদর্শনের অনুমতি না পাওয়া এবং নিম্নমানের দেশি ছবিতে দর্শক সাড়া না দেওয়ায় বাধ্য হয়েই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

বর্তমানে মধুবনে ২২ জন কর্মী কাজ করতেন। তাদের বেতনে মাসে সাড়ে এক লাখ টাকা এবং বিদ্যুৎ বিল বাবদ দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করতে হয়। লোকসানের কারণে মাসের পর মাস এ খরচ বহন অসম্ভব হয়ে উঠেছে বলে জানান মালিকপক্ষ।

চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালেও বাংলাদেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ হাজার ৪০০। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩০-এ।

উপরে