আমার গ্রাম আমার শহর বাস্তবায়ন ও কর্মসংস্থানের খাত তৈরীতে “স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি” একটি মাইলফলক প্রকল্প
বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় “স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি” প্রকল্পের উদ্দ্যোগে বাণিজ্যিক ভিত্তিক দেশী মুরগির চাষী-খামারীদের নিয়ে একটি মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সা: সম্পাদক ও শেরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জননেতা আলহাজ্ব মজিবর রহমান মজনু। তিনি বলেছেন, যে উদ্যোগটি হাতে নিয়েছেন বর্তমান সরকারের উন্নয়নের মিশনে আমার গ্রাম আমার শহর বাস্তবায়ন ও কর্মসংস্থানের খাত তৈরীতে “স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি” একটি মাইলফলক প্রকল্প।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮জুন) সকালে শেরপুর উপজেলার চেয়ারম্যান কক্ষে “স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি” বানিজ্যিক ভিত্তিক দেশি মুরগীর (অর্গানিক থামার) প্রকল্পটির প্রধান সমন্নয়ক ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মোঃ রায়হান সহ শেরপুর উপজেলার ৩১০টি গামের খামারীদের প্রায় পৌনে ২শ জনের উপস্থিতিতে এই আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। খামারীদের নিয়ে মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ লিয়াকত আলী সেখ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আমির হামজা। এখানে খামারি আব্দুল কাদের, মইনুল, হারুন উর রশিদ, সাদ্দাম হোসেন, নাদিরা খাতুন, তামান্না আখি, জাহাঙ্গীর, কামরুন্নাহারসহ ৩শ ১০টি গ্রামের প্রায় পৌনে ২শ জন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, উক্ত প্রকল্পের প্রধান সমন্নয়ক ডাঃ মোঃ রায়হান বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন, পুষ্টির নিরাপত্তা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এবং নিরাপদ প্রাণি আমিষের (এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড মুক্ত) নিশ্চয়তার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্চেন। “স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি’র” অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিক দেশী মুরগি চাষ একটি সম্ভাবনাময় ও লাভজনক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই সাথে উপযুক্ত প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিক দেশী মুরগি চাষকে আজ কর্মসংস্থান ও গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচনের একটি অন্যতম হাতিয়ারে পরিণত করেছে।
খামারি আব্দুল কাদের বলেন, শেরপুর উপজেলার বাণিজ্যিক ভিত্তিক দেশী মুরগি চাষের প্রধান উদ্যোক্তা ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মোঃ রায়হানের দিকনির্দেশনায় ২০১৫ সালে স্বল্প আকারে বাণিজ্যিক ভিত্তিক দেশী মুরগীর খামার শুরু করলেও আজ অনেক বড় আকারের খামারি হয়েছি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলার বেকার জনগোষ্ঠী এবং নারীরা বাণিজ্যিক ভিত্তিক দেশী মুরগি চাষ পালনে “স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি’” এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আত্মকর্মসংস্থানের পথ খুঁজে পেয়েছে। এ সকল জেলার বহু পরিবার আজ কেবল বাণিজ্যিক ভিত্তিক দেশী মুরগীর পালন করে স্বাবলম্বিতার মুখ দেখেছেন।
“স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি’র” প্রধান উদ্যোক্তা ডাঃ মোঃ রায়হান বলেন, বাণিজ্যিক ভিত্তিক দেশী মুরগী চাষে শেরপুর উপজেলায় প্রায় ৫’শ বেকার যুবক, যুব মহিলাকে সম্পৃক্ত করে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিগত চার বছরের মধ্যে “স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি’র” দেশী মুরগী বাণিজ্যিক চাষের কারিগরি প্রশিক্ষণ, স্বল্প বিনিয়োগে গ্রামীণ মানুষের আর্থিক সাবলম্বিতা অর্জন, প্রাণিসম্পদের সকল সেবা প্রাপ্তি সহজীকরণ, নিরক্ষরদের স্বাক্ষরতা জ্ঞান প্রাদাণের জন্য পাঠশালাও তৈরী করে বেকার যুবক, যুব মহিলা, ও প্রান্তিক কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব ঘোঁচানোর চেষ্টা করছি।
এ ছাড়া পাঠশালা, ৯টি হ্যাচারী, নিরাপদ মুরগীর খাবার তৈরীর কারখানা, বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরী করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় এই পাঠশালা স্থাপনের কার্যক্রম চলমান আছে, যা বাস্তবায়ন হলে বেসরকারি পর্যায়ে প্রাণিসম্পদের ব্যাপক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ফলে দেশে কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিই “স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি” এর মুল লক্ষ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ লিয়াকত আলী সেখ বলেন, “স্বপ্ন ছোয়াঁর সিঁড়ি” বানিজ্যিক ভিত্তিক দেশি মুরগীর (অর্গানিক থামার) প্রকল্পটি প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিক্ষিত বেকার ও নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।