নীলফামারীতে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষক পদত্যাগ না করে নির্বাচনে অংশগ্রহন, এলাকায় তোলপাড়
নীলফামারীতে সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ না করে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার ১২ মার্চ সকালে পদত্যাগের বিষয়টি জানা জানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করায় টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন নির্বাচনী বইতরনী পাড় হতে ব্যাগ ডেট দিয়ে পদত্যাগ পত্র গ্রহন দেখানো হয়েছে। নীলফামারী জলঢাকা সরকারী মডেল উচ্চ ব্যিালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল ওয়াহেদ (বাহাদুর) গত ৬/০২/২০১৯ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলমের কাছে পদত্যাগ পত্র দিয়ে রিসিপ কপি রাখেন।আর পদত্যাগের বিষয়টি গোপন করে রাখে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান। নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগ পত্রটির অনুলিপি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেরনের কথা থাকলেও তা তিনি করেন নাই। বরং বিষয়টি গোপন করে রাখেন। ১২ মার্চ মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়। জলঢাকা সরকারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ (বাহাদুর) ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জলঢাকা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়। তিনি কর্মস্থল থেকে পদত্যাগ না করে মনোনয়নপত্র জমা দেন। যার ফলে ১২ ফেব্রুয়ারী যাচাই বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার ফজলুল করিম ওই শিক্ষকে সরকারী চাকুরীজিবী হওয়ায় মনোনয়ন পত্র বাতিল করে। পরে ওই শিক্ষক জেলা আপীল কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিনের কাছে আপিল করে। আপিল শুনানি হলে সেখানেও তার মনোনয়ন পত্র বাতিল হয় । গোপন সূত্রে জানা যায় গত ৬ ফেব্রুয়ারী ব্যাগ ডেটে পদত্যাগ দেখিয়ে উচ্চ আদালত হাইকোর্টে আপিল করে ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ইং তারিখে । রিট পিটিশন নং ১৮১১/২০১৯ এর বলে নির্বাচনে অংশগ্রহন করে। চিংড়ী মাছ প্রতিক নিয়ে নির্বাচনী মাঠ দাফিয়ে বেড়ান। ওই পিটিশনকে নৌকা মার্কার প্রার্থী আনছার আলী মিন্টু হাইকোর্ট আপিল বিভাগ চেম্বার আদালতে চ্যালেন্স করে। পরে হাইকোর্ট বিভাগে ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ইং তারিখের রিট পিটিশন নং ১৮১১/২০১৯ এর দেয়া আদেশটি গত ৭ মার্চ স্থগিত করে নি¤œ কোর্টে রায় বহাল রেখে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখে । ৮ মার্চ জেলা নির্বাচন কমিশন গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ৫ম উপজেলা পরিষদ ১০ মার্চ নির্বাচনে জলঢাকা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদের ভোট স্থগিত করে। এতেই ওই শিক্ষকের পদত্যাগের বিষয়টি জনসম্মুখে লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। নৌকা মার্কার নির্বাচনী সদস্য উপজেলা আওয়ামী সৈনিক লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম লিপন বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান মোটা অর্থের বিনিময়ে পদত্যাগের বিষয়টি গোপন করেছেন তিনি। তাতে ওই শিক্ষকের নির্বাচনও হবে চাকরীও থাকবে। কিন্তু এলাকায় জানাজানি হলে সেটা আর হবেনা। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি লিখিত ভাবে কাউকে জানাইনি, মৌখিক জানিয়েছি। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের উচিত ছিলো একটি অনুলিপি জেলা ও উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো, তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। জলঢাকা নির্বাহী অফিসার মোঃ সুজাউদ্দৌলা বলেন, সহকারী শিক্ষক পদত্যাগের বিষয়ে কোন কিছু বলেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। আমি শুধু স্কুলের বেতন বিলে সই করি।