রাণীনগরে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রাস্তায় দাপিয়ে চলছে ৩ শতাধীক অটোরিক্সা ॥ যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে দূর্ঘটনা
নওগাঁর রাণীনগরের বিভিন্ন রাস্তায় ৩ শতাধীক অটোরিক্সা গাড়ীতে রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে দাফিয়ে চলছে । যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় দাপিয়ে চলছে এসব অটোরিক্সাগুলো । ফলে প্রতিনিয়ত যেন ভ্রাম্যমান বোমার উপর বসে মৃত্যুকে হাতের মুঠোই নিয়ে যাত্রা করছেন হাজারও পথযাত্রী । জানাগেছে, রাণীনগর উপজেলা থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ,রাণীনগর বেতগাড়ী-আত্রাই এবং আবাদপুকুর-আদমদীঘিসহ বিভিন্ন রাস্তায় গড়ে তিন শতাধীক পেট্রোল ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলাচল করছে। প্রায় এক বছর আগে এসব অটোরিক্সা বগুড়া থেকে সিএনজি (কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) অটোরিক্সায় ব্যবহৃত সিলিন্ডারে নিয়ে এসে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় যাত্রী পরিবহন করতো। কিন্তু হঠাৎ করেই বেশ কিছুদিন ধরে অটোরিক্সা চালকরা বগুড়াতে না গিয়ে হাতের নাগালে পাওয়া গৃহস্থালীর রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপিজি (লিকুইট পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডার গাড়ীতে ব্যবহার করছেন। এসব এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার উপর বা পাতাল অবস্থায় ব্যবহার না করে সিলিন্ডার খাড়া অবস্থায় মজবুত ও কোনরূপ ধারালো এবং ঝুঁকিমুক্ত ভাবে সংরক্ষন করে ব্যহারের নির্দেশ থাকলেও অত্যন্ত ভয়াবহ এই সিলিন্ডার গুলো গাড়ীতে চালকের আসনের নিচে ধারালো এ্যাংগেলের ভিতর পাতাল অবস্থায় রেখে দু’পাশে এবং গাড়ীর ভিতরে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে । এতে করে রাস্তায় অধিকতর ঝাঁকুনির কারনে সিলিন্ডারের ভিতরে একদিকে যেমন আরো বেশি প্রেসার বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্যদিকে সিলিন্ডারের জোরা লিকেজ হয়ে যে কোন মুহুর্তে বিষ্ফোরনে গাড়ীতে থাকা যাত্রীদের স্ব-মূলে প্রাণহানীর সম্ভবনা রয়েছে । গাড়ীতে পাতাল অবস্থায় এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার এবং এর কু-ফল সর্ম্পকে না যেনে যাত্রীরা অনায়াসে এসব গাড়ীতে রাখা যেন তাজা বোমার উপর বসে মৃত্যুকে হাতের মুঠোই নিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছেন । গত মঙ্গলবার অটোরিক্সায় আবাদপুকুর থেকে রাণীনগর যাবার সময় পথি মধ্যে গ্যাস ফুরিয়ে যায় । এসময় চালক গাড়ী থামিয়ে ফুরিয়ে যাওয়া সিলিন্ডার খুলে গাড়ীতে মজুত রাখা এলপি গ্যাস সিলিন্ডার প্রতিস্থাপন করেন। এসময় গাড়ীতে থাকা যাত্রীরা গৃহস্থালীর রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার কেন গাড়ীতে ব্যবহার করছেন জানতে চাইলে চালক রুঞ্জু মিয়া (৩৮) জানান, কি করব বলুন ? আমিতো আর একা এই সিলিন্ডার ব্যবহার করছিনা ? রাস্তায় চলাচলকারী প্রায় সবগুলো অটোরিক্সা চালকরাই এই সিলিন্ডার ব্যবহার করছে ! । গাড়ীতে থাকা যাত্রী শফিকুর রহমান,নিয়তি রাণীসহ কয়েকজন জানান,এই রাস্তায় শুধুমাত্র অটোরিক্সা আর ভটভটি এবং অটো টমটম ছাড়া আর কোন যান বাহন নেই । তাই নিরুপাই হয়ে মৃত্যুঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। এব্যপারে নওগাঁ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ সহকারী পরিচালক এসএম মুরশেদ জানান,অটোরিক্সায় এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করাটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ । এলপিজি সিলিন্ডার এটি বাসা বাড়ীতে রান্নার কাজে ব্যবহার করার জন্য, কোন অটোরিক্সা বা গাড়ীতে ব্যবহার করার জন্য নয়। এই সিলিন্ডার গাড়ীতে ব্যবহার করলে রাস্তায় ঝাঁকুনির ফলে যে কোন মুহুর্তে লিক হয়ে অথবা বিষ্ফোরণ ঘটে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে । এব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন জানান, যে সকল গাড়ীতে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে সে সকল গাড়ীগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়ায় যে সকল দোকানে অবাদে গ্যাস সিলিন্ডার গুলো বিক্রয় করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।