‘সন্ত্রাসী’ বিধান জামিনে বাইরে

জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সন্ত্রাসী বিধান বড়ুয়া। ঈদের আগে ৩ জুন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। যুদ্ধাপরাধের মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত বিধান বড়ুয়া। ২০১১ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ নাশির আহমেদ বলেন, বিধান বড়ুয়ার জামিননামা কারাগারে আসার পর এগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। বিধান বড়ুয়া চট্টগ্রাম কারাগারে থাকলেও ছয় মাস আগে তাঁকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
বিধান বড়ুয়ার বাড়ি রাউজানের পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের আঁধারমানিক বড়ুয়াপাড়ায়। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে না পারলেও বিধান ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। উপজেলার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আকতার হোসেন ওরফে রাজুর হাত ধরে শুরু হয় তাঁর উত্থান। আকতার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর বিধানের বিরুদ্ধে একটি চুরির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে চেয়ারম্যান তাঁকে শাস্তি দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিধান আকতার হোসেনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। নব্বইয়ের দশকে তিনি প্রথমে জাতীয় পার্টি এবং পরে সাকা চৌধুরী ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) গঠন করলে তিনি ওই দলে যোগ দেন।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মন জয় করতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বিধান বড়ুয়া। এ সময় তিনি নিজের নামে একটি বাহিনী (বিধান বাহিনী) গঠন করে পুরো রাউজান এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে ১৯৯৩ সালে প্রথমেই খুন করেন পূর্ব গুজরার ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর প্রথম রাজনৈতিক গুরু আকতার হোসেনকে। পরবর্তী এক দশকে তাঁর বাহিনীর হাতে রাউজানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অন্তত এক ডজনেরও বেশি নেতা-কর্মী নিহত হন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ মিয়া, মোহাম্মদ নাছিম, কৃষ্ণ দত্ত, ধনা বৈদ্য, ইকবাল, জামিল, মোহরম আলী, সোহেল, লিটন, ইউসুফ মাস্টার, মোহাম্মদ রফিক প্রমুখ।
বিগত চারদলীয় জোট সরকারের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বিধান বড়ুয়ার দাপট অব্যাহত ছিল। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ শুরু হলে বিধান বড়ুয়া আত্মগোপনে চলে যান। ২০০৮ সালে বিধান রাউজান ত্যাগ করেন। ২০১১ সালে গ্রেপ্তার হন। গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর একটি অস্ত্র মামলায় তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।