প্রকাশিত : ২৮ জুলাই, ২০১৯ ০৮:৩৮

বগুড়ায় নতুন একটি উপজেলা বন্যাকবলিত এ পর্যন্ত মৃত্যু ৪

ষ্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ায় নতুন একটি উপজেলা বন্যাকবলিত এ পর্যন্ত মৃত্যু ৪
ছবি: প্রতীকী

বৃষ্টি আরো দুর্ভোগ বাড়িয়েছে বগুড়ার বানভাসিদের। বগুড়ায় দুটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নয়ন হয়নি। জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনটের পর এবার নিমজ্জিত হলো গাবতলী উপজেলা। এখন ৪টি উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। শুক্রবার থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত গাবতলী উপজেলার প্রায় ৪৪ টি গ্রাম, ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে করে নতুন করে সাড়ে ১৬ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। জেলায় সরকারিভাবে ৪ জন মারা গেছে বলে বলা হয়েছে।

বগুড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, শনিবার যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি কমার কারণে লোকালয়ে ঢুকে পড়া পানিও কিছুটা কমেছে। হিসেব অনুযায়ি যমুনার পানি বিপদ সীমার ১৫ সেন্টিমিটার ও বাঙালি নদীর পানি ৮৬.৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঙালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় আরো একটি উপজেলা গাবতলীতে নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে। এই উপজেলার বেশ কিছু ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। নিমজ্জিত হয়েছে ২১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয়। এই উপজেলায় বন্যার পানিতে পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ লোকসংখ্যা ১৬ হাজার ৪৮০ জন। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৩টি ইউনিয়নের ৪৪টি গ্রাম। বন্যার পানি প্রবেশ করার সাথে সাথে ১৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। বানভাসি মানুষ এখনও বন্যায় কবলিত ঘর-বাড়িতে ফিরে যেতে পারেনি।

বগুড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মন্ডল জানান, প্রথম দিকে ৩টি উপজেলায় বন্যা দেখা দিলেও এখন ৪টি উপজেলায় বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। নতুন করে নিমজ্জিত হয়েছে জেলার গাবতলী উপজেলা। সব মিলিয়ে এখন ১৫৬টি প্রাথমিক স্কুল, ৪০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২০ টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্যা কবলিত হয়েছে। ২৫টি ইউনিয়নের ৬৫০টি গ্রামের প্রায় ২ লাখ ৬৭ হাজার ৪৪৪ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। চারটি উপজেলায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে ২৩ হাজার ৩০ হেক্টর। এরমধ্যে পাটের ক্ষতি হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার হেক্টর। কাঁচা মরিচ ১৩৫ হেক্টর, আমন বীজতলা ২ হাজার ১২০ হেক্টর।

আউশ ধান ৯ হাজার ২৫০ হেক্টর, শাক সবজি ১ হাজার ১৫ হেক্টর, আখ ১০ হেক্টর। বন্যা উপদ্রুত ৪ টি উপলেয় এ পর্যন্ত ৩০০০ প্যাকেট শুকনা খবার, ৮৫০ মেট্রিকটন চাল, ১২ লাখ টাকা,, ১ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্যের জন্য ১ লাখ টাকা পেয়েছে জেলা প্রশাসন। দ্রুত গবাদিপশু ও শিশু খাদ্য বিতরণ করা হবে। বন্যা জনিত কারনে এ পর্যন্ত জেলার তিন উপজেলায় গত কয়েকদিনে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলায় সাপে কেটে ১ জন, সোনাতলা উপজেলায় ২ জন এবং গাবতলী উপজেলায় পানিতে ডুবে ১জনের মৃত্যু হয়েছে। বগুড়ার বন্যা কবলিত সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট ও নতুন করে গাবতলী উপজেলার বিস্তর্ণ এলাকার গোচারণ ভুমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্য সংকট।

বগুড়া জেলা প্রানী সম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ডাঃ রফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, গাবতলী উপজেলা নতুন করে প্লাবিত হওয়ায় গাবতলী উপজেলায় নেপিয়ার ঘাসের চাষ হয়ে থাকে। এখানে ৪০ একর নেপিয়ার ঘাস পানিতে ঢুবে গেছে।

উপরে