সান্তাহারে ঈদকে সামনে রেখে টুং টাং শব্দে মুখর কামার পট্রিগুলো
ঈদকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়ার সান্তাহার পৌর এলাকার কামার শিল্পীরা। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা। কুরবানির পশু কাটাকুটিতে চাই ধারালো ছুরি, দা, বটি ও চাপাতি (কাটারি)। তাই কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটাপিটিতে টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে সান্তাহারের কামার পট্রিগুলো। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
সরেজমিন সান্তাহার পৌর এলাকার হাট-বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি কিনতেও লোকজন আসা-যাওয়া করছেন তাদের দোকানে। আগে যেসব দোকান একজনে চলতো এখন সেসব দোকানে অতিরিক্ত আরো ২/১ জন শ্রমিক কাজ করছেন।
সান্তাহার নতুন বাজরের কামার আরমান হোসেন বলেন, সারা বছর কাজ কম থাকে। কুরবানির ঈদ এলে আমাদের কাজ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ছুরি শান দেওয়ার জন্য ৫০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে সম্ভবত ছেলেধরা আতঙ্কে দুরের খদ্দেররা এখনো আসা শুরু করেনি। যদি দুরের খদ্দেররা এবার না আসে তাহলে গত বছরের চেয়ে এবার কাজ অনেকাংশে কম হবে বলে ধারনা করছি।
এ বিষয়ে অপর কামার শ্রী. গনেশ কুমার বলেন, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে আমাদের বেচা কেনা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। ঈদের দুই/তিন দিন আগে সাকল থেকে শুরু করে গভির রাত পর্যন্ত বেচাকেনা হয়ে থাকে। তখন আমাদের খাওয়ার সময়ও থাকে না। আরেক কামার সাদ্দাম হোসেন বলেন, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লার মূল্য বেড়ে গেছে। মাত্র কয়েক মাস আগেও প্রতি টিন কয়লার দাম ছিলো ২৫ থেকে ৩০ টাকা। সেই কয়লা এখন আমাদের ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাই আমরা নিরুপায় হয়ে ছুরি, দা ও চাপাতির দাম একটু বেড়ে দিয়েছি। তা না হলে আমাদের লাভ হবে না। বাজার এলাকার আরেক দোকানি মিলন হোসেন বলেন, কাজের চাপে কখন খাওয়ার সময় চলে যাচ্ছে আমরা টেরও পাই না। চাপাতি (কাটারি) বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে আমাদের বিক্রি তত বাড়ছে।
এব্যাপারে ক্রেতা ফজলুল হক ফজলু বলেন, আমি একটি চাপাতি ৫০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি। এছাড়া সান্দিড়া থেকে কুদ্দুস নামের এক ক্রেতা এসেছেন গরু জবাই করা ছুরিসহ পুরাতন জিনিসপত্র রিপেয়ারিং করার জন্য। তিনি বলেন অন্যান দিনের চেয়ে ঈদ আসলেই কামাররা একটু মজুরি বেশি নেয়। অপর ক্রেতা সাগর হোসেন বলেন, ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে কামাররা তাদের ছুরি, দা, চাপাতির তৈরীর দামও বাড়িয়ে দিয়েছে।