প্রকাশিত : ৯ আগস্ট, ২০১৯ ২৩:৩৯

বগুড়ায় দেশীয়ভাবে তৈরী ছুরির সাথে পাল্লা দিচ্ছে চীন ও বার্মিজ ছুরি চাপাতি

এইচ আলিম
বগুড়ায় দেশীয়ভাবে তৈরী ছুরির সাথে 
পাল্লা দিচ্ছে চীন ও বার্মিজ ছুরি চাপাতি

ঈদ একেবারে কাছে চলে এসেছে। সময় খুব দ্রুত ঈদুল আযহার দিকে চলে যাচ্ছে। বগুড়ায় কোরবানীর জন্য পশু প্রস্তুত করার পর এবার ভিড় বাড়ছে ছুরি, চাপাতি, বটি, দা’র দোকানে। কেউ বা আবার শখের বসে কামারশালায় ভালমানের কোরবানীর পশু জবাইয়ের জন্য রামদা ছুরি তৈরী করে নিচ্ছেন। ছুরি, বটির দোকানগুলো থেকে শুরু করে কামারশালায় বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দেশীয়ভাবে তৈরী ছুরির সাথে এবার পাল্লা দিতে এসেছে চীন ও বার্মিজ ছুরি, চাপাতি। দামে মানে যেমনই হোক চলছে ধারালো দা’ ছুরির কেনাবেচা। 

বগুড়া জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, জেলায় এবারও কোরবানির হাট জমে উঠেছে। খামারে এবার প্রচুর পরিমানে দেশীয়জাতের গরু পালন হযেছে। এই গরুগুলোই হাটে বেশি বিক্রি হচ্ছে। এবছর গরু ২ লাখ ৯৩ হাজার ৬২টি, মহিষ ২ হাজার ৪৮টি, ছাগল দেড় লক্ষাধিক, ভেড়া সাড়ে ২৬ হাজার নিয়ে মোট গবাদিপশু রয়েছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৮০৮টি। মোট খামারী রয়েছে ২৬ হাজার ৯৩০ জন। বগুড়া জেলায় কোরবানীর পশুর চাহিদা প্রায় ৩ লাখ ৩৫ হাজার। গত বছর কোরবানী দেয়ার সংখ্যা ছিল সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪০৫টি। তিনি জানান, জেলায় চাহিদার তুলনায় বেশি পশু লালন পালন হয়। বাড়তি পশুগুলো বিভিন্ন জেলায় চলে যায়। 
জানা যায়, বগুড়ায় জেলায় এবার প্রায় সাড়ে তিন লাখের মত পশু কোরবানী হবে। কোরবানীর জন্য জেলার বিভিন্ন হাটে ভিড় বেড়েছে। ঈদ উল আযহা যতই কাছে আসছে ততটায় ভিড় বাড়ছে বগুড়ার ছুরি, বটি, রামদা, চাপাতির দোকানে। বগুড়া শহরের চেলোপাড়া, ১ নং রেলঘুমটি, তিনং রেলঘুমটি, কাঁচা লোহার জন্য ভাংড়ি পট্টি, কাঁঠাল তোলা, কলোনীসহ কয়েকটি এলাকায় বিক্রি হচ্ছে পশুর চামড়া ছাড়ানো, গোস্ত কাটা, জবাই করার বিভিন্ন ধরনের বড় ছুরি, রামদা, চাকু, বটি, কাঠেরগুড়ি। বগুড়ার বাজারে দেশিয়ভাবে তৈরী ছুরির সাথে এবার পাল্লা দিচ্ছে চীনের তৈরী প্যাকেটজাত রামদা, ছুরি, চা পাতি। দেশীয়ভাবে তৈরী ছোট ছুরি ২০ থেকে ৬০ টাকা একটু বড় ছুরি ৬০ থেকে ১০০ টাকা, রামদা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, বটি বিভিন্ন মানের আকারের ৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চা পাতি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বড় ধারালো ছুরি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এর সাথে বার্মিজ ও চীনের তৈরী সিলভার রঙের মান অনুযায়ি চকচকে চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা, ছোট ছুরি ১০০ টাকা, পশু জবাই করার ছুরি ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, দা ৩০০ থেকে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। এইসব বার্মিজ, কখানো চীন বলে দোকানীরা বিক্রি করছে।

দামও ইচ্ছে মাফিক হাঁকা হচ্ছে। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চীন ও বার্মিজ ছুরিগুলো প্যাকেট করা হয়েছে। দেখতে বেশ চকচকে। ছুরি, বটির সাথে দাম বেড়েছে গাছের গুড়ির। ছোট বড় বিভিন্ন দামের গাছের গুড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা করে। বগুড়া শহরের ৩ নং রেলঘুমটির কাছের এক বিক্রেতা জানান, কোরবানি উপলক্ষে ছুরি, দা, রামদার বিক্রি বেড়েছে। বিভিন্ন দামের এবং মানের ছুরি বিক্রি হচ্ছে। দেশীয়ভাবে মোটা কড়াত শীটের ছুরি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার মধ্যে। আর চীন ও বার্মিজ নামের ছুরি বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। 

বগুড়া শহরের কাঁঠালতোলা এলাকার ছুরি ক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বগুড়ায় প্যাকেট করে চকচকে দা, ছুরি, চীন ও বার্মিজ নামে বিক্রি করা হচ্ছে। এগুলো আদৌ চীনের কি না তা জানা নেই। তবে এ নামেই ছুরিগুলো কেনা হলো। ছোট ছুরি ১০০ টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে। 
বগুড়া শহরের ২ নং রেলঘুমটির উপর রাখা কাঠের গুড়িগুলো বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে। ছোটগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা করে। আর মঝাড়ি মানের দাম হাঁকছে ৩০০ টাকা এবং তেতুঁল কাঠের বড় গুড়ি দাম হাঁকছে ৫০০ টাকা। অনেকে আবার দরদাম করে কেনাবেচা করছে। 

উপরে