সৈয়দ আহম্মদ কলেজ এলাকায় ক্লান্তি ভুলে ব্যস্ত কামার শিল্পীরা
পবিত্র ঈদ-উল-আযহার সময় ও দিন যতো ঘনিয়ে আসছে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা ততই বেড়ে চলেছে। ক্লান্তি ভুলে কোরবানির আনুসাঙ্গিক হাতিয়ার দা, বটি, চাপাটি, ছুরি ও চাকুসহ ধারালো অস্ত্র বানাতে দম ফেলার সময় নেই বগুড়া সোনাতলা উপজেলার সৈয়দ আহম্মদ কলেজ এলাকার কামার শিল্পীদের। সকাল শুরু হয় টুং টাং শব্দ চলে দিনভর। এভাবেই দিনগুলো পার হয় কামার শিল্পীদের। তবে প্রতিদিনের কাজের তুলনায় এই ঈদের আগেই বেড়ে যায় তাদের কর্মব্যস্ততা। সারাবছর যত লোহা সামগ্রী বিক্রি হয় ঈদেই বিক্রি হয় তার চেয়ে অনেক বেশি। কারণ পশু জবাই করার জন্য ধারালো অস্ত্রের প্রয়োজন। আর পুরনো এইসব অস্ত্র অনেকেই রাখেন না। সেই জন্য প্রতিবছর নতুন নতুন অস্ত্রের প্রয়োজন পরে।
সরেজমিনে সুখানপুকুর ও সৈয়দ আহম্মদ কলেজ এলাকার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে চোখে পড়ে যায় কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা। দা, বটি, চাকু, কোদাল, কাস্তে সহ নানা রকম জিনিসপত্র তৈরি করতে তারা ব্যস্ত। বিশেষ করে তারা দা, চাকু, বটি তৈরী ও পুরোনো গুলোতে ধার দিতে ব্যস্ত দেখা যায় তাদের। কয়েকজন কামার শিল্পীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানী কয়লার দাম বেড়ে গেছে, বেড়েছে লোহারও দাম। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। ফলে কামার শিল্পীরা আর্থিকভাবে পিঁছিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে পৈতৃক পেশা পরিবর্তন করছে। সন্তানরা যেন এই পেশার সঙ্গেযুক্ত না হন সে জন্য অনেকে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া শেখাচ্ছেন।
আজ সৈয়দ আহম্মদ কলেজ হাটের কামার শিল্পী সুকুমার, জয়তন ও উত্তম দৈনিক চাঁদনী বাজারের স্থানীয় প্রতিনিধিকে জানান, গতবছর থেকে লোহা সহ সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের বেচা বিক্রি তুলনামূলক হারে কম। সরকার আমাদেরকে যদি অর্থনৈতিক ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেন তাহলে আমরা ব্যবসা আরও ভালোভাবে চালিয়ে যেতে পারব। এ বিষয়ে তারা আরও আক্ষেপ করে জানান, তাদের এ পেশা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী না হয় তাহলে তারা এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোশকতা পেলে এই শিল্পকে টেকসই করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে তারা মনে করেন।