প্রকাশিত : ১৮ আগস্ট, ২০১৯ ০৬:৩৮

বর্জ্য অপসারণে সহযোগিতার জন্য নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানালেন মেয়র মোস্তফা

রনজিৎ দাস, রংপুর॥
বর্জ্য অপসারণে সহযোগিতার জন্য নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানালেন মেয়র মোস্তফা

কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেও ১৫ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করে ঈদের দ্বিতীয় দিন পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দিয়েছে রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক)। ঈদের প্রথম দিন (১২ আগস্ট) সকাল থেকেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে রসিকের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। রিকশাভ্যান নিয়ে নির্দিষ্ট ডাস্টবিন ও নির্ধারিত স্থান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ ছাড়াও বাড়ি বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। রাত ১২টার আগেই সংগৃহিত বর্জ্য ডাম্পিং প্রক্রিয়ায় নেওয়া হয়।এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করে ঈদের দ্বিতীয় দিন পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করায় সিটি মেয়রসহ পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে নগরবাসী।

অন্যদিকে দ্রুত বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সহযোগিতা করার জন্য নগরবাসীর প্রতিও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। নগরীর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে সিটি করপোরেশন কোরবানির ঈদকে ঘিরে খুবই তৎপরতার সাথে বর্জ্য অপসারণ করছে। এবারো তাই দেখলাম। ২৪ ঘন্টার আগেই বর্জ্য অপসারণ শেষ। এখন কোথাও তেমন দুর্গন্ধ নেই। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের পাশাপাশি মেয়র ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছে বলেই আমরা পরিচ্ছন্ন নগরী দেখতে পাচ্ছি। আগামীতে যেন আরো দ্রুত বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়, সেজন্য নতুন নতুন পরিকল্পনা থাকতে হবে।’চামড়া কেনাবেচার প্রসিদ্ধ এলাকা চামড়াপট্টি হাজীপাড়ার নাজমুল ইসলাম বলেন, ঈদের তিন দিনই সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অপসারণে ব্যবহৃত গাড়িগুলোতে বেশ কয়েকবার পশুর বর্জ্য, পঁচা চামড়া ও ময়লা অপসারণ করেছে। দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়েছে।

তবে এখনো কিছু চামড়া গুদামের সামনে চামড়ার স্তুত পড়ে থাকায় এলাকাটি পুরোপুরি দুর্গন্ধমুক্ত হয়নি। রংপুর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান ও ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবার রহমান মঞ্জু বলেন, রসিকের ৭০টি রিকশা ভ্যান, ২৭টি বর্জ্যবাহী ট্রাক, দুটি স্টিল রোডার, পানিবাহী দুটি গাড়ি ও ৬২৭ জন সেবক সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছে। ঈদের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত ১৭০ টন এবং পরের দুইদিনে আরো ৩০ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। আমাদের টার্গেট ছিলো ২৪ ঘন্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ শেষ করা। কিন্তু সবার আন্তরিকতা ও সহযোগিতার কারণে তা ১৫ ঘন্টার মধ্যেই সফল হয়েছে।

এই কার্যক্রম সরাসরি মনিটরিং করছেন সিটি মেয়র মোস্তাাফিজার রহমান মোস্তফা। আমরা শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করতে ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনেও কন্ট্রোল রুম চালু রাখার পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন কর্মীদের নিয়ে বর্জ্য অপসারণ করেছি।’বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের একাংশের জোন প্রধান মোহাম্মদ হাসান রাহি জানান, ঈদের দিন থেকৈ সিটি মেয়র নিজেই বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের খোঁজখবর নেন। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের পাশাপাশি সিটির বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা এই ঈদে পরিবার পরিজনের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। একারণে আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করতে পেরেছি।’এ প্রসঙ্গে মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোরবানির বর্জ্য অপসারণে যে সময় বেঁধে দিয়েছিলাম- ওই সময়ের মধ্যেই পরিচ্ছন্ন কর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করেছে। তারা ঈদের প্রথম রাতেই বর্জ্য অপসারণ করে তা ডাম্পিং প্রক্রিয়ায় আনতে সফল করেছে।

এই কাজের জন্য সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তিনটি জোনের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাথে নিয়ে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলাম। নগরবাসীর সহযোগিতার কারণে পুরো টিম এই চ্যালেঞ্জে সার্থক হয়েছে। আমি নগরীর প্রত্যেকটি মানুষের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তাদের সহযোগিতা ও আন্তরিকতা ছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করে পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দেয়া সম্ভব না। 

উপরে