প্রকাশিত : ২২ আগস্ট, ২০১৯ ০৮:৫৪

বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী পল্লী মঙ্গল সমিতির কোটি টাকা আত্নসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ

দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিস্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসিসহ সচেতন মহল
ষ্টাফ রিপোর্টার
বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী পল্লী মঙ্গল সমিতির কোটি টাকা আত্নসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ

প্রায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী পল্লী মঙ্গল সমিতির কোটি টাকা আত্নসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে শত শত এলাকাবাসি। সমিতির দোকান ঘর পজিশন এবং মাসিক ভাড়ার টাকা উত্তোলণ করে কোটি টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে খোদ সভাপতি মাহফুজার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল আলম শাওনের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসি সুত্রে জানা যায়, দির্ঘদিন যাবত নির্বাচন ছাড়াই পকেট কমিটি দিয়ে চলছে কোটি টাকার কারবার। সমিতির দীর্ঘ দিন যাবৎ নির্বাচন না হওয়াই সদস্যদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোন মূহত্বে সংঘর্ষ ঘটতে পারে সচেতন এলাকাবাসির সাথে।সুত্র মতে, ফুলবাড়ী পল্লী মঙ্গল সমিতি একটি জন কল্যাণ মূলক সমিতি। এ সমিতি ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জন কল্যাণ মুলক কাজ করার অঙ্গীকার নিয়ে।

কিন্তু এ সমিতিতে চলছে এক নায়কতন্ত্র। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সমিতির অধীনে ১০ টি দোকান ঘর রয়েছে। যা থেকে প্রতি মাসে ১৮/২০ হাজার টাকা আয় হয়। আয় ব্যায়ের কোন হিসাব নিকাশ নেই। নেই কোন ব্যাংক একাউন্ট। জনমনে ও সচেতন মহলের দাবি প্রতি বছর দুই লক্ষাধিক টাকা আয় হলেও এ টাকা কোথায় যায় ? কি হয়? কার পকেটে উঠে। তা কেউ জানেনা। এই সমিতির দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছেন জনৈক দুলু ও বিকাশসহ অনেকেই । সেলুন ব্যবসায়ী দুলু এবং মুদি দোকানী শামিম জানান, আমি সমিতির নিকট থেকে দোকান ভাড়া নেওয়ার পর নিয়মিত ভাড়া দিয়ে আসছি। ভাড়ার টাকা সাধারণ সম্পাদকের নিকট জমা দেই। ব্যবসায়ীরা বলেন, কোন ব্যবসায়ী ১ হাজার, আবার কোন ব্যবসায়ী মাসে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া দিয়ে আসছে। জানা যায়,সমিতির ভাড়াটিয়া দোকানদার ব্যবসায়ী শামিম তিনি ৭ লাখ টাকায় দোকান ঘর পজিশন নিয়েছেন, জাহিদুল ইসলাম ৮ লাখ, সৌরভ ৫ লাখ এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের বিনিময়ে সমিতির কাছ থেকে দোকান ঘর পজিশন নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন।

এদিকে ফুলবাড়ী এলাকার জনৈক মামুনুর রশিদ মামুন, ইউসুফ, আপেল, পারভেজ, শামিম, সাদ্দাম হোসেন, হাসিবুর রহমান রাফি, শাহ আলম সেখ, মুক্তাদ্দির, রাজিবুল ইসলামসহ অর্ধ শতাধিক এলাকাবাসি জানান, নির্বাচন নয়, পকেট কমিটির মাধ্যমে এই সমিতি দীর্ঘদিন যাবত পরিচালিত হয়ে আসছে। একাধিক এলাকাবাসি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান,এভাবেই কি নানা অনিয়ম ও অর্থ আত্নসাতের মাধ্যমেই চলবে এ সমিতির কার্যক্রম। কবে ফিরে পাবে সাধারণ সদস্যরা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কবেই বা নির্বাচন হবে? যদি নির্বাচন না হয় ? এলাকাবাসি জানান, সেক্ষেত্রে বর্তমান সমিতির নামধারী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে পারে শত শত সচেতন এলাকাবাসি। ঘটতে পারে সংঘর্ষ যে কোন মূহত্বে। সেক্ষেত্রে তার দায় দায়িত্ব নিতে হবে সমিতির সভাপতি ও পরিচয় দানকারি তথা কথিত সাধারণ সম্পাদকের ।এদিকে ব্যক্তিগত না সমিতির টাকায় চলছে ? ভিআইপি গেস্টরুম, এসি, সিসি ক্যামেরা,দামি সোফাসেট, ঝাড়বাতি ব্যবহার, সাধারণ সম্পাদকের ব্যক্তিগত ভিআইপি এসি গেস্ট রুম,ইলেকট্রিক ঝাড়বাতি। এসবের ব্যয়ভার বহন করে কে? সমিতি ? না সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে। ।

নানা প্রশ্ন জনমনে। অভিযোগ উঠেছে এই সমিতির এক কর্মকর্তা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে সেলফি তুলে তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় নিজেকে বড় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসাবে দাবি করে আসছেন। এ প্রসঙ্গে সমিতির সভাপতি মাহফুজার রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,দীর্ঘদিন কোন নির্বাচন হয়নি। তবে সিলেকসনের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরে সাধারণ সভা ডেকে বির্বাচন করা হবে। নামধারী তথা কথিত সাধারণ সম্পাদ রাশেদুল আলম শাওনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সমিতির নামে ব্যাংক একাউন্ট নেই স্বীকার করে বলেন, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সমিতির নিবন্ধন নেই,তবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে বগুড়া সমাজসেবা অধিদপ্তরে। সমিতির সদস্য কত জন, নতুন সদস্যদের নিকট থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছে এবং সমিতির বর্তমান আয় ব্যয় কত সে সম্পর্কেও তিনি কিছু বলতে পারেননি। এদিকে এই সমিতির অতীত ঐতিহ্য ফিরে পেতে যথা নিয়মে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা এবং সমিতি থেকে আয় কোটি টাকা আত্নসাতের বিষটি তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সমাজ সেবা অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিস্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসিসহ সচেতন মহল। 

 

উপরে