প্রকাশিত : ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০২:৪৭

চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে চলছে এলেঙ্গা- হাটিকুমরুল-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্প

নাজমুস সাকিব আপেল (ষ্টাফ রিপোর্টার) :
চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে চলছে এলেঙ্গা- হাটিকুমরুল-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্প

প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্যতম চ্যালেঞ্জ ভূমি অধিগ্রহন,পুনর্বাসন, প্রকল্প এলাকার মধ্যে বিদ্যমান বৈধ অবৈধ ধর্মীয় ও সামাজিক অবকাঠামো অপসারন,স্থানীয় পর্যায়ের মামলা মোকদমা,ইউটিলিটি শিফটিং,উন্নয়ন সংস্থা হতে ধাপে ধাপে সম্মতি গ্রহণ ও বৃক্ষ অপসারন সহ বেশকিছু জটিলতা মাথায় নিয়ে! প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩টি প্যাকেজের আওতায় গুরুত্বপূর্ণ এলেঙ্গা হাটিকুমরুল-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক ২০১৯-২০ অর্থ বছরে চার লেন প্রকল্পের দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের কথা রয়েছে। সাউথ এশিয়া সাবরিজওনাল ইকোনিক কো-অপারেশ (সাসেক-২) সড়ক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবির আর্থিক সহযোগিতা ও সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। ১৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেন প্রকল্পটি ০৫ টি জেলার ১৪ টি উপজেলায় মহাসড়ক জুড়ে বিসৃত।

টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের-১৪ কিঃ মিঃ,সিরাজগঞ্জ-৩৬কিঃ মিঃ,বগুড়া-৬৫ কিঃ মিঃ,গাইবান্ধা-৩৩কিঃ মি সহ রংপুর সড়ক বিভাগের ৪২ কিঃ মিঃ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। চার লেনের পাশাপাশি মহাসড়কের দুই পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য মূল সড়ক থেকে সামান্য নিচুতে ০৩ দশমিক ৭ মিটার সংরক্ষিত লেনও থাকবে। এ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা,কড্ডা ও গোবিন্দগঞ্জে ০৩ টি ফ্লাইওভার, হাটিকুমরুলে ০১ টি ইন্টারচেঞ্জ, বগুড়ায় ০১ টি রেলওয়ে অন্ডারপাস সহ প্রকল্প এলাকায় মোট ১৯৩ টি সেতু ও কালভার্ড। ১১টি ফুট অভারব্রিজ, ৬৮ টি বাস-বে এবং ব্যস্ত শহর এলাকায় ৩৯ টি আন্ডারপাস সম্বলিত অবকাঠামো উন্নয়ের মাধ্যোমে পৌছে যাবে উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ। তথ্য সুত্র অনুযায়ী প্যাকেজ-০৬ এর আওতায় চুক্তি অনুযায়ী ৬৭৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে হাটিকুমরুল মোড় পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার চারলেন মহাসড়কের এ অংশে থাকছে ২৪ টি সেতু ও কালভার্ট, কড্ডা এলাকায় একটি ফ্লাইওভার, ১২টি বাস-বে সহ পাঁচটি আন্ডারপাস। প্যাকেজ-০৬ বাস্তবায়নের কাজ পেয়েছে যৌথ নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের হিগো ও বাংলাদেশের মীর আকতার হোসেন লিমিটেড, জানাযায় চুক্তি বাস্তবায়নে সময় লাগবে ৩২ মাস। সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক কার্যালয় সুত্রে জানাগেছে চলতি অর্থবছরে হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জের নকশা প্রনয়ন ও ক্রয়কার্যক্রম গ্রহনের সম্ভবনা রয়েছে। এদিকে সিরাজগঞ্জ জেলার-হার্টিকুমরুল মোড় থেকে শেরপুর উপজেলার-মির্জাপুর পর্যন্ত প্রায় ২৮কিঃ মিঃ চার লেন প্রকল্পের কাজ পেয়ছে নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনায়েম লিমিটেড। প্যাকেজ-০৭ এর ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এ প্যাকেজের নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব মাহবুবুর রহমান রাসেল বলেন প্যাকেজ-০৭ এর আওতায় ০১টি ফুট অভার ব্রীজ, ৩৭টি সেতু ও কালভার্ট, ০৪টি বাস-বে এবং ০৬ টি আন্ডারপাস নির্মাণ হবে। মাটি ভরাটের মধ্যোদিয়ে কাজশুরু হয়েছে, খুব দ্রত সেতু ও কালভার্টের কাজ ধরা হবে।

তবে,প্যাকেজ-০৮ ও ০৯ এর আওতায় শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর থেকে শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা, বগুড়া আংশের নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব আহসান হাবিব ও জনাব মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ দ্বয়ের সাথে আলাপকালে জানা যায়, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রকল্পের এ অংশের ভূমি অধিগ্রহন চলছে। জানা গেছে চলতি মাসেই মহাসড়কের ভূমির কিছু অংশ ঠিকদারদের বুঝিয়ে দিতে আশাবাদী সওজ বগুড়া কর্তৃপক্ষ। দুটি প্যাকেজের আওতায় প্রায় ১২০০ কোটি টাকা ব্যায়ে বগুড়ার তিন মাথায় ০১ টি রেলওয়ে আন্ডারপাস সহ মোট ৩০ টি সেতু-কালভার্ট, ২৮টি বাস-বে সহ ০৫টি ফুট অভার ব্রীজ ও মহাসড়কের ব্যাস্ততম এলাকায় ০৯ টি আন্ডারপাস সহ প্রায় ৫৫ কিঃ মিঃ সড়ক চারলেনে উন্নীতকরা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি হয়েছে নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টি পি সি-তানতিয়া জয়েন্টভে›চার এবং মনিকো-কেএনসি জয়েন্টভে›চার লিমিটেড। সওজ গাইবান্ধা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব আশাদুজ্জামান বলেন জেলার মহাসড়কের এ অংশে সাসেক-২ প্রকল্পের ফ্লাই অভার নির্মান সহ দুইটি প্যাকেজর ঠিকাদার নিয়োগ হয়ে গেছে তারা মাঠপর্যায়ে অবস্থান নিয়েছে।

তিনি আরো বলেন বৃক্ষ অপসারন,ভূমি অধিগ্রহন সহ অন্যান্য কার্যক্রম শেষ হলেই ঠিকাদারদের ভূমি বুঝিয়ে দেয়া হবে। সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ এর সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ডেপুটি প্রকল্প পরিচালক জনাব জয় প্রকাশ চৌধুরী বলেন, প্যাকেজ-০৫ এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়ন চলছে। প্যাকেজ-০৬ এর সার্ভে ও সেতুর কাজ এবং প্যাকেজ-০৭ এর সড়কের মাটিভরাট কাজ দৃশ্যমান হয়েছে এছাড়া মোকামতলা থেকে রংপুর মর্ডান মোড় পর্যন্ত ০৩টি প্যাকেজ সহ অনান্য প্যাকেজ সমূহের আওতায় ভূমি অধিগ্রহনের কাজ স্ব-স্ব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে চলমান রয়েছে। তিনি আরো বলেন বড়ধরনের জটিলতা বা চ্যালেঞ্জের সম্মূখীন না হলে উল্লেখিত বাজেটেই কাজ শেষ হতে পারে।

উপরে