প্রকাশিত : ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০৩:০০

সুন্দরগঞ্জের কে কৈ কাশদহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাঞ্চিত

ষ্টাফ রিপোর্টার
সুন্দরগঞ্জের কে কৈ কাশদহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাঞ্চিত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কে কৈ কাশদহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের দ্বন্দ্ব কলহের জের ধরে একজন সহকারি শিক্ষকের বেতন-ভাতা বন্ধের প্রতিবাদে প্রধান শিক্ষক ওবায়দুর রহমানকে লাঞ্চিত করার ঘটনা ঘটেছে। 

১৯৯২ সালের স্থাপিত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বর্তমান সভাপতির দ্বন্দ্ব কলহের ধারাবাহিকতায় সহকারি শিক্ষক কোহিনুর বেগমের বেতন-ভাতা বন্ধের প্রতিবাদে এই লাঞ্চনার ঘটনা ঘটেছে। সহকারি শিক্ষক কোহিনুর বেগমের স্বামী মুকুল সরকার গত ২৮ আগষ্ট বিদ্যালয়ে গিয়ে তার স্ত্রীর বেতন-ভাতা বন্ধের কারণ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথাকাটির এক পর্যায়ে তাকে লাঞ্চিত করেন। যা নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যেই চাপা ক্ষোভ-অন্তোষ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল জলিল সরকার গত ২০০০ সালে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি থাকাকালীন সময়ে তার পুত্রবধু কোহিনুর বেগমসহ কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারীকে একই দিনে নিয়োগ প্রদান করেন।

এই নিয়োগ প্রাপ্তির পর ২০০১ সালে এমপিওভূক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা উত্তোলনের সুযোগ পেতে থাকেন। তৎকালীন সভাপতি আব্দুল জলিল এই তথ্য স্বীকার করেন। তিনি জানান, বিদ্যালয়ে এক সঙ্গে নিয়োগপ্রাপ্ত অন্যান্য শিক্ষকের কাগজ-পত্রাদি ঠিক আছে। শুধুমাত্র তার পুত্রবধু কোহিনুর বেগমের কাগজ-পত্রাদি ঠিক নেই। তৎকালীন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের এই ধরনের ষড়যন্ত্র ফাঁস হলে দ্বন্দ্ব কলহের সূত্রপাত ঘটে। 
তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামছুল হুদা জানান, তার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত ওইসব শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজ-পত্রাদি প্রধান শিক্ষককে বুঝিয়ে দিয়েছি। 

ভুক্তভোগী শিক্ষক কোহিনুর বেগম বলেন, ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বের কারণে তার বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গত তিন মাস তার বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়ের বর্তমান রশিদুন-নবী রশিদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, ওই শিক্ষকের নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজ-পত্রাদির বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ওই সহকারি শিক্ষককে নোটিশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে ওই সহকারি শিক্ষক তার কোন কাগজ-পত্রাদি দেখাতে পারেন নাই। এই কারণে তার বেতন-ভাতা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে বন্ধ করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ওবায়দুর রহমান জানান, তিনি বিএড প্রশিক্ষণে থাকাকালীন সময়ে তৎকালীন সভাপতি আব্দুল জলিল সরকার ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামছুল হুদা ওইসব নিয়োগ প্রদান করেছেন। কোহিনুর বেগমকে ষষ্ঠ শ্রেণীর খ-শাখার সহকারী শিক্ষককে হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ষষ্ঠ শ্রেণীর খ-শাখার এখন পর্যন্ত কোন অনুমোদন নেই। তারপরেও ওই শিক্ষক বেতন-ভাতা উত্তোলন করাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ে তার কোন প্রকার কাগজ-পত্রাদি বিদ্যালয়ে সংরক্ষণ নেই। সেই কারণে বিদ্যালয়ের সভাপতি নিয়মতান্ত্রিক ভাবে তার বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেন।

উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার মাহামুদ হোসেন মন্ডলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কোহিনুর বেগমের বেতন-ভাতা বন্ধের বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই। তবে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। 

উপরে