প্রকাশিত : ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৮:৩৩

টেপামধুপুর হাটের ড্রেনগুলো মাটি দ্বারা ভরাট, মশা উৎপাদনের কারখানা

কাউনিয়ায় কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকায়
কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ
টেপামধুপুর হাটের ড্রেনগুলো মাটি দ্বারা ভরাট, মশা উৎপাদনের কারখানা

কাউনিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহি প্রায় ১ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের টেপামধুপুর হাটে পানি নিস্কাশনের জন্য নির্মিত ড্রেন গুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিনত হলেও তা কর্তৃপক্ষের নজরে আসছে না। সরেজমিনে টেপামধুপুর হাটে গিয়ে দেখাগেছে সরকারের রাজস্ব কিভাবে অপচয় হয় তা এখানকার ড্রেন গুলো দেখলেই বোঝা যায়। অপরিকল্পিত ভাবে এই হাটের পানি নিস্কাশনের জন্য কতবার যে ড্রেন নির্মান করা হয়েছে আর কতবার তা ভেঙ্গেফেলা হয়েছে তার হিসেব নাই। বিগত সময়ে পানি নিস্কাশনের জন্য হাটের মাঝে প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যায় করে একটি কুপ খনন করা হয়েছিল তা এখন কোন কাজে আসছেনা। কুপটি এখন অচল।

সর্বশেষ নবিদেপ প্রকল্পের আওতায় হাট উন্নয়নের জন্য ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার, ৯শ’ ৯৯ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সেই অর্থ থেকে যে ড্রেন গুলো নির্মান করা হয়েছে তা দিয়ে কোন পানি নিস্কাশন হয় না বরং ড্রেন গুলোতে উপরে ঢাকনা না থাকায় প্রতিনিয়ত বয়স্ক ও শিশুরা ড্রেনে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এগুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। এছারাও হাটের ভিতরের অধিকাংশ ড্রেন মাটি ও নোংড়া আবর্জনায় ভরাট হওয়ার ফলে অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে দুরগন্ধ আর মশা উৎপাদরে কারখানায় পরিনত হয়েছে। হাটের উন্নয়নে এলজিএসপি থেকে প্রকল্প নিয়ে অনেক টাকা ব্যায় করা হয়েছে কিন্তু তার সুফল ক্রেতা বিক্রেতারা পায়নি। লাভ হয়েছে শুধু প্রকল্প চেয়ারম্যান গনের। হাটে আসা একজন ক্রেতা হানিফ মিয়া জানান এই হাট থেকে সরকারের সর্বচ্চ রাজস্ব আয় হয় অথচ হাটটির উন্নয়নে পরিকল্পিত কোন পরিকল্পনা নেই।

একেকবার একেক রকম করে কাজ করায় হাটের প্রকৃত চেহারাই নষ্ট করে ফেলেছে। হাটের ভিতরে আগে গাছ ছিল যে গাছ গুলোর নিচে মানুষ ক্লান্তি নিবারন করত এখন সেই গাছ গুলোও আর নাই। অপর দিকে পানি নিস্কাশনের ড্রেন গুলোর নিম্ন মানের কাজ করায় এবং ঢাকনা না থাকায় মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। হাটের দোকানদার আঃ হালিম জানান ড্রেনগুলোতে নোংড়া আবর্জনা ও মাটি দিয়ে ভরাট হওয়ায় পানি নিস্কাশন হয়না। হোটেল ব্যবসায়ী আঃ কাদের জানান কর্তৃপক্ষ ড্রেন তৈরী করেছেন ঠিকই কিন্তু পানি কোথায় পড়বে তার ব্যবস্থা না করায় যেখানে ড্রেন শেষ হয়েছে সে খানে ড্রেনের মুখ বন্ধ করেদিয়েছে। আবার কিছু ড্রেন ভেঙ্গেগেছে, কিছু মাটি দ্বারা ভর্তি হয়েছে আবার অনেক ড্রেনের উপর দোকান তৈরী করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করছে।

কাচামাল ব্যবসায়ী শফিকুল ও আজিজল জানায় আগে হাটের সেডের ভিতর অনেক দোকান বসত এখন এমন করে সেড তৈরী করেছে দোকান বসে কম। হাট করতে আসা আঃ মাজেদ জানান ড্রেনের পানি নিস্কাশন না হওয়ায় পচা দূগন্ধে মানুষ বমি করে ফেলে। এর ফলে মানুষের পেটের পিরা সহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। আলআমিন জানান হাট সংস্কারের নামে অনেকের দোকান ভেঙ্গে দিয়ে তাদের রুটি রুজির পথ বন্ধ করেদিয়েছে।

কিন্তু তাদের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী জানান হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কমিটির সাথে আলোচনা করেই প্রকল্প গ্রহন করা হয়ে থাকে। হাট বাজার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব ইজারাদারের। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ উলফৎ আরা বেগম জানান বিষয়টি আমি দেখেছি। পরবর্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এলাকাবাসী জানান এভাবে চলতে থাকলে একসময় এই হাট তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলবে সেই সাথে সরকারের রাজস্ব কমে যাবে। ড্রেন সংস্কার ও পানি নিস্কাশণের ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসীসহ হাটের ক্রেতা বিক্রেতাগণ। 

 

 

উপরে