রংপুরে বহিরাগত প্রার্থী ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন আসিফ শাহরিয়ার

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শুন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনে উপ-নির্বাচনকে ঘিরে জটিল সমীকরণের সম্মুখীন জাতীয় পার্টি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে দলটির প্রার্থী চূড়ান্তকরণ নিয়ে ঘরে বাইবে চলছে নানা আলোচনা। আর এই আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে রওশান এরশাদপুত্র রাহগীর আল মাহি সাদ।রংপুরে এরশাদের এই আসনে স্থাানীয় জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে বাদ দিয়ে সাদ এরশাদকে মনোনয়ন দেয়ার ইঙ্গিতে ফুঁসে উঠেছেন এরশাদ পরিবারের একাংশ।
বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল জাতীয় পার্টিও। বহিরাগত প্রার্থী ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী এরশাদের ভাতিজা সাবেক এমপি হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুরের সেনপাড়াস্থা লাঙল ভবন থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ করেছে সাদ এরশাদ বিরোধি আসিফ শাহরিয়ারের কর্মী সমর্থকরা। মিছিলটি নিয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাব চত্বরে গিয়ে সমাবেশ করেন। এতে সাদ এরশাদকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আসিফের কর্মী-সমর্থকরা। সমাবেশে এরশাদের ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ার বলেন, সাদ আমার ভাই। কিন্তু ওকে কেউ চিনে না। ওর কোনো পরিচিতি নেই। মানুষ ওকে অন্য চোখে দেখে। অনেকেই দাবি করেছেন সাদ এরশাদপুত্র নয়। তাই আমি চাইব এমন প্রার্থী রংপুরে না দেয়াই ভালো।
এসময় তিনি বলেন, মানুষের মুখরোচক গল্প বন্ধ করতে সাদের ডিএনএ টেস্টের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। নইলে সাদকে নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি আরো বাড়বে। এদিকে গতকাল সোমবার রাতে রংপুর সদর উপজেলার পালিচড়া হাটে ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি মতিন মিয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রায়হানুর রহমান রায়হানের এর নেতৃত্বে সাদ এরশাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে আসিফ শাহরিয়ারের কর্মী সমর্থকরা। এ সময় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে । অন্যদিকে একই দিনে রাতে পাগলাপীর বন্দরেও সাদ এরশাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন বিক্ষুদ্ধ নেতা-কর্মীরা।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে স্থাানীয় প্রার্থী ব্যতিত বহিরাগত প্রার্থীকে দল মনোনয়ন দিলে তার পক্ষে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির নির্বাচনে মাঠে থাকবে না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি বলেন, ‘এখন আর আগের দিন নেই। যে কাউকে ধরে এনে হাত তুলে দিলে রংপুরবাসী তাকে ভোট দিবে। জনসম্পৃক্ততা আছে, সাধারণ মানুষ যাকে চিনেন, সবার কাছে আস্থাাভাজন এমন স্থাানীয় প্রার্থী ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে পার্টির জন্য ক্ষতি হবে। দলের তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা মাঠে থাকবে না। যারা বহিরাগতকে মনোনীত করবে, তাদেরকেই রংপুরে এসে তার পক্ষে ভোট করতে হবে। ’ ১৪ জুলাই এরশাদের মৃত্যুত আসনটি শূন্য ঘোষিত হয়।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৫ অক্টোবর ভোটগ্রহণ হবে। মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর। যাচাই-বাছাই ১১ সেপ্টেম্বর, প্রার্থীতা প্রত্যাহার ১৬ সেপ্টেম্বর। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৫ অক্টোবর। রংপুর সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নিয়ে গঠিত এ আসনের মোট ভোটার ৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২১ হাজার ৩১০ জন এবং ২ লাখ ২০ হাজার ৭৬২ জন নারী ভোটার।