প্রকাশিত : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ২২:০৫
ছাতিনগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি এমপিও না হওয়ায়

২৫ বছর ধরে বিনাবেতনে শিক্ষকতা করছেন প্রতিবন্ধী বিউটি

তরিকুল ইসলাম জেন্টু,সান্তাহার (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
২৫ বছর ধরে বিনাবেতনে শিক্ষকতা করছেন প্রতিবন্ধী বিউটি

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিনগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের শিক্ষিকা প্রতিবন্ধী কোহিনুর আখতার বিউটি। তার চাকরি এমপিও ভুক্ত (মানথ্লি পেমেন্ট অর্ডার) না হওয়ায় দির্ঘ্য ২৫ বছর যাবৎ বিনা বেতনে শিক্ষকতা করে আসছেন। ফলে তিনি মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। জানাযায়, বিউটি ছাতিয়ানগ্রামের স্টেশনপাড়ার মৃত: মোতাহার হোসেনের মেয়ে। তিনি ৪ ভাই বোনের মধ্যে বড়।

প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মানো বিউটির দুটি পায়ের হাটু নড়াচড়া করতে না পারায় (ফিক্সড হওয়ায়) লাঠিতে ভর করে হেলেদুলে চলতে হয়। শারিরিক ভাবে প্রতিবন্ধী হলেও তার অদম্য মেধা শক্তি দিয়ে ১৯৮৬ সালে এসএসসি, ১৯৮৯ সালে এইচএসসি ও ১৯৯৪ সালে ডিগ্রী পাশ করেন। এরপর কোথাও চাকরির চেষ্টা না করে তার মামা আলহাজ¦ লুৎফর রহমান সরকারের দানকৃত জমিতে প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয়ে ১৯৯৫ সালে জীববিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে এমপিওর আশায় বিনা বেতনে পাঠদান করে যাচ্ছেন। ২০০২ সালে প্রাথমকি ভাবে বিদ্যালয়টি ৮ম শ্রেনি পর্যন্ত এমপিওভুক্ত করা হলে ৬জন শিক্ষক ও ৩জন কর্মচারী বেতনভাতাদী পেয়ে থাকেন। কিন্ত নবম ও দশম শ্রেণীতে এমপিও না হওয়ায় বেতন জোটেনি বিউটির ভাগ্যে।

শুধু তাই নয় নবম ও দশম শ্রেণীতে এমপিও না হওয়ার কারনে বিউটিসহ ৩জন শিক্ষক ও ১জন নৈশ্য প্রহরী দির্ঘ্য প্রায় ২৫ বছর যাবৎ বিনা বেতনে চাকরি করে আসছেন। ফলে তারাও পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অথচ বিনা বেতনে চাকরি করলেও তাদের প্রচেষ্টায় ২০১৯ইং সালের এসএসসি পরিক্ষায় ২৯ জন অংশ গ্রহনকারি পরিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৫জন সাফল্যের সাথে উত্তির্ণ হয়েছে।

প্রতিবন্ধী শিক্ষিকা কোহিনুর আখতার বিউটি আক্ষেপ করে বলেন, দির্ঘ্য ২৫ বছর যাবৎ বিনা বেতনে পাঠদান করে আসছি আর কতোদিন বিনা বেতনে পাঠদান করাতে হবে তা আমার জানা নেই। তবে প্রতিবছর এসএসসির ফলাফল অত্যান্ত ভালো হওয়া সত্বেও কেন নবম-দশম শ্রেণীতে এমপিও হলো না এটা ভাবতে অবাক লাগে। 
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ছাতিয়ানগ্রামে নারী শিক্ষার একমাত্র বিদ্যাপিঠটিতে ২৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ৭ কক্ষ বিশিষ্ট বিদ্যালয়টিতে ৩ কক্ষ আধা পাকা ও ৪ কক্ষ কাঁচা রয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুম এলে এসব কক্ষে টিনের চালা দিয়ে পানি চুইয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে এতে ক্লাস নেয়া বিঘ্ন ঘটে। 

উপজেলা ম্যাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাবুবুল হোসেন জানান, বিদ্যালয়ে ভবন নির্মানের জন্য টেন্ডার হয়েছে। শীঘ্রয় বিদ্যালয়ের ভবন নির্মান কাজ শুরু হবে। এছাড়া নবম-দশম শ্রেণীতে এমপিও করার জন্য আবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় অচিরেই বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হবে।

 

উপরে