প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর, ২০১৯ ২১:৫৯

বগুড়ার গাবতলীতে ঘুষ নেওয়ার সময় ভূমি কর্মকর্তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে দুদক

ষ্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ার গাবতলীতে ঘুষ নেওয়ার সময় ভূমি 
কর্মকর্তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে দুদক

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার নাড়ুয়ামালা ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের এক কর্মকর্তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে প্রায় তিন ঘণ্টার অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালায় বগুড়ার কর্মকর্তারা।গ্রেপ্তারকৃত ওই ভূমি কর্মকর্তার নাম আবদুল হান্নান। তিনি নাড়ুয়ামালা ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে সহকারি ভূমি কর্মকর্তা। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়ার উপ-পরিচালক মো: মনিরুজ্জামানের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় এবং সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযানে দুদকের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী এবং ওয়াহেদ মঞ্জুর সোহাগ। 

অভিযানে থাকা দুদক কর্মকর্তারা জানান, গত বুধবার গাবতলী উপজেলার নাড়ুয়ামালা ইউনিয়নের জয়ভোগা গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান তাঁর নামীয় ১৬ শতক কৃষি জমির খাজনা দিতে যান। খাজনা দিতে নাড়ুয়ামালা ভূমি কার্যালয়ে গেলে মতিউর রহমাকে বলা হয়, জমির খাজনা ১৪৩ টাকা। পরে এই টাকা জমা দিয়ে তিনি খাজনা দিতে চান। কিন্তু ওই ভূমি কার্যালয়ের কর্মকর্তা আবদুল হান্নান জানান, শুধু ১৪৩ টাকা দিয়ে খাজনা পরিশোধ করা যাবে না অতিরিক্ত আরো ১৩ হাজার টাকা দিতে হবে।

অনেক অনুরোধের পরও হান্নান তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিল যার দরুণ সেদিন খাজনা না দিয়ে মতিউর রহমান ফিরে যান। পরে তিনি বিষয়টি বিস্তারিত উল্লেখ করে গত বৃহস্পতিবার বগুড়া দুদক কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন যার প্রেক্ষিতে দুদক কর্মকর্তারা হান্নানকে ধরার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করেন। পূর্ব পরিকল্পনা মতে, গতকাল রোববার দুপুরে ওই জমির খাজনা দিতে যান মতিউর রহমান। তখন আবদুল হান্নান তাঁর কাছে অতিরিক্ত ১৩ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা দিতে চান মতিউর রহমান। এ সময় আবদুল হান্নান ১৪৩ টাকার খাজনা পরিশোধের একটি চেক ধরিয়ে দেন। অতিরিক্ত ১৩ হাজার টাকা দেওয়ার আগে থেকে দুদক কর্মকর্তা ভূমি কার্যালয়ের আশপাশে অবস্থান করছিলেন। এই টাকা ঘুষ গ্রহণের সময় আবদুল হান্নানকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন দুদক বগুড়ার কর্মকর্তারা।

বগুড়া দুদকের সহকারি পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত আবদুল হান্নানের বিরুদ্ধে দুদক কার্যালয়ের দন্ডবিধি ১৬১ ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় ইতিমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়ার উপ-পরিচালক মো: মনিরুজ্জামান এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান চলমান আছে এবং থাকবে। দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ ও দশের ক্ষতি যারা করছে আজ হোক বা কাল কেউ ছাড় পাবেনা মর্মে হুশিয়ারি দিয়ে তিনি দুর্নীতিবাজদের সময় থাকতে সৎ পথে ফিরে আসার আহবান জানান।

উপরে