প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০১:০২

বগুড়ায় ঘুষের টাকাসহ আনসার কর্মকর্তা দুদকের হাতে গ্রেফতার

ষ্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ায় ঘুষের টাকাসহ আনসার কর্মকর্তা দুদকের হাতে গ্রেফতার

বগুড়ার সদর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা আনিছুর রহমানকে ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে দুদক। রবিবার বিকেলে শহরের মালতিনগর জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় থেকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ফাঁদ পেতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়ার উপ-পরিচালক মো: মনিরুজ্জামান এর দিক-নির্দেশনায় অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে আনসার ও ভিডিপির বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ছিল।

এই অনুষ্ঠানে ওই কার্যালয়ের ১২ জন ওয়ার্ড লিডার উপস্থিত ছিলেন না। এ কারণে সদর উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা তাঁদেরকে কৈফিয়ত তলব (শো-কস) করেন। এরপর আনিসুর রহমান ওই ১২ জনকে বলেন, ‘তোমারা অনুষ্ঠানে না থাকার কারণে চাকরি নিয়ে সমস্যা হবে তাই চাকরি রক্ষা করতে হলে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে আমাকে দিতে হবে।’ এরপর ওই ১২ জনের সঙ্গে আনিছুর রহমানের দরকষাকষি হয়। এক পর্যায়ে ওই ১২ জনের কাছে ১০ হাজার টাকা করে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন আনিছুর রহমান। এর মধ্যে গত ২২ অক্টোবর ওই ১২ জনকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে ১০ হাজার করে টাকা না দিলে কারও চাকরি থাকবে না মর্মে হুমকিও দেন আনিছুর রহমান।

এর মধ্যে ওয়ার্ড লিডার শাকিল আল মামুন বগুড়া সমন্বিত দুদক কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ করেন যার ভিত্তিতে দুদক কর্মকর্তারা আনিছুরকে গ্রেফতারের ফাঁদ তৈরি করেন। পূর্ব পরিকল্পনা মতে, রোববার বিকেলে শাকিলসহ আরেকজন ঘুষের টাকা দিতে যান। এ সময় দুদকের ওই দলটি উপজেলা আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের আশপাশেই অবস্থান করছিল। পরে দুদকের কর্মকর্তাদের দেখে আনিছুর রহমান দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন । এ সময় তাকে তাঁকে ঘুষের ২০ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁর ড্রয়ার তল্লাশি করে আরও ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। দুদক বগুড়ার কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম আরো জানান, আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদক কার্যালয়ে দন্ডবিধির ১৬১ ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। সোমবার আইন অনুযায়ী তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

অভিযানে দুদক বগুড়া কার্যালয়ের পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ সহকারি পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী এবং ওয়াহেদ মঞ্জুর সোহাগ, সহকারি পরিদর্শক মাহবুবর রহমান প্রমুখ। যোগদানের পর থেকে বগুড়ায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স মনোভাবে কাজ করে যাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়ার উপ-পরিচালক মো: মনিরুজ্জামান জানান, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই অভিযান চলমান থাকবে। সময় থাকতে দুর্নীতি ছেড়ে সৎ পথে ফিরে আসতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের হুশিয়ারী দেন তিনি নইলে যেকোন মূহুর্তে দুর্নীতির আস্তানা শক্ত হাতে গুড়িয়ে দেয়া হবে মর্মে জানান তিনি। সেই সাথে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেকোন তথ্য প্রদানে সাধারণ জনগণকে দুদকের পক্ষে সচেতন হওয়ার আহব্বান জানান এই কর্মকর্তা।

উপরে