প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর, ২০১৯ ২১:৫০

বগুড়ায় গত ৯ বছরে উৎপাদন বাড়লেও দাম কমছে না পিঁয়াজের

এইচ আলিম
বগুড়ায় গত ৯ বছরে উৎপাদন
বাড়লেও দাম কমছে না পিঁয়াজের

পিঁয়াজের ঝাঁঝ লেগেছে ভোক্তার চোখে। তাই খোলা বাজারে পিঁয়াজের দাম শুনলেই চোখ বড় হয়ে যাচ্ছে। চোখ বড় হলেও দাম কমছে না পিঁয়াজের। পাইকারি থেকে খোলা বাজারে পিঁয়াজের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। অথচ বগুড়ায় পিঁয়াজের উৎপাদন বাড়লেও দাম কমছে না। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন গত ৯ বছরে বগুড়ায় পর্যায়ক্রমে চাষ ও উৎপাদন বেড়েছে পিঁয়াজের। পিঁয়াজের উৎপাদন বাড়লেও দাম না কমায় হতাশ ক্রেতারা।

জানা যায়, বগুড়া জেলায় প্রতিবছর পিঁয়াজের চাষাবাদ হয়ে থাকে। কাঁচা মরিচের মত মসলা জাতীয় পিঁয়াজ চাষেও বগুড়ার চাষীরা এক ধাপ এগিয়ে। কৃষিপণ্য উৎপাদনে বগুড়ার মাটি আদর্শ বলে সব ধরনের সবজির ফলন ফলে থাকে। সবজির সাথে আদা-পিঁয়াজের চাষও ভাল হয়ে থাকে। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলায় গত ২০১১ সালে স্থানীয়ভাবে পিঁয়াজ চাষ ধরা হয় ২ হাজার ৯৬৮ হেক্টর জমিতে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ৭১২ মেট্রিক টন। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ মৌসুম পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে পিঁয়াজ চাষ হয় এই দুই বছরে গড়ে ৩০ হাজার মেট্রিক টন করে ফলন পাওয়া যায়। পিঁয়াজ চাষ লাভজনক হওয়ায় চাষিদের মাঝে আগ্রহ বেড়ে গেলে চাষের জমিও কিছু বেড়ে যায়। ২০১৬-১৭ মৌসুমে পিঁয়াজ চাষ হয় ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর।

এর বিপরীতে ফলন হয়েছে ৩৪ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন। ২০১৭-১৮ মৌসুমে পিঁয়াজ চাষ হয় ৩ হাজার ৪০০ হেক্টর। এর বিপরীতে ফলন হয়েছে ৩৪ হাজার ১০০ মেট্রিক টন। ২০১৮-১৯ মৌসুমে পিঁয়াজ চাষ হয় ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর। এর বিপরীতে ফলন হয়েছে ৩৯ হাজার ৯০৫ মেট্রিক টন। চলতি বছর প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর। এর বিপরীতে ফলন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ছে ৩২ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ফলনের সময় মাঠ পর্যায়ে গেলে পিঁয়াজের উৎপাদন বাড়বে। মৌসুম শেষে ফলন দঁাঁড়াবে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন। কৃষি অফিস আরো বলছে, বন্যা ও খড়া বাদ দিয়ে গত কয়েক বছরে বগুড়ায় পিঁয়াজের আবাদ বেড়েছে। ২০১৭-১৮ মৌসুমে বন্যার পানি বগুড়ার সারিকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় দেরীতে নেমে যাওয়ায় পিঁয়াজের ফলন কিছুটা কমে যায়। পরের বছর আবার ভাল ফলন পায় চাষিরা। চলতি বছর অক্টোবর থেকে চাষবাস শুরু হয়েছে। চাষিরা বলছে এবছরও ভাল ফলন পাবে। 

বগুড়া শহরের লাহিড়ীপাড়ার পিঁয়াজ চাষিরা জনান, এক বিঘা জমিতে পিঁয়াজ চাষ করতে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। চাষবাস শেষে হাটে বাজারে পিঁয়াজ বিক্রির পর ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। বগুড়া শহরের কাঁঠালতলা এলাকার পিঁয়াজ ব্যবসায়িরা জানান, দেশীয় পিঁয়াজের পাশাপাশি ভারতীয় কিছু পিঁয়াজ পাওয়া যায়। বিক্রির সময় ক্রেতারা দেশীয় পিঁয়াজই নিয়ে থাকে। বর্তমান বাজারে দেশীয় পিঁয়াজ বাজারে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, বগুড়ায় পিঁয়াজ চাষে উন্নতজাতের বীজ ব্যবহার করায় চাষীরা সাফল্য পেয়েছে। চাষীদের সাথে কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষনিক যোগাযোগ থাকায় পিঁয়াজ উৎপাদনে চাষীরা বেশি আগ্রহী উঠে। এখন মসলা চাষ হিসেবে জেলায় পিঁয়াজের চাষ ও উৎপাদন দুটোয় বেড়েছে। 

উপরে