প্রকাশিত : ৭ নভেম্বর, ২০১৯ ২৩:১০

বাড়ির গলিই যেখানে নিরাপদ নয় সেখানে নিরাপদ সড়ক কিভাবে সম্ভব?

শেরপুরে গলিপথে ১৬ মাসের শিশুর মৃত্যু
শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ
বাড়ির গলিই যেখানে নিরাপদ নয় সেখানে নিরাপদ সড়ক কিভাবে সম্ভব?
ছবিতে বাচ্চাটির মতো একই ভাবে ১৬ মাসের বাচ্চা রুহুল আমীনও গত শুক্রবার (১নভেম্বর) বাবার সাথে জুম্মা নামাজে যাওয়ার আগমুহুর্তে এই গলিপথেই খেলা করার সময় তীর চিহ্নিত আলাল গ্রুপের বাড়ির ভেতর থেকে বেরহয়ে আসা বেপরোয়া প্রাইভেট কার শিশুটির মাথার উপর তুলেদেয় এবং মাথা থেঁতলে গিয়ে ঘটনা স্থলেই শিশু রুহুল আমীনের মর্মান্তিক মৃতু হয়। ছবিটি শিশু রহুল আমীনের মৃত্যুর পর গতকাল বিকালে তোলা।

কুষ্টিয়ায় মহাসড়কে বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়া শিশু আফিফার মৃত্যুর চেয়েও মর্মান্তিক ভাবে শেরপুরে ১৬ মাসের শিশু রুহুল আমীনের মৃত্যু হয়েছে। পার্থক্য শুধু এখানেই যে- কুষ্টিয়ায় দূর্ঘটনার একটি ভিডিও চিত্র বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরায় তোলপার সৃষ্টি হয়েছিল, আর শেরপুরে বেপরোয়া প্রাইভেট কার শিশু রুহুল আমীনের মাথা থেঁতলে দেওয়ার কোনো ভিডিও চিত্র প্রকাশ হয়নি এবং হয়নি কোনো মানববন্ধন।

পার্থক্য শুধু এটুকুই যে- কুষ্টিয়ায় মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটি ঘটেছিল মহাসড়কে একটি বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় আর শেরপুরে দূর্ঘটনাটি ঘটেছে গলিপথে বেপরোয়া একটি প্রাইভেট কারের চাকার নিচে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, বগুড়ার শেরপুরে শাহ্বন্দেগী ইউনিয়নের হামছায়াপুর এলাকায় বিশিষ্ট শিল্পপতি মো: আলালের বাড়ির গলিপথে। গত শুক্রবার (১নভেম্বর) জুম্মা নামাজের যাওয়ার আগমুহুর্তে এই ঘটনাটি ঘটে। বাচ্চাটি সেদিন তার বাবা মো: আবুল কাসেমের সাথে নামাজে যাওয়ার জন্য পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে বাড়ির সামনে ফাঁকা গলিতে খেলা করছিল। ঠিক এমন সময় ঘাতক প্রাইভেটকার আলাল গ্রুপের বাড়ি থেকে হটাৎ বের হয়ে শিশু রুহুল আমীনকে পিষ্ট করে চলে যায়।

এসময় প্রাইভেটকারে শিল্পপতি আলালের ভাই বেলাল ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশিরা। সরেজমিনে জানা গেছে, বগুড়া শেরপুরের শাহ্বন্দেগী ইউনিয়নে হামছায়াপুর এলাকার বিশিষ্ট শিল্পপতি মো: আলাল, যার বাড়ির গলিতেই বসবাস দরিদ্র আবুল কাসেমের পরিবার ও তাদের ১৬ মাস বয়সি শিশু রুহুল আমীনের। এই গলিটিতে আরও অনেকগুলো পরিবার বসবাস করে এবং সব-বাচ্চারা খেলাধুলাও করে। কারন গলিটিতে কোনো রিক্সা-ভ্যান সচরাচর চলাচল করার উপযোগী না হওয়ায় বাচ্চাদের খেলাধুলা বা হাটাচলা করার জন্য যথেষ্ট নিরাপদ মনে করা হয়।

এইরকম একটা গলিতে কতটা অমনোযোগী ও বেপরোয়া হলে প্রাইভেটকারের চাকা বাচ্চার পুরো শরিরের উপর দিয়ে চালিয়ে দিয়ে মাথা থেঁতলে দিতে পারে। প্রতিবেশিরা আরও জানায়, শিশুটি গাড়ির চাকায় পিষ্ট হবার পর ওই শিল্পপতিরা গাড়ি থেকে নেমে নুন্যতম দুঃখ প্রকাশও করেননি। এ ঘটনার স্থান শেরপুর থানা-পুলিশও পরিদর্শন করেছেন বলে বিশ^স্ত সুত্রে জানা গেছে। শিশু রুহুল আমীন মৃত্যুর ঘটনাটি বেগতিক বুঝতে পেরে ওই শিল্পপতি পরিবার রাতারাতি ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে ঘটনাটি আপোস করেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে আলাল গ্রুপের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আলাল আহম্মেদের সাথে ০১৭১১-৪১১১০৩ নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: বুলবুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই দিন নিহত শিশুটির পরিবার থানায় মামলা করতে অস্বীকৃতি জানালে হাসপাতাল থেকে সুরতহাল রিপোর্টের পর লাশ নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

 

উপরে