ওষুধ ছিটিয়েও কাজ হচ্ছে না !
নওগাঁর রাণীনগরে চলতি মৌসুমে আমন ধানে ব্যাপক হারে ব্লাস্ট রোগের আক্রমনে শত শত হেক্টর জমির ধানের শীষ মরে যাচ্ছে । বিভিন্ন কোম্পানীর ওষুধ ছিটিয়েও কোন কাজ না হওয়ায় দিশে হারা হয়ে পরেছেন কৃষকরা । ফলে চলতি মৌসুমে ফলন বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। রাণীনগর উপজেলা কৃষি দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান রোপন করা হয়েছে। উপজেলার নিন্ম এলাকায় বন্যার পানি দীর্ঘ দিন ধরে জলাবদ্ধতা থাকায় প্রাথমিকভাবে যদিও কৃষ্ িদপ্তর সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করেছিলেন।
তার পরেও পানি নেমে যাওয়ায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত ধান রোপন বেড়েছে। এসব জমিতে আতব জাতের ধানই বেশি রোপন করা হয়েছে। আবাদের শুরুতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় তেমন রোগ বালায় দেখা না দিলেও ধানের শীষ বের হওয়ার সাথে সাথে শীষের গোড়া থেকে কালো হয়ে মরে ধানের শীষ মরে যাচ্ছে । উপজেলা জুরে শত শত হেক্টর জমিতে এরোগ আক্রমন করায় ধানের শীষ মরা রোধ করতে বিভিন্ন কোম্পানীর ওষুধ ছিটিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না । দিন দিন ধানের শীষ আরো বেশি মরে যাচ্ছে।উপজেলার মালশন,বলিদাগাছী,গিরিগ্রাম, আকনা,বাঁশবাড়িয়া ঝিনা,সিম্বা,রণসিংগার পাড়া,খট্রেশ্বর পশ্চিম মাঠ,করজগ্রাম,কালীগ্রাম,জলকৈ,,নারায়ন পাড়া,শরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় শত শত হেক্টর জমির ধানের শীষ মরে যাচ্ছে । ফলে চলতি মৌসুমে ধানের ফলন বির্যয় হতে পারে বলে আশংকা করছেন কৃষকরা ।রাণীনগর খট্রেশ্বর পশ্চিম পাড়া গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী জানান, তিনি এবার ৬বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছেন ।
এর মধ্যে তিন বিঘা কাটারি ভোগের ধানে ব্লাস্ট রোগে আক্রমন করেছে । অনেক ওষুধ ছিটিয়েও কোন লাভ হচ্ছেনা।শরিয়া গ্রামের কৃষক এমরান হোসেন জানান তার চার বিঘা জমির ধানই ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে যাচ্ছে । নারায়ন পাড়া গ্রামের কৃষক মোসারফ হোসেন জানান, তিনি প্রায় ১৪ বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছেন । এর মধ্যে প্রায় ৬ বিঘা জমির ধান রোগে আক্রান্ত হয়েছে । মরু পাড়া গ্রামের কৃষক সোলাইমান আলী জানান, তিনি প্রায় ১৯বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান রোপন করেছেন। এর মধ্যে প্রায় ৫/৬ বিঘা আতব ধানে ব্লাস্ট রোগে আক্রমন করেছে । তিনবার ওষুধ ছিটিয়েও কোন কাজ হয়নি ।
ইতি মধ্যে আক্রান্ত এসব জমির প্রায় ৪০-৪৫% ধানের শীষ মরে গেছে । এছাড়া সিলমাদার,করজগ্রাম,মালসনসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান,গত ইরি/বোরো মৌসুমে ধানের ফলন ভাল হলেও বাজারে দরপতনের কারনে বিঘাপ্রতি ৩/৪ হাজার টাকা করে লোকসান হয়েছে। এখনো বাজারে সন্তোষজনক দাম নেই। এর উপর আবার ব্লাস্টসহ বিভিন্ন রোগ বালায় ঝেঁকে বসেছে । ফলে ধানের ফলন নিয়ে চরম সংকায় রয়েছেন তারা । এক্ষেত্রে আবারো ধান আবাদে লোকসান হতে পারে বলে আশংকা করছেন কৃষকরা। এব্যপারে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন,আবহাওয়াজনিত কারনে কিছু কিছু জমিতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে,তবে এক্ষেত্রে ক্ষতির কোন সম্ভবনা নেই ।