প্রকাশিত : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ২৩:৫৪

বগুড়ার শিল্পকলা শিশু কিশোর তরুণদের মাঝে সংস্কৃতির চেতনা ছড়িয়ে দিচ্ছে

এইচ আলিম
বগুড়ার শিল্পকলা শিশু কিশোর তরুণদের মাঝে সংস্কৃতির চেতনা ছড়িয়ে দিচ্ছে

বগুড়ার শিল্পকলা একাডেমী শিশু, কিশোর ও তরুণদের মাঝে সংস্কৃতির চেতনা ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের এই প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর দুশোর বেশি শিক্ষার্থী সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় শিক্ষা গ্রহণ করছে। সাংস্কৃতিক শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি অসহায় ও দুঃস্থ সাংস্কৃতিক কর্মীদের এবং অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আর্থিক এককালিন অনুদান প্রদান করছে। বগুড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি সুত্রে জানা যায়, বগুড়া শিল্পকলায় চারুকলা, নাটক, আবৃত্তি, তালযন্ত্র, নৃত্য, সঙ্গিত প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। এর সাথে চলচ্চিত্র সংসদ, ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠিকে আলোতে নিয়ে আসাসহ সর্বিক সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়া, কিশোরদের সংস্কৃতিমুখি করে গড়ে তোলা, জাতীয় দিবস পালন করা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেয়া এবং সাংস্কৃতিক কর্মীদের সংগঠিত করা প্রধান কাজ। জেলা শিল্পকলা একডেমিতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান ছাড়াও মাসিক সংস্কৃতি আড্ডা, মতবিনিময়, সভা, অভিভাবকের সাথেও মতবিনিময় হয়ে থাকে। বগুড়া শিল্পকলা একাডেমিতে এখন রয়েছে প্রায় ৪০০ জন শিক্ষার্থী। প্রতিজন শিক্ষার্থী সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।

৬ বছর বয়সে ১৫০ টাকায় ভর্তি ফি দিয়ে যে কোন শিশু সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় ভর্তি হতে পারে। প্রতি মাসে ফি নিয়ে থাকে ১০০ টাকা করে। জেলা শিল্পকলা একাডেমী থেকে তরুণ ও শিশু কিশোরদের সংস্কৃতিকর শিক্ষা হাতে কলমে দেয়া হলেও রয়েছে কয়েকটি সমস্যা। বগুড়া শিল্পকলায় জনবল এবং অবকাঠামো ঠিক থাকলেও রয়েছে মঞ্চ সমস্যা। প্রায় এক দশক আগে নতুন ভবন গড়ার পর থেকে তেমন কোন সংস্কার করা হয়নি। দিনে দিনে বয়স বাড়ার সাথে সাথে মঞ্চ হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ। প্রশিক্ষক স্থায়ী করণ না করায় অনেক সময় দক্ষ প্রশিক্ষক নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। অস্থায়ী ভিত্তিতে প্রশিক্ষক থাকলেও তাদের নাম মাত্র সম্মানী প্রদান করা হচ্ছে। তবে বগুড়ার শিল্পকলার একাডেমি পরিষদের কমিটিও গঠন হয়নি প্রায় এক দশক। 

বগুড়ার সাংস্কৃতিক কর্মীরা জানান, শিশুদের সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে সংস্কৃতিতে আগ্রহী করে তুলছে। শিশুরা লেখাপড়ার পাশাপাশি সংস্কৃতি চেতনায় বেড়ে উঠছে। শিল্পকলায় স্থায়ী প্রশিক্ষক থাকা জরুরী হয়েছে। অস্থায়ী ভিত্তিতে প্রশিক্ষক থাকলেও প্রদান করা হয় নামমাত্র সম্মানী। বগুড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমী থেকে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ১২৭ জন ব্যক্তি ও ৫০ টি সংগঠনকে সংস্কৃতি চর্চা চালিয়ে যাওয়ার জন্য মোট ৩২ লাখ টাকা প্রদান করেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে অনুদান প্রদান করা হয়েছে ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ও ১৫৪ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিকে। সরকারিভাবে এই অনুদানের পরিমান প্রায় ৩৪ লাখ টাকা।

বগুড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন জানান, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, সংস্কারের বিষয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এই বিষয়গুলো প্রক্রিয়াধীন। খুব দ্রুতই বগুড়ার সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে এই সংস্কার করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এটি সংস্কার করা হলে মঞ্চের কোন সমস্যা থাকবে না। আপাতত বগুড়া শিল্পকলার কোন সমস্যা নেই। আমারা সব কিছুই পর্যায়ক্রমে ঠিক করে নিচ্ছি। শিল্পকলার কাজ হলো সংস্কৃতি চর্চায় আগ্রহী করে তোলা। দেশীয় সংস্কৃতিকে সাধারণ মানুষের মাঝে বেশি বেশি করে পৌঁছে দেয়া। সাংস্কৃতিক কর্মীরা যেন ভাল থাকে সে বিষয়ে কর্মসূচি গ্রহণ করার পাশাপাশি জাতীয় দিবসগুলো যথাযোগ্য পালনে সহযোগিতা করা। 
বগুড়ার শিল্পকলা একাডেমির শিক্ষার্থীরা জানান, শহর থেকে বাহিরে হয়েছে শিল্পকলা একাডেমি। তারপওর সংস্কৃতির বিকাশে তারা সেখানে নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন।

উপরে