প্রকাশিত : ১৪ মার্চ, ২০২০ ০২:৪৮

ধুনটে যমুনায় ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন: হুমকির মুখে তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ

ইমরান হোসেন ইমন, ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি:
ধুনটে যমুনায় ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন: হুমকির মুখে তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ

বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামে ও কাজিপুর উপজেলার ঢেকুরিয়া গ্রামে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নিকটে পাশাপাশি কয়েকটি স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে বর্ষা মৌসুমে যমুনার তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সহ নদী ভাঙনের আশংকা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে প্রকাশ্যে তীর সংরক্ষন প্রকল্পের নিকট থেকে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চললেও নীরব ভূমিকায় রয়েছে প্রশাসন সহ পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড।

জানাগেছে, ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের ভুতবাড়ি-পুকুরিয়া গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন ঠেকাতে ২০১৭ সালে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ২০০ মিটার ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এদিকে গত ১০দিন যাবত পুকুরিয়া গ্রামে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের নিকটে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে পাইপের সাহায্যে পাশ্ববর্তী কাজিপুর উপজেলার ঢেকুরিয়া বাজারে বিক্রির জন্য ফেলা হচ্ছে। সেখান থেকে প্রতি ট্রাক বালু ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে ধুনট ও কাজিপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী দুটি স্থানে পাশাপাশি তিনটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাদে বালু উত্তোলন করায় বর্ষা মৌসুমে যমুনার তীর সংরক্ষন প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ সহ নদী ভাঙনের আশংকা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।   

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সোবাহান, মর্জিনা বেগম ও আবুল হোসেন জানায়, ধুনট উপজেলার শেষ সীমানা পুকুরিয়া গ্রামে ও কাজিপুর উপজেলার শেষ সীমানা ঢেকুরিয়া গ্রামে মিঠু মিয়া, রেজাউল করিম ও আব্দুস সালাম সহ কয়েক ব্যক্তি যমুনার তীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের নিকটে পাশাপাশি তিনটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। বালু উত্তোলনের কারনে ইতিমধ্যেই কয়েকটি স্থানে তীর সংরক্ষন প্রকল্পের সিসি ব্লক ধসে নদীতে বিলীন হয়েছে। তাই তীর সংরক্ষন প্রকল্প রক্ষা না হলে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভাঙনের আশংকা রয়েছে। তাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু বন্ধ করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

তবে বালু ব্যবসায়ী মিঠু মিয়া বলেন, যমুনার চর থেকে বালু নিয়ে এসে তীর সংরক্ষন প্রকল্পের নিকটে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু আনলোড করা হচ্ছে। তাই এতে কোন ক্ষতি হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন। তবে বালু উত্তোলনে প্রশাসনের লিখিত কোন অনুমোদন না থাকলেও স্থানীয়ভাবে ম্যানেজ করেই ব্যবসা করছেন বলে তিনি জানান। এবিষয়ে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী আসাদুল হক বলেন, যমুনার তীর সংরক্ষন প্রকল্পের নিকট ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হলে অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই এবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা বলেন, তীর সংরক্ষন প্রকল্প এলাকা ও বাঁধের নিকট থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হলে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

উপরে