প্রকাশিত : ২১ মার্চ, ২০২০ ০৩:১২
করোনা ভাইরাসের কারনে বিদেশের বাজার বন্ধ হওয়ায়

নওগাঁয় কুঁচিয়া মাছ নিয়ে বিপাকে চাষীরা ॥ লোকসানের আশঙ্কা

বিকাশ চন্দ্র প্রাং, স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁঃ
নওগাঁয় কুঁচিয়া মাছ নিয়ে বিপাকে চাষীরা ॥ লোকসানের আশঙ্কা

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট প্লাবন ভ’মি উপকেন্দ্রের আওতায় বিলুপ্তপ্রায় স্বাদুপানির কুঁচিয়া মাছের চাষ করে আসছে নওগাঁ ও সান্তাহারের আশেপাশের কিছু মাছ চাষীরা। এই কুঁচিয়া মাছ মূলত দেশের কিছু ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিকরা খেলেও এই মাছের প্রধান বাজার হচ্ছে চায়নাসহ বিশ্বের আরো কিছু দেশ। কিন্তু সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারণে এই বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে কুঁচিয়া মাছ চাষীরা। 

সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর পাশে বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট প্লাবন ভ’মি উপকেন্দ্রটি। এই কেন্দ্র থেকে সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে অধিক লাভজনক বিলুপ্তপ্রায় স্বাদুপানির এই কুঁচিয়া মাছ চাষ করে আসছে নওগাঁ ও সান্তাহারের আশেপাশের বেশকিছু মাছ চাষীরা। দেশে এই মাছের বাজার না থাকায় প্রধানত চীন, জাপান, কোরিয়া, থাইলান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই অধিক লাভজনক মাছ রপ্তানি করা হয়। তাই এই মাছে লাভের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। কিন্তু সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে বিদেশের কুঁচিয়া মাছের লাভজনক বাজার। দেশে এই মাছের বাজার ও গ্রাহক না থাকায় এই অঞ্চলে উৎপাদিত সুস্বাদু কুঁচিয়া মাছ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে মাছ চাষীরা। এই করোনা ভাইরাসের কারণে বর্তমানে লাভজনক কুঁচিয়া মাছ চাষীদের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে বিলুপ্তপ্রায় স্বাদুপানির এই কুঁচিয়া মাছ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন অনেক মাছ চাষীরা। অধিকাংশ কুঁচিয়া চাষীরা এই কুঁচিয়া মাছ নিয়ে কি করবেন তার প্রতিকার চাইতে প্রতিদিনই উপকেন্দ্রে এসে ভীড় করছেন। পাইকাররাও আর কুঁচিয়া মাছের আশেপাশে আসছে না।

সান্তাহারের উপর পোঁওতা গ্রামের কুঁচিয়া মাছ চাষী জহুরুল, জাহাঙ্গির, সাবানাসহ অনেকেই বলেন করোনা ভাইরাসের কারণে বর্তমানে এই কুঁচিয়া মাছ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। বিগত সময়ে পাইকাররা এসে পুকুর থেকে এই কুঁচিয়া মাছ নিয়ে যেতো। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে বিদেশের বাজার বন্ধ হওয়ায় পাইকাররা কুঁচিয়া কিনছেন না। তাই মাছ নিয়ে কি করবো আমরা ভেবে পাচ্ছি না।

সান্তাহারের বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপকেন্দ্র প্রধান ড. ডেভিট বিন্টু দাস বলেন বিগত কয়েক বছর যাবত স্থানীয় মৎস্য চাষীদের বিভিন্ন ভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে ও বিভিন্ন উপকরন বিতরন করাসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে এই লাভজনক কুঁচিয়া মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। এই মাছ চাষ করে চাষীরাও অনেক লাভবান হয়েছেন। চাষীদের পাশাপাশি আমরাও এই উপকেন্দ্রে সুস্বাদু বিলুপ্তপ্রায় স্বাদু পানির কুঁচিয়া মাছ বার্ণিজিক ভাবে উৎপাদন করে আসছি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে কুঁচিয়া মাছের বিদেশী বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাষীসহ এই কুঁচিয়া মাছ নিয়ে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি। 

উপরে