পত্নীতলায় সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির অভিযোগ
নওগাঁ পত্নীতলাসহ আশেপাশের উপজেলায় নতুন করোনা ভাইরাস আতংকে ভুগছে মানুষ। আতংকগ্রস্থ মানুষ ভবিষৎতের কথা চিন্তা করে বেশী করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করে ঘরে জমিয়ে রাখছেন। আর এ কারণে বাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে নিত্য পণ্যের দাম। এদিকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ না করায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিজের ইচ্ছেমত অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নওগাঁ জেলায় ইতালি, মালেশিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত ফেরত অনেক প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন। এমন কর্মকান্ডে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশংখ্যায় মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়া, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা, ঘর হতে বাহিরে কম হওয়ার নির্দেশনা এবং গণপরিবহণ বন্ধ হওয়ায় খবরে মানুষের আতংক বাড়িয়ে দেয়। অদুর ভবিষৎতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পেতে সমস্যা হতে পারে এমন আশংকায় মানুষ প্রয়োজনের চেয়ে বেশী পণ্য ক্রয় করতে শুরু করে। আর মানুষের চাহিদার সুযোগকে পুঁজি করে দোকানিরা বাড়িয়ে দেয় পণ্যের দাম।
সরেজমিন শুক্রবার উপজেলার নজিপুর, নতুনহাট, চকনিখীন, মধইল, শিবপুর, গগণপুর বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সবধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৬ থেকে ১০ টাকা, মোটা চাল ৫ থেকে ৮ টাকা, পেঁয়াজ কেজিতে ২৫থেকে ৩০ টাকা, আটা কেজি প্রতি ৩ থেকে ৫টাকা, রসুন কেজি প্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা, মসুর ডাল কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, শুকনা মরিচ কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা, এলাচ কেজি প্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, সয়াবিন তৈল কেজি প্রতি ১০ থেকে ১২টাকা এবং ডিম প্রতি হালি ২টাকা বেশীতে বিক্রয় হচ্ছে।
নজিপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা আতাউর রহমান, আব্দুল গফুরসহ কয়েকজন ক্রেতা জানান, করোনা ভাইরাসে কারণে একটু বেশি করে বাজার করতে এসেছি।এখন দেখি নিত্যপণ্য চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আটা, সোয়াবিন তেল, মসলা, মরিচ, মাংস, ডিমের দাম বাড়ানো হয়েছে। ব্যবসায়ী যা চাচ্ছে তাই দিয়ে বাজার করতে হচ্ছে। নজিপুর সরদার পাড়া মোড়ের দোকানি ফিজু জানান, গত বৃহস্পতিবার তাঁর দোকানে যে বেচাকেনা হয়েছে তা ৮দিনের বেচাকেনার সমান। প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বেশি দামে ক্রয় করা হচ্ছে। তাই বেশীতে বিক্রয় হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
চালের দাম বৃদ্ধি বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আব্দুল গাফফার বলেন, ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। নুতন ধান না ওঠা পর্যন্ত চালের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লিটন সরকার বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বেশি নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা প্রয়োজনে বাজার নিয়ন্ত্রনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব।