প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০২০ ১৮:৫১

কাউনিয়ায় সবজি চাষ করে স্বাবলম্বি নিজদর্পা গ্রামের আঃ জলিল

বাম্পার ফলন
সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
কাউনিয়ায় সবজি চাষ করে স্বাবলম্বি নিজদর্পা গ্রামের আঃ জলিল

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের নিজদর্পা গ্রামের বেকার যুবক আঃ জলিল এর ভাগ্য বদলে গেছে উচ্ছে (ছোট করোলা) সবজি চাষ করে। সে এখন পুরাপুরি স্বাবলম্বী ও সফল একজন সবজি চাষি। সরেজমিনে নিজদর্পা গ্রামে গিয়ে জলেলের সাথে কথাবলে জানাগেছে তার ভাগ্যে বদলের কথা। বেকার থাকায় রাজনীতির সাথে জরিত ছিল, আয়ের কোন উৎস না থাকায় এমনও দিন গেছে স্ত্রী সন্তানদের মুখে দুবেলা দুমুঠো ভাত তুলেদিতে পারি নি। অভাবের সংসার লোকজনের কাছে টাকা ধার চাইতে গেলে কেউ তাকে টাকা ধার দেয়নি। অতি কষ্টে তার জিবন কাটতো। চাউল কিনতে নাপেরে আনেক সময় বাজারের এক কোনে বসে চোখের জল ফেলতো। তার কষ্টের কথা শুনে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এমদাদুল হক তাকে পরামর্শ দেয় বাবার দেয়া যে জমি আছে তাতে সবজি চাষ করতে।

যেই কথা সেই কাজ, প্রথমে ৪ শতক জমিতে ধনিয়া পাতা চাষ করে ৪শত টাকা খরচ করে ৮ হাজার টাকা বিক্রয় করে। এর পর ২০ শতক জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ শুরু করে। রাজনীতিতে সময় না দিয়ে সেই জমিতে সময় দিতে শুরু করে। ভাবতে থাকে কিভাবে সবজি চাষ আরো ভাল করা যায়। তখন সে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আলম এর সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ শুরু করে। তার দেয়া পরামর্শ আনুযায়ী সবজি চাষ করে প্রথম বারেই সে আয় করে ৪০ হাজার টাকা। চলতি মৌসুমে সে ৬৩ শতক জমিতে মায়ের দোয়া বীজ ভান্ডার থেকে মনিয়া লাল তীর বীজ উচ্ছে (ছোট করলা) নিয়ে চাষ করেছে।

তার জমি তৈরী, বীজ, লেবার,্ ঔষধ, নেটসহ খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। জমিতে ইতোমধ্যে ফলন তুলতে শুরু করেছে, ১ম দিন সে ৯২ কেজি ফলন তুলে বিক্রয় করেছে ৫ হাজার ২শ’ চাকা। সে জানায় বর্তমানে জমিতে ফলন যে ভাবে ফল আছে যদি কোন আজাব গজব না হয় হয় তবে এই জমিতে প্রায় ১০০ মন ফলন হবে। সে এবার এই জমি থেকে ১লাখ চাকা আয় হবে বলে আশা করছেন। তার জমির বাম্পার ফলন দেখে ওই গ্রামের অনেকে উচ্ছে চাষ করেছে। জলিল জানায় সে কোন রাসায়নিক সার ও কিটনাশক ব্যবহার করেনা। তার উৎপাদিত ফসল বিষ মুক্ত নিরাপদ। সে জমিতে জৈব সার এবং পোকা দমনে কারেন্ট মরিচের গুরা, তামাকের গুরা, হুইল পাউডার বা সাবানের পানি ব্যবহার করে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে চাষ করে সে এখন একজন সফল সবজি চাষি।

গ্রামের লোক তাকে এখন আর বেকার নেতা বলে না। সে সবজি চাষি হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। তার দেখাদেখি আনেক কৃষক এখন সবজি চাষে ঝুকে পরেছে। আঃ জলিল ইতো মধ্যে আরও ৫০ শতক জমিতে চালকুমড়া,লাউ,তার মাঝে শাক চাষ করেছে। তার সংসারে এখন আর আভাব নেই। সে জানায় ধান চাষের চেয়ে সবজি চাষ আনেক লাভজনক। কাউনিয়ায় সবজি চাষ করে ভাগ্য পরিবর্তনের এক উজ্জল দৃষ্টান্ত আঃ জলিল। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে