প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২০ ২৩:১০

করোনা প্রতিরোধে রিকশাচালকের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

শাহাদাৎ হোসেন,ব্যুরো প্রতিনিধি,জয়পুরহাটঃ
করোনা প্রতিরোধে রিকশাচালকের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

মহামারি করোনাভাইরাস সম্পর্কে সাধারণ মানুষদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে একজন সাধারণ রিকশাচালক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন।শনিবার (২৮ মার্চ) রাতে জয়পুরহাট শহরের পাঁচুর মোড়ে আলমগীর হোসাইন নামে এই রিকশাচালককে দেখা যায়।তিনি তার রিকশায় যাত্রী ওঠানোর আগে যাত্রীর মাস্ক আছে কী-না তা নিশ্চিত হচ্ছেন, তারপর যাত্রীর শরীরে জীবাণু নাশক স্প্রে ছিটিয়ে নিচ্ছেন। এরপরই তিনি রিকশায় যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দ্যেশ্যে রওনা হচ্ছেন।

২২ বছর বয়সি আলমগীর টাকার অভাবে বেশিদূর লেখা পড়া করতে পারেননি। ছোটবেলা থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি পৌর শহরের ভেটি এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।আমতলী থেকে শহরের পাঁচুর মোড়ে আসা কাজী আরিফুর রহমান ছোটন নামে এক যাত্রী জানান, আমতলী থেকে রিকশায় ওঠার আগে আগে সে জিজ্ঞেস করেন, মাস্ক আছে কী-না? মুখে মাস্ক থাকলে নিয়ে যাবেন বলে জানান। মাস্ক মুখে দেওয়ার পর তার শরীরে জীবাণুনাশক স্প্রে দেন আলমগীর। এরপর তাকে পাঁচুর মোড়ে পৌঁছে দেন। এরজন্য তিনি আলাদা কোনো অর্থ নেননি।
 
এ বিষয়ে আলমগীর বলেন, ‘বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের খবরে দেখেছি করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের মানুষও হুমকির মুখে রয়েছে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনা মোকাবেলায় আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তাই, এক সপ্তাহ থেকে নিজ খরচে যাত্রীদের শরীরে জীবাণুনাশক স্প্রে দেওয়া শুরু করি। আমি মনে করি, সবাই সচেতন হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমরা দ্রুতই করোনাভাইরাস থেকে পরিত্রাণ পাবো।’
 
জয়পুরহাট শহরের আউশগাড়া নিবাসী পাঁচবিবি মহিলা কলেজের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর ফরিদা ইয়াসমিন এ বিষয়ে জানান, রেলগেটে আলমগীর হোসেনের কর্মকান্ড লক্ষ্য করি। তিনি একজন সাধারণ রিকশাচালক। লেখাপড়াও বেশি দূর করেননি। কিন্তু তিনি যা করছেন তা সমাজের অনেক শিক্ষিত মানুষও করেন না। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তার এমন কর্মকান্ড সত্যিই প্রসংসার দাবি রাখে। তার মতো সকলে করোনা প্রতিরোধে এগিয়ে আসলে সত্যিই খুব দ্রুত এই ভয়কে জয় করা সম্ভব হবে।
 
এ বিষয়ে জয়পুরহাট সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম আজম বলেন, ‘একজন রিকশাচালক করোনাভাইরাসের সংক্রামণ ঝুঁকি এড়াতে নিজ খরচে যাত্রীদের শরীরে স্প্রে দিচ্ছেন-এটা একটি মহৎ কাজ। এই সকল ভালো কাজে সহযোগিতার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই। আলমগীর হোসাইনের মতো সমাজের প্রতিটি মানুষ এভাবেই এগিয়ে আসলে সমাজটা সহজেই সুন্দর হবে।’
 
 দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে