প্রকাশিত : ২ এপ্রিল, ২০২০ ০৫:৫২

বগুড়ায় শ্বাসকষ্টে ভর্তি শিশুর মৃত্যু

করোনা সন্দেহে ৪ রুগির নমুনা রাজশাহীতে
ষ্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ায় শ্বাসকষ্টে ভর্তি শিশুর মৃত্যু

আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে গড়ে তোলা বগুড়ার মোহাম্মদ আলী বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তিকৃত ৫ জন রুগির মধ্যে এক শিশু মারা গেছে। বুধবার বিকালে ভর্তি হয়ে সন্ধ্যা ৭টায় সে মারা যায়। বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান গ্রামের ওই শিশুটি খুবই অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরপর চিকিৎসাকালেই তার মৃত্যু হলো। এদিকে করোনা সন্দেহে বগুড়ার আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে এক নারী সহ ৪ জন। এই চারজনেরই নমুনা রাজশাহী প্রেরণ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তাদের রিপোর্ট পাওয়া যাবে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছে। 

বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, বিকেলে গাবতলীর মহিষাবান থেকে ১৩ বছরের শিশুটি খুব খারাপ অবস্থায় ভর্তি হয়। সন্ধ্যা ৭ টায় সে মারা গেছে। শিশুটি ৭ দিন যাবত দুই পায়ে ব্যথা, তিনদিন  যাবত জ্বর ছিল। বুধবার সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট ছিল তার। ভর্তিকৃত সকল রোগীর নমুনা পরীক্ষার জন্য বুধবার সংগ্রহ করে নিজস্ব পরিবহন যোগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ফলাফল পাওয়া যাবে। এছাড়া শিশুটি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা জানতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য রাজশাহী পাাঠানো হবে। এরপর জানা যাবে সে করোনা আক্রান্ত ছিল কিনা। এখনই কোন কিছু বলা যাচ্ছে না।  এছাড়া বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকা থেকে ভর্তিকৃত নারী তিনদিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হন। এরপর তার কাশি, পাতলা পায়খানা এং শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়। পরবর্তী সময়ে ওই নারী মঙ্গলবার টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে তাকে বুধবার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। যতদূর জানা গেছে সে কোন বিদেশ ফেরত এর সংস্পর্শে যাননি। 

বগুড়ার চিকিৎসকরা বলছেন তারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নয়। তবে সঠিক চিকিৎসা প্রদানে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যাবে বৃহস্পতিবার। বর্তমানে এই হাসপাতালে একজন শিশুসহ ৫ জন সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের রুগি ভর্তি রয়েছে। মারা যাওয়া শিশুটির নিউমেনিয়া রয়েছে। এর আগে গত ২৯ মার্চ দুপুরে দুইজন ভর্তি হন এই আইসোলেশন ইউনিটে। তাদের একজন কুমিল্লাহ থেকে বগুড়ার কাহালু উপজেলায় এসে ২৬ বছরের যুবক শ^াসকষ্ট জনিত কারণে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তাকে স্থানীয়রা দ্রুত এই ইউনিটে নিয়ে এসে ভর্তি করিয়ে দেয়। চিকিৎসা পেয়ে সে এখন পর্যন্ত সুস্থ রয়েছে। একই দিনে বগুড়ার ধুনট উপজেলার এক ব্যাক্তি (৪৫) সর্দি, জ¦র ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন। সেও চিকিৎসায় বেশ সেরে উঠেছেন।

সর্বশেষ পুলিশ সদস্যরা ৩০ মার্চ বগুড়ার মোকামতলা থেকে ৪৫ বছর বয়সী এক শ্রমজীবীকে উদ্ধার করে প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তার হৃদরোগের সমস্যার সাথে জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট থাকায় তাকে আইসোলেশন ভর্তি করানো হয়। ওই ব্যক্তি শনিবার রাতে ঢাকা থেকে রংপুর যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বগুড়ার সিভিল সার্জন ডাক্তার গওসুল আযিম চৌধুরী জানান, ১৩ বছরের মারা যাওয়া শিশুটির মধ্যে নিউমোনিয়ার লক্ষণ ছিল। কিন্তু শিশুটি অত্যান্ত অসুস্থ্য ছিল। তার নমুনাও পরীক্ষা করা হবে। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে