প্রকাশিত : ৭ এপ্রিল, ২০২০ ১৫:১২

ক্ষেতলালে সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা মানা হচ্ছেনা

অবাধে খোলা বাজার, যানবাহন চলাচল অব্যাহত করোনাভাইরাস ছড়ানোর শঙ্কা বাড়ছে
ক্ষেতলাল(জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ
ক্ষেতলালে সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা মানা হচ্ছেনা

ক্ষেতলালে সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা মানা হচ্ছেনা  অবাধে খোলা বাজার, যানবাহন চলাচল অব্যাহত যত্রতত্র গণজমায়েত এসবের কারনে করোনাভাইরাস ছড়ানোর শঙ্কা বাড়ছে। নিরুপায় খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত ছুটির টানা দশদিন পার। ঘরে থাকার নিদের্শনা থাকলেও নিরুপায় হয়ে আজই রাস্তায় ইজিবাইক চালাতে এসেছেন উপজেলার বেলগাড়ী গ্রামের পঞ্চাশউধ আব্দুল হোসেন। মুখে মাস্ক নেই, হাতে নেই গ্লোভস, এছাড়াও নেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা। 

আব্দুল হোসেন জানাচ্ছেন, চার সদস্যের সংসারে সবার খাবার যোগান দিতে প্রতিদিন প্রায় দুইশত টাকার প্রয়োজন হয়। দশদিন ঘরে থেকে অনেকের সাথে যোগাযোগ করে পরিবারে সদস্যদের জন্য খাবার যোগাড় করতে না পেরেই আজ ঘরের বাইরে বের হয়েছেন। তিনি বলেন, জানি করোনা ঝুঁকি আছে, কিন্তু কী করবো ? মাস্ক আছে, কিন্তু পেসিঞ্জারের সাথে কথা বলতে হয় তাই সব সময় পরে থাকতে পারিনা। 

এছাড়াও করোনা প্রতিরোধে দেশজুড়ে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে জনস্বার্থে খোলা আছে সাপ্তাহিক বাজার নিত্যপর্ণ্যের দোকান ও ওষুধের ফার্মেসি। তবে পর্যাপ্ত সুরক্ষা উপকরণ ছাড়াই চলছে তাদের কার্যক্রম। ওষুধ বিক্রয়কর্মীরা গ্লোভস ও মাস্ক ব্যবহার করে সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করলেও সবজি ও মাছ-মাংসের বাজারে বিক্রেতাদের  কোন সুরক্ষা উপকরণই নেই। অথচ সারাদিনই বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শে আসছে তারা। সাধারণ ছুটির মাধ্যই প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খোলা থাকছে দোকান গুলো। এছাড়া বাজার ও দোকান এর সাথে আছে ঝুঁকিপূর্ণ টাকা লেনদেন। সংক্রমণ রোধে বিক্রয়কর্মীর পর্যাপ্ত সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহারের কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা যথেষ্ট নয়। মাস্ক থাকলেও তা মুখ থেকে নিচে নামানো। আবার কেউ কেউ গ্লোভস ছাড়াই পন্য ও টাকা লেনদেন করছেন। প্রশাসনের টহল অব্যহত আছে। নেই তাদের জোড়ালো ভূমিকা। নির্বাহী কর্মকর্তার  চলছে ঢিলেঢালা ভ্রাম্যান আদারত পরিচালনা।

উপজেলার হাসপাতাল রোডের ফার্মেসি মালিক রতন মাষ্টার বলেন, মুখে মাস্ক, হাতে গ্লোভসের পাশাপাশি তারা প্রতি দশ মিনিট পরপর জীবানুনাশক দিয়ে দোকানের আশপাশ পরিস্কার রাখছেন। তবে দোকানের সামনে জায়গা না থাকায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারছেন না। তবে পাড়া মহল্লার ফার্মেসি গুলোর অবস্থা আরও ঝুঁকিপূর্ণ। এসবের অধিকাংশ বিক্রয়কর্মীই কোন সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহার করছেন না। মানছেন না নির্দিষ্ট দূরত্বও।

সাপ্তাহিক বাজার গুলোর অবস্থা আরো ঝুঁকিপূর্ণ। সবজী দোকনিরা অনেকেই কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যবসায়ীক কার্যক্রম। ইটাখোলা বাজারের সবজী ব্যবসায়ী সোয়েল মোল্লার কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই। এ বাজারের ব্যবসায়ী পলাশ, সংক্রমণ রোধে তিনি কেবল মাস্ক ব্যবহার করছেন। গ্লোভস ব্যবহার না করার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই গরমে গ্লোভস পরে দীর্ঘ সময় থাকা যায় না। হাত গরম হয়ে ঘামতে শুরু করে এভাবে দীর্ঘ সময় থাকা কঠিন। বাজারের মাছ বিক্রেতার অবস্থা একই কারও কোন সুরক্ষা উপকরণ নেই। টিসিবি’র পন্য বিক্রয়ের লাইনেও নেই কোন সামাজিক দূরত্ব। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে দরিদ্র মানুষ গুলো ত্রান সহায়তা নেওয়ার জন্য লাইনে নেই কোন সামাজিক দূরত্বে বালাই উপছেপড়া  গণজমায়েত।

সুশিল সমাজ এই নিয়ে চিন্তিত,কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন ক্ষেতলাল উপজেলাকে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা রাখার জন্য অবিলম্বে লকডাউন এর আওতায় আনা ও সামাজিকভাবে দূরত্ব মেনে চলার প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা করা  উচিত।ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ আতাউর রহমান বলেন, পর্যাপ্ত সুরক্ষা উপকরণ ছাড়া সবজি,মাছ-মাংসের বাজারে বিক্রেতাদের কার্যক্রম পরিচালনা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ওষুধ বিক্রয়কর্মী  হোক আর সবজি বা মাছ-মাংসের বিক্রেতা হোক, সবারই পরিবার পরিজনসহ সকলকে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া সামাজিকভাবে করোনাভাইরাস ছড়ানো প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে