প্রকাশিত : ৮ এপ্রিল, ২০২০ ১৪:৩৪

দৈনিক চাঁদনী বাজার সংবাদ প্রকাশের পর সেই অসহায় হাছিনা বেওয়ার পাশে সাদুল্লাপুরের কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন

মশিউর রহমান, সাদুল্লাপুর প্রতিনিধি
দৈনিক চাঁদনী বাজার সংবাদ প্রকাশের পর সেই অসহায় হাছিনা বেওয়ার পাশে সাদুল্লাপুরের  কৃষকলীগের  সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন

মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সাদুল্লাপুর উপজেলার কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন। সোমবার দৈনিক চাঁদনী বাজারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘মানবেতর জীবন কাটছে সাদুল্লাপুরের অসহায় হাছিনা বেওয়ার’এমন শিরোনামে সচিত্র সংবাদ প্রকাশের পর বুধবার দুপুর ১২টায় দিকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে বাড়িতে যান  

সাদুল্লাপুর উপজেলার কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন। এ সময়  সাদুল্লাপুর উপজেলার কৃষকলীগের সদস্য নুর হাসান মিয়া রতন ও
এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য,গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার খোর্দ্দকোমর পুর ইউনিয়নের কিশামত দূর্গাপুর গ্রামের মৃত্যু খবির উদ্দিনের স্ত্রী মোছা. হাছিনা বেওয়ার (৮০)। হাছিনা বেওয়ার স্বামী খবির উদ্দিন  ৪০ বছর আগে মারা যান। ছোট ছেলে মারা যান ১০ বছর আগে। বড় দুই ছেলের অভাবের সংসার। দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতেই পরিবার নিয়ে থাকেন।

এক মেয়ে তার বিয়ে হয় দিনাজপুর জেলায়। সবার কাছে বোঝা হয়ে যাওয়া হাছিনা বেওয়া তাই নিজ বাড়িতে ছোট একটি টিনসেট ঘরে খেয়ে না খেয়ে পরে থাকেন। বাড়িতে একটি টিউবওয়েল থাকলেও সেটিও নষ্ট হয়ে পরে আছে দীর্ঘদিন। পানির জন্য  এই বয়েসে ছুটতে হয় অন্যের বাড়ীতে। নেই বিদ্যুৎ সংযোগও কুপি জ্বালিয়ে রাত কাটে তার । অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটলেও অসহায় হাছিনা বেওয়ার পাশে দাঁড়ায়নি কেউ। যখন ক্ষুধা পায় অন্যের বাড়িতে চলে যান। কেউ সাহায্য না করলে সেই দিন পেটে ভাত যায় না তার। এমন চিত্র ধরা পড়ে সাংবাদিকের চোখে। প্রকাশ হয় দৈনিক শিক্ষাসহ বিভিন্ন গনমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ।  সাক্ষাতে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কথা বলতেই তিনি বলেন, ‘করোনা বুঝি না বাবা। কি খামো বাবা? যার কাছে যাই তাই খালি কয় দেশত আকাল পড়ছে, মহামারি দেখা দিছে। এখন কি খায়া বাঁচে থাকমো বাবা? কেউ তো কিছু দিবার যায় চায় না।’ এই কথা বলে কান্না করেন হাছিনা বেওয়া।

তিনি বাঁচার আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘সবাই খালি বাড়িত থাকপের কয়, কেউ কিছু দেয় না। কি খায়া বাঁচি বাবা?’ অন্যের কাছে সাহায্যে নিয়ে দিন চলে তার। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে।করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে মানুষ যখন ঘরে থাকছে তখন জীবন বাঁচানোর তাগিদে হাছিনা বেওয়া ঘুরছে মানুষের দ্বারে দ্বারে। এক বেলা খাওয়ার আকুতি জানাচ্ছে সবার কাছে। তবুও মিলছে না কোনো সাড়া। আশির্ধ্ব বিধবা হাছিনা বেওয়ার ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কোনো সহযোগিতা। এমনকি বিধবা বা বয়স্ক ভাতার কার্ডও মেলেনি। অবশেষে চাল, ডাল,আলু , তেল,মরিচ, পিয়াজ, সাবানসহ অসহায় হাছিনা বেওয়ার বাড়ীতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিলেন সাদুল্লাপুরের  কৃষকলীগের  সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন। খাবার সামগ্রী পেয়ে প্রাণ খুলে দোয়া করেন হাছিনা বেওয়া।

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে