করোনার প্রভাবে হুমকির মুখে শেরপুরের প্রাণিসম্পদ উদ্যোক্তারা
![করোনার প্রভাবে হুমকির মুখে শেরপুরের প্রাণিসম্পদ উদ্যোক্তারা](./assets/news_images/2020/04/11/CB200411014.jpg)
করোনার প্রভাবে সারা দেশের মতো বগুড়ার শেরপুরেও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের খামারিরা বা প্রাণিসম্পদ উদ্যোক্তারা। প্রাণিসম্পদ থেকে উৎপাদিত সব ধরনের পণ্যের দরপতন ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে না পারায় থমকে যাচ্ছে প্রাণিসম্পদ উদ্যোক্তারা। করোনা সতর্কতায় জনসমাগম ঠেকাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে ক্রেতা সাধারণের উপস্থিতিও ব্যাপক হারে কমেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়লেও দুধ, ডিম, মুরগি এসবের মূল্য ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে। স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছেন, করোনার প্রভাব অব্যাহত থাকলে এখানকার অনেক খামারির টিকে থাকা কঠিন হয়ে পরবে।
তবে করোনা সংকটকালীন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং প্রাণিজ পুষ্টির উৎস দুধ, ডিম, মাংস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানিয়েছেন শেরপুরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা: মো: রায়হান (পিএএ)। ইতোমধ্যে তিনি প্রাণঘাতি এই ভাইরাস মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকায় আছেন। গত বুধবার (৮এপ্রিল) খামারিদের সহায়তা করতে তার নিজ উদ্যোগে ২০০ জন বিপদগ্রস্থ খামারির বাড়িতে বাড়িতে পৌছে দিয়েছেন, গো-খাদ্য, প্রয়োজনীয় ঔষধ, জীবানুনাশক, স্যানিটাইজার, মাস্ক ও স্প্রেয়ার। ওই দিন সন্ধায় শেরপুর উপজেলায় করোনা দুর্যোগে দীর্ঘকালীন অকেজো হয়ে থাকা ২০০ অসহায় খামারি পরিবারের বাড়ি বাড়ি প্রয়োজনীয় ঔষধ ও পণ্য পৌছে দিয়ে ব্যপক সহায়তা করেছেন বগুড়ার জনপ্রশাসন পদক প্রাপ্ত এই কর্মকর্তা।
শেরপুরের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দুধ এবং দেশি মুরগির বাণিজ্যিক উৎপাদনে বিখ্যাত শেরপুর উপজেলার প্রায় ৮০ ভাগ মানুষই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এই শিল্পের সাথে জড়িত। এখানে ডেইরি খামার, বয়লার মুরগির খামার, দেশি মুরগির অর্গানিক খামার ও ছাগল, ভেড়া, গাড়ল, হাস, কোয়েল, কবুতর সহ সব মিলিয়ে প্রায় ১৩ হাজারের উপরে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় আকারের বিভিন্ন খামার রয়েছে। সেই অনুযায়ী বর্তমানে শেরপুর উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ খামারি পরিবার প্রায় ৫০ হাজার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে। এখানে দুধ শিল্পে প্রতিদিন আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ৫০ খেকে ৬০ লক্ষ টাকা, পেল্ট্রি শিল্পে গত কয়েকদিনে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। মুরগি বিক্রি কমে গেছে শতকরা ৯০% পারসেন্ট, বাচ্চা বিক্রি শুন্য অবস্থায় রয়েছে। কারন উৎপাদন খরচ বেশি কিন্তু বিক্রি নেই। আর উপরোক্ত কারণে দই, মিষ্টিজাত পণ্য পক্রিয়া ও বিপননের সাথে প্রায় ৫০০পরিবার বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
তবে ভেটেরিনারি সার্জন ডা: রায়হান বলেছেন, করোনা দুর্যোগে দীর্ঘ ছুটিকালীন দেশের এই ক্রান্তিকালে প্রাণিসম্পদ উদ্যোক্তা বা খামারিদের সরেজমিন সেবা ছাড়াও মোবাইল ফোনে , স্বপ্ন ছোয়ার সিড়ি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে শেরপুর সহ সারা বাংলাদেশে সকল শ্রেণীর উদ্যোক্তাদের চিকিৎসা সেবা সহ নানা বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে সহায়ক ভূমিকা পালনে সচেষ্ট আছি বলে জানান এই সরকারি কর্মকর্তা।
দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন