প্রকাশিত : ১৭ জুন, ২০২০ ২১:১০

সরকারী সম্পত্বিতে ব্যাক্তি বিশেষের স্থাপনা! অনিয়ম এখন নিয়মে পরিণত!

শুভ কুন্ডু, শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ
সরকারী সম্পত্বিতে ব্যাক্তি বিশেষের স্থাপনা! অনিয়ম এখন নিয়মে পরিণত!
সম্প্রতি জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শত বাষিৃকীতে শেরপুর সাব-রেজিস্টি অফিসের সরকারি স্থানে রোপনকৃত প্রায় অর্ধ শত গাছ কেটে/তুলে এভাবেই নির্মান করা হচ্ছে অবৈধ ব্যাক্তিগত স্থাপনা। ছবিঃ শুভ কুন্ডু, চাঁদনী বাজার।

বগুড়ার শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস চত্তরে ব্যাক্তি বিশেষের অবৈধ স্থাপনা নির্মানের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সরকারি সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মান ও জন চলাচলে সংকট সৃষ্টি হওয়ার আশংকায় বাঁধা সৃষ্টি করলে শেরপুরের সাব-রেজিস্ট্রার মো: সাজেদুল হককে হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় বি.এন.পি নেতা। এ বিষয়ে শেরপুর থানায় কতিপয় প্রভাবশালী দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ দিয়েও মিলছেনা কোন সুরাহা। থানা পুলিশ অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ বন্ধ করে দিলেও অজ্ঞাত কারণে থেমে নেই ঘর নির্মাণের কাজ।

অন্য দিকে অনিয়ম নিয়মে পরিণত হওয়ায় সাব-রেজিস্ট্রার তথা দলিল লেখক সমিতির পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়নি জোরালো কোনো পদক্ষেপ। প্রকাশ করা যায়, সরকারি বিধিমতে কোন সরকারি অফিস চত্ত্বরে ব্যাক্তিগতভাবে কোন স্থায়ী বা অস্থায়ী ঘর নির্মাণের সুযোগ নেই। এমন নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কতিপয় দলিল লেখক তাদের নিজেদের সুবিধার্থে স্থায়ী ঘর নির্মাণ করে যাচ্ছেন। তাহলে প্রজাতন্ত্রের প্রথম শ্রেণীর একজন কর্মকর্তা হওয়ার পরেও সাব-রেজিস্ট্রার মো: সাজেদুল হককে হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ঘর নির্মান কাজ চালিয়ে যাওয়ার পেছনের রহস্য কি?

এই রহস্য উদঘাটন করতে অনুসন্ধানে জানা গেছে, দলিল লেখক সমিতির মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রার ও অন্যান্যদের জন্য প্রতি লাখ টাকার বিপরিতে আদায়কৃত ৫০০ শত টাকা সপ্তাহে দুই দিনে বন্টন করা হয় যা দলিল লেখক সমিতির সঙ্গ ছাড়া পাওয়া সম্ভব নয়। তাই সর্বদিক বিবেচনায় উক্ত অবৈধ নির্মান কাজে বাঁধা দিতে বা জোরালো কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি সাব-রেজিস্ট্রার মো: সাজেদুল হক।

সরেজমিনে ১৭ জুন বুধবার সকালে শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, রেজিস্ট্রি অফিস চত্ত্বরের উত্তরগেটের খালি জায়গায় মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে লাগানো বেশ কয়েকটি গাছ কর্তন করে দলিল লেখক সমিতির উপদেষ্টা এম এ মতিন সাধারণ মানুষের দলিল লেখার জন্য স্থায়ী ঘর নির্মাণকাজ শুরু করেছেন। এর প্রেক্ষিতে সাব-রেজিস্ট্রার সাজেদুল হক ওই নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে থানা পুলিশকে অবগত করেন। থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। এতে সংশ্লিষ্ট কতিপয় দলিল লেখক যোগসাজষ করে সরকার দলীয় প্রভাবশালী এক নেতার মধ্যস্থতায় পুনরায় নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখেন।  অফিস চত্ত্বরে সরকারিভাবে বিধি নিষেধ থাকা সত্বেও প্রভাব খাটিয়ে ঘর নির্মাণ করায় অন্যান্য দলিল লেখকদের মধ্যে বজলুর রহমান, ছানাউল, নুরে আলম সানি, আমজাদ হোসেন, আক্তার হোসেন, ছানোয়ার, তরিকুল, রাঙা, মোত্তালেবসহ অনেকেই একই কায়দায় জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ শুরু করেছেন।

এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা দলিল লেখক সমিতি’র সভাপতি এস এম ফেরদৌসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, সাব-রেজিষ্টারের অনুমতি নিয়েই সবাই ঘর তুলছে।
এ প্রসঙ্গে সাব-রেজিস্ট্রার সাজেদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, অফিস চত্ত্বরে ব্যাক্তি উদ্যোগে অস্থায়ীভাবে ঘর নির্মাণ করা যাবে, তবে স্থায়ী ইমারত গড়া যাবেনা।
এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে পরবর্তী সংবাদ প্রকাশ করা হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে