প্রকাশিত : ২২ জুন, ২০২০ ২০:০৭

আন্ত:কোন্দলে পরিকর্ল্পিতভাবে খুন হয়েছিল বিপ্লব, ৫ জন গ্রেফতার ও ১ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী

বগুড়ায় আড়াই বছর পর উন্মোচিত হলো বিপ্লব হত্যার রহস্য
ষ্টাফ রিপোর্টার
আন্ত:কোন্দলে পরিকর্ল্পিতভাবে খুন হয়েছিল বিপ্লব, 
৫ জন গ্রেফতার ও ১ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী

বগুড়া সোনাতলায় চাঞ্চল্যকর বিপ্লব সরকার হত্যাকান্ডের প্রায় আড়াই বছর পর এর রহস্য উন্মোচন করে আসামীদের গ্রেফতার করেছে সোনাতলা থানা পুলিশ। আন্ত:কোন্দলে পরিকল্পিতভাবেই বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার হযরত আলীর ছেলে বিপ্লব কে খুন করা হয়েছিল বলে জানা যায়। এঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে যার মধ্যে মূল আসামী রাজিব হোসেন রাজু (২৮) ইতিমধ্যেই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।

সোমবার দুপুরে বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম বার এই তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,  ২০১৮ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারী সোনাতলা উপজেলার নগরপাড়া মহিশাপাড়া গ্রামে গনিজান কালভাটের নিচে বস্তাবন্দী অবস্থায় ক্ষতবিক্ষতভাবে একটি অজ্ঞাত লাশ পাওয়া গিয়েছিল। পরবর্তীতে লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর বগুড়া ঠনঠনিয়া এলাকার বিপ্লব সোনাতলায় কিভাবে খুন হলো এমন নানা প্রশ্নে বিপ্লবের সাথে ঘনিষ্ঠ সকলকে জেলা পুলিশের কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়।

পরে একপর্যায়ে জেলা পুলিশের হাল না ছাড়ার মানসিকতায় এবং তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে তদন্তকালে মূল হত্যাকারী ঠনঠনিয়া পশ্চিমপাড়ার আব্দুর রউফের ছেলে রাজিব হোসেন রাজুর নাম সামনে উঠে আসে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় ঘাতক রাজিব প্রায় আড়াই বছর ধরে তার মামার বাসা যশোরে গোপনে অবস্থান করছে। পরবর্তীতে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় এবং শিবগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কুদরত-ই খুদা শুভ’র নেতৃত্বে তাকে যশোর থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং গ্রেফতারকৃত রাজীবের স্বীকারোক্তি নিয়ে তার দেওয়া তথ্যমতে রবিবার সারাদিন বগুড়ার বিভিন্ন স্থান থেকে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আর ৪ জন যথাক্রমে, রমজান আলীর ছেলে দুই ছেলে বেলাল হোসেন এবং হাসান আলী, আব্দুস সামাদের ছেলে আব্দুর রহমান ওরফে শুটকু যারা প্রত্যেকেই বগুড়া সদরের খান্দার এলাকার বাসিন্দা এবং সোনাতলা থানার লক্ষীনারায়ণ পাড়ার মৃত: রামনাত মন্ডল এর ছেলে সঞ্জয় কুমার মন্ডল কে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা জানায়, তারা সকলে সুপরিকল্পিতভাবে বিপ্লবকে বগুড়া থেকে ভাড়া করা প্রাইভেট কারে নিয়ে যাওয়া হয় সোনাতলা থানার করপুর বাজারের একটি চাতালে যেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলো চাতালের কর্মচারী গ্রেফতারকৃত আসামী সঞ্জয়সহ বাকি আসামীরা। আর বিপ্লব সেখানে পৌঁছালে দীর্ঘদিনের পূর্ব শত্রুতা এবং কোন্দলের অবসান ঘটানো হয় তাকে অতর্কিত ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে হত্যার মধ্য দিয়ে। পরে আসামীরাই সুপরিকল্পিতভাবে বিপ্লবের লাশ বস্তা বন্দি করে ফেলে দেয় সেই কালভাটের নিচে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে প্রত্যেকের ৩ দিনের করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে এবং মূল আসামী রাজিব আদালতে ইতিমধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার)। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসময় জেলা পুলিশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তী, শিবগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কুদরত-ই খুদা শুভ প্রমুখ।

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে