প্রকাশিত : ১০ জুলাই, ২০২০ ২২:০৭

নিয়োগ বাণিজ্যে পনের লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ! বিআরডিবি ভুক্ত উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ শেরপুর বগুড়ার চেয়ারম্যান ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

নাজমুস সাকিব আপেলঃ
নিয়োগ বাণিজ্যে পনের লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ! বিআরডিবি ভুক্ত উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ শেরপুর বগুড়ার চেয়ারম্যান ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

বগুড়ার শেরপুর এ বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) দপ্তরে পরিদর্শক পদে চাকুরী পাইয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নগদ টাকা আত্মসাতের অপচেষ্টায় আছেন শেরপুর উপজেলায় পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের আওতার উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ) লিমিটেডের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার। চাকরী পাবার আশায় নগদ পনের লাখ টাকা শেরপুর পল্লী ভবনের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদারকে প্রদানের দাবী করেন জেলার শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরের ভাদড়া গ্রামের আবুল কালাম। গতদুই বছরে চাকরী বা টাকা ফেরৎ কোনটাই না পেয়ে পরিবার নিয়ে প্রায় নিঃস্ব ভুক্তভোগী কালাম।

গ্রামের সহজ সরল আবুল কালাম চাঁদনী বাজারকে বলেন, পরিদর্শক পদে চাকুরী পাবার আশায় ০৯ দফায়  গাছ বিক্রি করে ৪০০০০ (চল্লিশ হাজার) টাকা,ধার করে ১৬০০০০ (এক লাখ ষাট হাজার) টাকা, জমি বন্ধক রেখে ২৫০০০০ (দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা,দুই দফা সুদের ওপর ৪৫০০০০ (চার লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা,শশুরের জমি বিক্রিয় ও বন্ধক রেখে ৪০০০০০ (চার লাখ) টাকা, পুনরায় পিতার জমি বন্ধক রেখে ১৫০০০০ (দের লাখ) টাকা ও বিকাশ মারফৎ ২০০০ (দুই হাজার) টাকা সর্ব মোট প্রায় পনের লাখ টাকা, ১০অক্টোবর-০৪ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে (২৪ দিনের মধ্যে ) তের লাখ টাকা সহ মোট ১৫ লাখ টাকা শেরপুর বিআরডিবি'র রফিকুল ইসলাম তালুকদারকে পরিশোধ করি। কালাম আরো বলেন, দুই বছর হয় টাকা দিয়ে চাকুরী পাওয়া তো দূরের কথা এখন টাকা চাইতে গেলে রফিকুল উল্টো আমাকেই হুমকি ধামকি দিচ্ছে এবং আমার টাকা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে। সুদ ও ধারের টাকা পরিশোধ করতে তিনি দিশেহারা হয়ে আত্মীয় স্বজনের পরার্মশে বুধবার থানায় আভিযোগ দাখিল করেন আবুল কালাম।

এদিকে তাদের দেনা পাওনার কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড চাঁদনী বাজারের হাতে এসেছে।ওই রেকর্ডে রফিকুল প্রয়াত জাতীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম ও বগুড়া জেলা আঃলীগ সভাপতির নাম ভাঙ্গিয়ে  (নাসিম ভাই তো মরেই গেছে ! কি জে হয় মোটা টাকা....মজনু চাচার সাথে কথা বলে দিবো...)  ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে শোনা যায়।
নিয়োগ ও অর্থ গ্রহনের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম তালুকদারের বক্তব্যে জানতে চাওয়া হলে তিনি টাকা গ্রহনের সত্যতা স্বীকার করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন জটিলতার কারনে চাকরি না হলে টাকা ফেরৎ দেয়া হবে। দু-এক জন কে ফেরৎ দিয়েছি আবুল কালামের টাকা-ও-দিবো।

একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের তথ‍্যসুত্র অনুসন্ধানে জানাগেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর অধীনে (ইউসিসিএ)২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখে  বিশেষ সাধারণ সভায় ২জন পরিদর্শক নিয়োগের বিষয়ে চুড়ান্ত অনুমোদন করেন সমবায়ী ম্যানেজারগণ।সেই সুযোগে ইউসিসিএ লিমিটেড শেরপুরের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মিলে তড়িঘড়ি করে পরিদর্শক পদে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে  অন্তত ০৫ জন প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৎসময়ে। গোপনে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহনের বিনিময়ে নিয়োগ সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া ফাঁস হয়ে গেলে সমবায়ীদের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুনরায় সমবায়ী ম্যানেজারগন ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর বিশেষ সাধারণ সভায় ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত সহ অর্থ বাজেট বন্ধ করে দেয়া হয় ।

এদিকে অফিস সুত্রে জানা গেছে পরিদর্শক পদে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্থগিতাদেশ চেয়ে সংস্লিষ্ঠ অফিসের ১৬ জন সমবায়ী সদস্য বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন।অভিযোগ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে শেরপুর থানার  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন আবুল কালামের আভিযোগ তদন্ত করে ব‍্যবস্থা নেয়া হবে। শেরপুর থানা সুএে জানাগেছে সাব-ইন্সপেক্টর এবাদ আলী মোল্লা অভিযোগ বিষয়ে তদন্ত করবেন। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে